চাঁদ, সূর্যের পর এবার ইসরোর লক্ষ্য হল শুক্র। সূর্য থেকে দূরত্ব অনুসারে দ্বিতীয় স্থানে থাকলেও এটিই হল সৌরমণ্ডলের সবচেয়ে উষ্ণতম গ্রহ। এক সময় এই গ্রহের অবস্থা পৃথিবীর মতোই ছিল। তা সত্ত্বেও কেন এমন পরিণতি হল শুক্রের। তার সঠিক উত্তর এখনও অজানা বিজ্ঞানীদের কাছে। সেই সমস্ত প্রশ্নের উত্তর খুঁজতেই শুক্র অভিযানে যাবে ‘শুক্রযান ১’। এই মিশনের নাম দেওয়া হয়েছে ‘ভেনাস অরবিটার মিশন’। সম্প্রতি কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা এই মিশনের অনুমতি দিয়েছে। তারপরেই এই অভিযান নিয়ে জোর কদমে প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে ইসরো। এবার এই অভিযানের দিনক্ষণ ঘোষণা করল ইসরো।
আরও পড়ুন: সুনীতার ঘটনা থেকে শিক্ষা, গগনযান নিয়ে তাড়াহুড়ো করবে না ইসরো
ইসরো জানিয়েছিল, শক্তিশালী এলভিএম ৩ (লঞ্চ ভেহিকেল মার্ক ৩) রকেটের সাহায্যে ‘শুক্রযান ১’- কে শুক্রের কক্ষপথে পৌঁছে দেওয়া হবে। মহাকাশ যানটি যাত্রা শুরু করবে । ২০২৮ সালের ২৯ মার্চ। ১১২ দিনের যাত্রা শেষে সেটি শুক্রের কক্ষপথে পৌঁছবে ২০২৮ সালের ১৯ জুলাই।
এই অভিযানের লক্ষ্য হল অত্যাধুনিক বৈজ্ঞানিক যন্ত্রের সাহায্যে শুক্রের বায়ুমণ্ডল, ভূপৃষ্ঠ এবং ভূতাত্ত্বিক বৈশিষ্ট্যগুলি অধ্যয়ন করা। মিশনের প্রাথমিক উদ্দেশ্যগুলির মধ্যে রয়েছে গ্রহের বায়ুমণ্ডলীয় গঠন, ভূপৃষ্ঠের বৈশিষ্ট্য এবং আগ্নেয়গিরি বা ভূমকম্পের গতিবিধি খতিয়ে দেখা।
শুক্রের বায়ুমণ্ডল অধ্যায়নের জন্য এই মহাকাশ জানে থাকবে অত্যাধুনিক যন্ত্র। যার মধ্যে রয়েছে, সিন্থেটিক অ্যাপারচার রাডার, ইনফ্রারেড এবং আল্ট্রাভায়োলেট ক্যামেরা এবং সেন্সর সহ অত্যাধুনিক যন্ত্র। এই সরঞ্জামগুলি বিজ্ঞানীদের শুক্রের ঘন, কার্বন ডাই অক্সাইড-সমৃদ্ধ বায়ুমণ্ডলের রহস্য উন্মোচন করতে এবং গ্রহের পৃষ্ঠে সক্রিয় আগ্নেয়গিরির কারণ খুঁজতে সাহায্য করবে।
এই সমস্ত কিছুর পাশাপাশি কী কারণে শুক্র গ্রহের বিবর্তন হল তা বোঝার চেষ্টা করবেন বিজ্ঞানীরা। এই অভিযানের জন্য বাজেট হল ১২৩৬ কোটি টাকা, যার মধ্যে ৮২৪ কোটি ব্যয় হবে মহাকাশযান নির্মাণে। প্রসঙ্গত, এই মহাকাশযান শুক্রের ভূপৃষ্ঠে অবতরণ করবে না। এটি শুক্রের কক্ষপথে ঘুরে এই সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহ করে ইসরোকে পাঠাবে। তবে ভেনাস অরবিটার মিশন হল একটি সম্মিলিত প্রচেষ্টা। এই অভিযানের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে রাশিয়া, ফ্রান্স, জার্মানি এবং সুইডেন। এরফলে শুক্র গ্রহ সম্পর্কে অনেক অজানা এবং নতুন তথ্য জানা যাবে বলেই মনে করছেন বিজ্ঞানীরা।