শ্রীহরিকোটা থেকে ইসরোর ৯৯তম উৎক্ষেপণটি হয়েছিল গত ২০২৪ সালের ৩০ ডিসেম্বর। সেই অভিযানে পিএসএলভি সি৬০-র মাধ্যমে সফলভাবে দুটি মহাকাশযানকে একটি বৃত্তাকার কক্ষপথে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। তবে সেই উৎক্ষেপণের ফলে মহাকাশে যেই দু'টি স্যাটেলাইট পৌঁছেছে, সেই দু'টির ডকিং প্রক্রিয়াই এই অভিযানের মূল লক্ষ্য ছিল। তবে এখনও সেই লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারেনি ইসরো। এই আবহে ইসরো প্রধান এস সোমনাথ জানিয়েছেন, শীঘ্রই দু'টি লাইভ স্যাটেলাইটের ডকিংয়ের প্রচেষ্টা চালাবে ইসরো। দিনক্ষণ নির্দিষ্ট না করে দিলেও তিনি জানান, আগামী কয়েকদিনের মধ্যেই ইসরো এই চেষ্টা চালাবে। (আরও পড়ুন: বাংলাদেশে পালাবদলের নেপথ্যে আমেরিকা ছিল বলে মনে করে ভারত? জবাব দিলেন মার্কিন NSA)
আরও পড়ুন: ২ বছর ধরে লাগাতার ধর্ষণের শিকার ক্রীড়াবিদ, কোচ সহ ৬০ জন জড়িত বলে অভিযোগ
এদিকে এক বিবৃতির মাধ্যমে ইসরোর তরফ থেকে বলা হয়েছে, 'এই অভিযানের দুই স্পেসক্রাফট একে অপরের থেকে ১.৫ কিলোমিটর দূরে অবস্থান করছে। আপাতত তারা হোল্ড মোডে আছে।' উল্লেখ্য, প্রাথমিক ভাবে এই ডকিং অভিযানে কিছুটা হোঁচট খেতে হয়েছিল ইসরোকে। তবে এখন সব প্রক্রিয়া মসৃণ ভাবে চলছে বলে দাবি করেছে ইসরো। এর আগে গত ৭ এবং ৯ জানুয়ারি ইসরোর তরফ থেকে দু'বার ডকিংয়ের চেষ্টা চালানো হয়েছিল। তবে প্রযুক্তিগত ত্রুটির কারণে সেই প্রক্রিয়া পরিত্যাগ করা হয়। এই আবহে আশঙ্কা করা হচ্ছিল, এই অভিযানে হয়ত লক্ষ্য পূরণের আগেই ইসরো হাল ছেড়ে দেবে এবং ডকিংয়ের চেষ্টা করা হবে না। তবে ইসরো জানিয়ে দিল, তারা শীঘ্রই ডকিং প্রক্রিয়ার চেষ্টা চালাবে। (আরও পড়ুন: বছরে ১১০০০০ প্রোমোশন হয়েছে, ক্যাম্পাসিংয়ে নিয়োগ হবে আগের থেকে বেশি: TCS)
ইসরো প্রধান এস সোমনাথ জানিয়েছেন, দুই স্যাটেলাইটেরই অবস্থা বেশ ভালো। তিনি বলেন, 'যদি সবকিছু ঠিকঠাক থাকে, তাহলে আগামী কয়েকদিনের মধ্যেই ডকিংয়ের চেষ্টা চালানো হবে।' সোমনাথ বলেন, 'আমরা স্পেস ডকিংয়ের জন্যে প্রথমবারের মতো চেষ্টা চালাচ্ছি। প্রতিটি প্রথম প্রচেষ্টার নিজেস্ব অনেক চ্যালেঞ্জ থাকে। আমরা ছোট্ট ছোট্ট পায়ে শিখছি। আমরা সেই ভুল থেকে শিক্ষা নিয়েছি এবং শুধরেছি। দুই স্যাটেলাইট ফের কাছাকাছি জায়গায় আসছে। আমরা এখন কিছু ট্রিমিং ম্যানুভার এবং প্রোগ্রামিং চড়ান্ত করছি। এর ফলে নিরাপদে ডকিং সম্পন্ন করা যাবে বলে আশা করছি। সব কিছু পরিল্পনামাফিক যাতে যায়, তার জন্যে অনেক কিছু বদলাতে হয়েছে।' (আরও পড়ুন: লুকিয়ে আছে কয়েকশো কোটি টাকার সোনা, সিন্ধু নদে 'গুপ্তধন' খুঁজে পেল পাকিস্তান!)
ইসরোর পিএসএলভি-সি৬০ মিশনে করে মহাকাশে গিয়েছিল চেজার (এসডিএক্স০১) এবং টার্গেট (এসডিএক্স০২) মহাকাশযান। মূলত, মহাকাশে স্পেস ডকিং সংক্রান্ত পরীক্ষা পরিচালনা করতেই চালানো হয়েছে এই মিশন। এর আগে সফল ভাবে এই প্রযুক্তি ব্যবহারের কৃতিত্ব রয়েছে আমেরিকা, রাশিয়া এবং চিনের। গত ৩০ ডিসেম্বর পূর্বনির্ধারিত সময় ৯টা ৫৮ মিনিটের পরিবর্তে ১০ টায় এই রকেটের উৎক্ষেপণ করা হয়েছিল। উল্লেখ্য, এই স্পেস ডকিং প্রযুক্তি আগামীতে মহাকাশে মানব অভিযানের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ, চন্দ্রাভিযানেও এর গুরুত্ব থাকবে, এছাড়াও স্পেস স্টেশন গঠনের ক্ষেত্রেও এর ভূমিকা তাৎপর্যপূর্ণ। এই অভিযান সফল হলে আগামীতে আরও জটিল ডকিং সিস্টেমের পরীক্ষা চালানোর পরিকল্পনা আছে ইসরোর।