সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কার নিয়ে ছাত্র আন্দোলন সরকারবিরোধী বিক্ষোভের রূপ নেয়। তারপরই পদত্যাগ করতে বাধ্য হন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ইস্তফা দেওয়ার পরই ঢাকা থেকে পালিয়ে আপাতত ভারতে নিরাপদ আশ্রয়ে রয়েছেন তিনি। কিন্তু, হাসিনা সরকারের পতনের পরেও চরম নৈরাজ্য তৈরি হয়েছে দেশটিতে। দিকে-দিকে আক্রান্ত সে দেশের হিন্দু এবং অন্যান্য সংখ্যালঘুরা। ভাঙচুর করা হচ্ছে বাড়ি, মন্দির এবং ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান। বেছে বেছে আক্রমণ করা হচ্ছে হিন্দুদের উপর। এরফলে চরম আতঙ্কে রয়েছেন সেখানকার সংখ্যালঘুরা। এনিয়ে সমালোচনায় সরব হয়েছে বিশিষ্ট মহল।এবার বাংলাদেশের এই পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করলেন ভারতে ইজরায়েলের রাষ্ট্রদূত নাওর গিলন।
আরও পড়ুন: ওখানে হিন্দুদের ওপর অত্যাচার হলে এখানে প্রতিক্রিয়া হতে পারে: দিলীপ ঘোষ
বাংলাদেশে যেভাবে হিন্দু এবং সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা চালানো হচ্ছে তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে গিলন এক্স পোস্টে লেখেন, ‘বাংলাদেশে হিন্দু সহ সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে নৃশংসতার রিপোর্ট দেখে আমি উদ্বিগ্ন।’ আগের দিন ভারতের বিদেশ মন্ত্রী এস জয়শঙ্কর সংসদে একটি সর্বদলীয় বৈঠকে বাংলাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করেন। বাংলাদেশের পরিস্থিতির কারণে ভারতে কী প্রভাব পড়তে পারে তা নিয়ে আলোচনা করেন। পরিস্থিতি নিয়ে সংসদের দুই কক্ষে বক্তব্যও দেন বিদেশ মন্ত্রী।
তিনি রাজ্যসভায় জানান, ভারত সরকার বাংলাদেশে বসবাসকারী সংখ্যালঘুদের পরিস্থিতির ওপর নজর রাখছে। তিনি আরও বলেন, শেখ হাসিনা খুব অল্প সময়ের নোটিশে ভারতে আসার জন্য অনুমোদনের জন্য অনুরোধ করেছিলেন।
জয়শঙ্কর লোকসভায় জানান, বাংলাদেশে ১৯ হাজার ভারতীয় নাগরিক রয়েছে, যার মধ্যে প্রায় ৯ হাজার ছাত্র। তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য ভারতীয়দের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখা হচ্ছে। তিনি আরও জানান, জুলাই মাসে বেশির ভাগ পড়ুয়া ভারতে ফিরেছে।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি মহম্মদ শাহাবুদ্দিন একটি অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের পথ তৈরি করতে দেশের সংসদ ভেঙে দেওয়ার করা ঘোষণা করেন। এদিকে, ঢাকায় ছাত্র আন্দোলনের নেতারা বাংলাদেশের পরিস্থিতিতে নোবেল বিজয়ী মহম্মদ ইউনুসের নেতৃত্বে একটি অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের প্রস্তাব দিয়েছেন। এছাড়াও, বিএনপি চেয়ারপার্সন তথা দেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াও মুক্তি পেয়েছেন। তবে এই মুহূর্তে দেশটিতে সংখ্যালঘুদের সুরক্ষা নিয়ে উদ্বেগজনক পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।