প্রায় ১৬ মাস অতিক্রান্ত। প্রাণ হারিয়েছেন ৫৪ হাজারেরও বেশি মানুষ। অবশেষে গাজায় যুদ্ধবিরতি হতে চলেছে। বুধবার হোয়াইট হাউজ থেকে আমেরিকার বিদায়ী প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এমনটাই জানালেন। এমনকী ইজরায়েল এবং হামাসের মধ্যস্থতায় ডোনাল্ড ট্রাম্পেরও বড় ভূমিকা আছে বলে জানান বাইডেন। উল্লেখ্য, গতকাল হোয়াইট হাউজ থেকে বাইডেন জানান, ইজরায়েল এবং হামাসের তিন ধাপের যুদ্ধবিরতি সম্পন্ন হয়েছে। মার্কিন প্রেসিডেন্টের কথায়, এই যুদ্ধবিরতি নিশ্চিত করতে ট্রাম্পের দলের সঙ্গে কাজ করেছে তাঁর প্রশাসন। এদিকে যুদ্ধবিরতি ঘোষণার পর ট্রাম্পকে ধন্যবাদ জানিয়েছে মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্টও। এদিকে যুদ্ধবিরতির ঘোষণার পরে ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন ইজরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। তিনিও ট্রাম্পকে ধন্যবাদ জানান। জানা গিয়েছে, কাতারের দোহায় দীর্ঘ ৯৬ ঘণ্টার আলোচনার পরে এই যুদ্ধবিরতির জন্যে ইজরায়েল এবং হামাসকে রাজি করানো গিয়েছে। অবশ্য নেতানিয়াহু দাবি করেছেন, এখনও যুদ্ধবিরতির চুক্তি সম্পন্ন হয়নি। কিছু বিষয় এখনও চূড়ান্ত হওয়া বাকি আছে।
এদিকে রিপোর্ট অনুযায়ী, ১৯ জানুয়ারি থেকে এই যুদ্ধবিরতি কার্যকর হতে পারে। এর জন্যে দুই পক্ষই বন্দিদের ছেড়ে দেবে। এদিকে হামাসের তরফ থেকে অপহৃতদেরও মুক্তি দেওয়া হবে। অপরদিকে গাজায় যেখানে সাধারণ মানুষের বাস, সেখান থেকে ইজরায়েল সেনা প্রত্যাহার করবে। অপরদিকে ত্রাণ অভিযানে ইজরায়েল বাধা সৃষ্টি করবে না। এই সব প্রক্রিয়ার মাধ্যমে গাজায় শান্তি দীর্ঘস্থায়ী হবে বলে আশা ব্যক্ত করেছে আমেরিকা, কাতার এবং মিশর। এদিকে এই যুদ্ধবিরতি ঘোষণা হতেই ইরানকে তোপ দেগেছে হোয়াইট হাউজ। প্রেস সচিব ক্যারিন জঁ পিয়ের বলেন, 'ইজরায়েলের বিরুদ্ধে ইরানের হামলা ব্যর্থ হয়েছে। মার্কিন সমর্থনের জন্যেই তা সম্ভব হয়েছে। বিগত কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে দুর্বল অবস্থায় আছে ইরান।'
উল্লেখ্য, গত ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর গাজা ভূখণ্ড থেকে আচমকাই ইজরায়েলে ঢুকে পড়ে হামলা চালিয়েছিল হামাস জঙ্গি গোষ্ঠী। নির্বিচারে খুন করা হয়েছিল ইজরায়েলের সাধারণ মানুষজনকে। অপহরণ করে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল বহু ইজরায়েলিকে। এদিকে এই সুযোগে ইজরায়েলের ওপর হামলা চালানো হয় লেবানন থেকেও। অভিযোগ, ইরান সমর্থিত হিজবুল্লা গোষ্ঠী ইজরায়েলের ওপর হামলা চালায় লেবানন থেকে। এই আবহে লেবাননকে পালটা জবাব দিয়েছে ইজরায়য়েলও। এদিকে গাজায় ঢুকে পড়ে হামাসকে তাড়া করেছিল ইজরায়েলি সেনা। এই সবের মাঝেই ইরানও মিসাইল হামলা চালিয়েছিল ইজরায়েলে। উল্লেখ্য, ইরানে থাকা হামাস প্রধান শিনওয়ারিকে এর আগে খতম করে ইজরায়েল। সব মিলিয়ে গোটা মধ্যপ্রাচ্যে ছড়িয়ে পড়েছিল গাজা যুদ্ধের আঁচ। এই আবহে ইজরায়েলি হামলায় প্রায় ৫৩ হাজার প্যালেস্টাইনির মৃত্যু হয়েছে গত ১৬ মাসে। অন্য দিকে, হামাসের আক্রমণে নিহত প্রায় দু’হাজার ইজরায়েলি।