ঐতিহাসিক মুহূর্তের জন্য আরও একটা দিন অপেক্ষা করতে হবে। কারণ একেবারে শেষমুহূর্তে 'প্রোবা-৩' মহাকাশযানের উৎক্ষেপণ পিছিয়ে দিল ইসরো। বুধবার বিকেল ৪ টে ৮ মিনিটে 'প্রোবা-৩' মহাকাশযান উৎক্ষেপণ করার কথা ছিল। সেই সময়সীমার ঠিক ৪৯ মিনিট আগে ভারতীয় মহাকাশ সংস্থার তরফে একটি বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, প্রোবা-৩ মহাকাশযানে গোলমালের কারণে পিএসএলভি-সি৫৯/প্রোবা-৩ মিশনের উৎক্ষেপণ পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে। আগামিকাল (বৃহস্পতিবার) বিকেল ৪ টে ১২ মিনিটে অন্ধ্রপ্রদেশের শ্রীহরিকোটার সতীশ ধাওয়ান মহাকাশ কেন্দ্র থেকে উৎক্ষেপণ করা হবে।
‘প্রোবা-৩’ মিশনের দায়িত্বে ISRO-র বাণিজ্যিক সংস্থা
'প্রোবা-৩' আসলে ইসরোর বাণিজ্যিক মিশন। নিজেদের 'অস্ত্র' পোলার স্যাটেলাইট লঞ্চ ভেহিকেলের (পিএসএলভি) পিঠে চাপিয়ে ইউরোপিয়ান মহাকাশ সংস্থার 'প্রোবা-৩' যানকে মহাকাশে পাঠাবে ইসরো। সেই মহাকাশযানের উৎক্ষেপণের দায়িত্বে আছে ইসরোর বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান নিউ স্পেস ইন্ডিয়া লিমিটেড। যা বিভিন্ন সংস্থার মহাকাশযান উৎক্ষেপণের দায়িত্বে আছে। যে মিশনের মাধ্যমে সূর্যের রহস্য অনুসন্ধান করা হবে। আর ‘প্রিসিশন ফর্মেশন ফ্লাইং’-র পরীক্ষা করা হবে সেই মিশনের মাধ্যমে।
আরও পড়ুন: Indian Astronauts: ইসরো-নাসা ISS মিশন, প্রাথমিক প্রশিক্ষণ শেষ করলেন দুই ভারতীয় মহাকাশচারী
কীভাবে ‘প্রোবা-৩’ মিশন কার্যকর করা হবে?
বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, যেভাবে ‘প্রোবা-৩’ মিশন উৎক্ষেপণ করা হবে, তা বিশ্বে প্রথমবার হচ্ছে। তাতে দুটি স্যাটেলাইট আছে। দুটি মহাকাশযান (করোনাগ্রাফ এবং অকুলটার) একসঙ্গে উড়ে যাবে। দুটি খুব কাছাকাছি থাকবে। প্রায় ১৮ মিনিট যাওয়ার পরে ৫৫০ কিলোগ্রামের ‘প্রোবা-৩’ স্যাটেলাইটকে নির্দিষ্ট কক্ষপথে পৌঁছে দেবে পিএসএলভি।
প্রাথমিক কক্ষপথে পৌঁছানোর পরে দুটি স্যাটেলাইট ১৫০ মিটারের ব্যবধানে এগিয়ে যাবে। এমনভাবে ওই স্যাটেলাইট দুটি যাবে, যাতে সূর্যের ‘সোলার ডিস্ক’-কে ঢেকে দেবে অকুলটার। আর সেই পরিস্থিতিতে সূর্যের করোনা এবং সূর্যের আশপাশের পরিবেশ নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালাবে করোনাগ্রাফ। অর্থাৎ সূর্যকে ঢেকে দেবে অকুলটার, যাতে সূর্যের বাইরের অংশ নিয়ে করোনাগ্রাফ পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালাতে পারে।
আরও পড়ুন: Gaganyaan Mission: রকেট রেডি, মানুষ নিয়ে মহাকাশে যাবে ভারতের গগনযান, থাকবে কতদিন, কবে অভিযান?
ISRO-রও লাভ হবে
ইউরোপিয়ান মহাকাশ সংস্থার তরফে জানানো হয়েছে, সূর্যের থেকেও করোনোর তাপমাত্রা বেশি (১.৮ মিলিয়ন থেকে ৩.৬ মিলিয়ন ডিগ্রি ফারেনহাইট)। সেখান থেকেই সৌরজগতের আবহাওয়া নিয়ন্ত্রিত হয়। স্বভাবতই সেই জায়গা নিয়ে বিজ্ঞানীদের প্রচুর আগ্রহ আছে। আর ইসরোর ক্ষেত্রে সবথেকে বড় ব্যাপার হল যে ইতিমধ্যে সৌর মিশন চালাচ্ছে ভারতীয় মহাকাশ সংস্থা। 'প্রোবা-৩' মিশন থেকে যে তথ্য পাওয়া যাবে, তা আদিত্য-এল১ মিশনের ক্ষেত্রে কাজে লাগাতে পারবে। যা ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বর উৎক্ষেপণ করা হয়েছিল।