প্রথমে জঙ্গলে পরিত্যক্ত একটি গাড়ি দিয়ে শুরু হয় অভিযান। আর তারপর বাড়ি ও অফিসে হানা দিতেই বেরিয়ে এল গুপ্তধন। মধ্যপ্রদেশের রাজধানী ভোপালে পরিবহণ বিভাগের প্রাক্তন কনস্টেবল সৌরভ শর্মার বাড়িতে হানা দিয়ে এভাবেই গুপ্তধন খুঁজে পেয়েছে লোকায়ুক্ত পুলিশ ও আয়নকর দফতর। যা দেখে চক্ষু চড়কগাছ আধিকারিকদের। সেখানে হানা সোনা ও রুপো কিলোতে নয়, কুইন্টালে পাওয়া গিয়েছে। এ পর্যন্ত প্রায় ৩০০ কেজি সোনা-রুপো এবং কয়েক কোটি নগদ টাকা উদ্ধার হয়েছে। তিন দিন ধরে চলা তল্লাশিতে বাড়িতে যেখানেই আধিকারিকরা যেখানেই হাত বাড়িয়েছেন সেখান থেকেই বেরিয়ে এসেছে সোনা, রুপো অথবা নগদ টাকা। শুধু তাই নয়, সৌরভ শর্মার অফিসের টাইলসের নিচ থেকে রুপোর ভাণ্ডারও পাওয়া গিয়েছে।
আরও পড়ুন: মাঝ আকাশে সংজ্ঞাহীন যাত্রী, নাটকেও শেষ রক্ষা হল না, ব্যাগ থেকে মিলল ১ কোটির সোনা
জানা যাচ্ছে, লোকায়ুক্তের অভিযানে এখনও পর্যন্ত ২৩৪ কেজি রুপো এবং ৫২ কেজি সোনা উদ্ধার করা হয়েছে। এর আগে সৌরভের বাড়ি থেকে সাড়ে তিন কোটি নগদ টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। ভোপালের একটি জঙ্গলে পরিত্যক্ত অবস্থায় পাওয়া একটি গাড়ি খুঁজে পান তদন্তকারীরা। সেই গাড়ি থেকে ৫২ কেজি সোনা এবং প্রায় ১০ কোটি নগদ টাকা পাওয়া গিয়েছিল। তদন্তকারীরা জানতে পারেন, ওই গাড়িটি চন্দন গৌড় নামে একজনের। আসলে এই চন্দন হল সৌরভ শর্মার ঘনিষ্ঠ বন্ধু। এরপরেই সৌরভের বাড়ি ও অফিসে হানা দেয় লোকায়ুক্ত পুলিশ এবং আয়কর দফতর।
জানা যাচ্ছে, সৌরভ শর্মার বিরুদ্ধে অভিযানে একটি গোপন লকারের খোঁজ পাওয়া যায়। সেখানে রুপোর পাশাপাশি হীরার আংটি ও দামি ঘড়িও পাওয়া যায়। একটি মহিলার পার্সও উদ্ধার হয়েছে, যার মূল্য প্রায় ১৫ লক্ষ টাকা বলে জানা গিয়েছে। তদন্তকারীরা সৌরভের কাছে পাওয়া গুপ্তধন দেখে কার্যত হতবাক হয়ে গিয়েছেন। এক বছর আগে পর্যন্ত যার বেতন ছিল প্রতি মাসে ৪০ হাজার টাকা কীভাবে সে এতো সোনা, রুপো পেল তা ভাবাচ্ছে তদন্তকারীদের।
যদিও সৌরভ ও চন্দন দুজনেই এখনও পলাতক। প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে তারা দুবাইয়ে পালিয়ে যেতে পারে। জানা যাচ্ছে, বাবার মৃত্যুর পর ২০১৬ সালে পরিবহণ বিভাগে যোগদান করেন সৌরভ শর্মা। প্রথমে গোয়ালিয়রে পোস্টিং ছিল। এরপর ২০২৩ এ আচমকাই পরিবহণ বিভাগ থেকে স্বেচ্ছা অবসর (ভিআরএস) নিয়েছিলেন তিনি। পরে রিয়েল এস্টেট ব্যবসার সঙ্গে জড়িত হন। এরপরই তার বিরুদ্ধে একের পর এক অভিযোগ উঠতে শুরু করে। তখন বিষয়টি আয়কর দফতরের নজরে আসে। এরপরেই লোকায়ুক্ত পুলিশ ও আয়কর দফতর যৌথ অভিযান চালায়। মনে করা হচ্ছে বড়সড় চোরাচালানের সঙ্গে জড়িত থাকতে পারে সৌরভ।