স্প্যাডেক্স স্যাটেলাইটের 'আনডকিং' প্রক্রিয়ায় সাফল্য অর্জন করল ইসরো। বৃহস্পতিবার ভারতীয় মহাকাশ সংস্থার তরফে জানানো হয়েছে, 'ডকিং' প্রক্রিয়ার পরে 'আনডকিং'-র কাজেও সাফল্য মিলেছে। যা আগামিদিনে চন্দ্রযান-৪ মিশনের পথ আরও প্রশস্ত করল। শুধু তাই নয়, চাঁদে মানুষ পাঠানো, নিজস্ব মহাকাশ স্টেশন তৈরি, মহাকাশে নভোশ্চর পাঠানোর মতো যে সব স্বপ্ন দেখছে ইসরো, তা পূরণের ক্ষেত্রে আরও একধাপ এগিয়ে গেল ভারত। আর কীভাবে সেই 'আনডকিং' করা হয়েছে, তার একটি ভিডিয়োও দেখিয়েছে ইসরো। যা দেখে মুগ্ধ হয়ে গিয়েছেন সকলেই।
আরও পড়ুন: Chandrayaan-3 on Moon Ice: 'আগে যা মনে করা হয়েছিল...', চাঁদের বরফ নিয়ে ধারণা বদলে দিল চন্দ্রযান ৩
আর সেই কৃতিত্ব অর্জনের জন্য ইসরোর টিমকে অভিনন্দন জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জিতেন্দ্র সিং। তিনি বলেছেন, ‘অভিনন্দন টিম ইসরো। প্রত্যেক ভারতীয়ের জন্য অত্যন্ত উৎসাহব্যঞ্জক খবর। অভাবনীয় ডি-ডকিংয়ের (আনডকিং) ক্ষেত্রে সাফল্য লাভ করেছে স্প্যাডেক্স (স্পেস ডকিং এক্সপেরিমেন্ট মিশন) স্যাটেলাইট। যা ভারতীয় অন্তরীক্ষ স্টেশন, চন্দ্রযান-৪, গগনযান-সহ আগামিদিনের উচ্চাভিলাষী সব মিশন মসৃণভাবে পরিচালনার পথ প্রশস্ত করল।’
কিন্তু ‘ডকিং’ ও 'আনডকিং'-র ব্যাপারটা কী?
মহাকাশে প্রবল গতিতে যখন দুটি বস্তু ঘূর্ণায়মান অবস্থায় থাকে, তখন সেই দুটিকে কাছাকাছি নিয়ে এসে জুড়ে দেওয়ার প্রক্রিয়াই 'ডকিং' বলা হয়। যে মাইলস্টোনটা আগেই অর্জন করে ফেলেছে ইসরো। আর এবার 'আনডকিং' প্রক্রিয়ায় সাফল্য লাভ করেছে। অর্থাৎ যে দুটি উপগ্রহকে একসঙ্গে জুড়ে দিয়েছিল, সেটা সাফল্যের সঙ্গে আলাদা করতে পেরেছে ভারতীয় মহাকাশ সংস্থা।
ডিসেম্বর থেকে জানুয়ারি, তারপর মার্চ- একটা বৃত্ত সম্পূর্ণ!
আর সেই জোড়া মাইলস্টোন অর্জনের জন্য গত বছরের ৩০ ডিসেম্বর অন্ধ্রপ্রদেশের শ্রীহরিকোটার সতীশ ধাওয়ান মহাকাশ কেন্দ্র থেকে স্প্যাডেক্স মিশনের উৎক্ষেপণ করেছিল ইসরো। কয়েকবার চেষ্টার পরে ১৬ জানুয়ারি মহাকাশে দুটি স্যাটেলাইটের (এসডিএক্স০১ বা চেজার এবং এসডিএক্স০২ বা টার্গেট) ‘ডকিং’ প্রক্রিয়ায় সাফল্য লাভ করেছিল। আর তার দু'মাস পরে 'আনডকিং' প্রক্রিয়ায় সাফল্য লাভ করে ইসরো দেখিয়ে দিল যে মহাকাশ ক্ষেত্রকে বিশ্বের সেরাদের তালিকার একেবারে উপরের দিকেই আছে ভারতীয় মহাকাশ সংস্থা।
চতুর্থ দেশ হিসেবে নজির গড়ল ভারত
তার ফলে বিশ্বের চতুর্থ দেশ হিসেবে সেই 'স্পেস ডকিং' প্রক্রিয়ায় সাফল্য লাভ করেছে ভারত। তার আগে সেই প্রক্রিয়ায় সাফল্য অর্জন করেছিল আমেরিকা, রাশিয়া এবং চিন। বিজ্ঞানীদের মতে, স্পেস ডকিংয়ের কাজটা শুনতে যতটা সহজ বলে মনে হয়, সেটা ঠিক ততটাই কঠিন। আর সেই কারণেই বিশ্বের হাতেগানো কয়েকটি দেশ তাতে সাফল্য লাভ করেছে।