স্বাধীনতা দিবসে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে এবার কলমের খোঁচায় তোপ দাগলেন কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধী। তিনি একটি ইংরেজি দৈনিকে তাঁর লেখা প্রবন্ধে বিজেপি সরকারকে তীব্র আক্রমণ শানিয়েছেন। সোমবার এই প্রসঙ্গে কংগ্রেসের মুখপাত্র রণদীপ সুরজেওয়ালা জানিয়েছেন যে, ভারত যখন স্বাধীনতার ৭৫ তম বছরে প্রবেশ করছে, তখন স্বাধীনতার মানে ঠিক কী, তা জনগণকে যাচাই করার আহ্বান জানিয়েছেন সোনিয়া।
তাঁর প্রকাশিত ওই প্রবন্ধে সোনিয়া লিখেছেন, ‘ মানুষের মৌলিক অধিকার ও সংবিধানকে ‘পদদলিত’ করা হলে, তা দেখেও নীরব থাকা একটি পাপ।’ তিনি আরও লেখেন, ‘দেশের গণতন্ত্রের সংস্কার করার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে।’
কংগ্রেস সভানেত্রী তাঁর প্রবন্ধে আরও লিখেছেন, ‘ যখন সরকার সংসদকে ‘আক্রমণ’ করে, তার ঐতিহ্যকে ‘পদদলিত’ করে, গণতন্ত্রকে ‘দাসে পরিণত করে’, সংবিধানকে লঙ্ঘন করার চেষ্টা করে, দেশকে প্রাতিষ্ঠানিক স্বশাসনে বেঁধে দেয়, তখন দেশের নাগরিকদের কাছে স্বাধীনতার মানে কী, তা তাঁদের আত্মবিশ্লেষণ করতে হবে।’
সেখানেই সোনিয়া অভিযোগ করেন যে, টিভি চ্যানেলগুলির সত্য দেখানোর স্বাধীনতা রয়েছে। লেখক ও বুদ্ধিজীবীদের নিজেদের মত প্রকাশের স্বাধীনতা রয়েছে। অথচ সাংবাদিকদের লেখার কোনও স্বাধীনতা নেই, সাংসদদের তাঁদের মত প্রকাশের স্বাধীনতা নেই। সংসদ ভবনকে একটি জাদুঘরে পরিণত করা হচ্ছে। জিএসটিতে ভুক্তভুগীদের কথা বলার স্বাধীনতা নেই। যুক্তরাষ্ট্রীয় পরিকাঠামোয় বাঁধা রাজ্যগুলোর তাঁদের অধিকারের দাবি করার স্বাধীনতা নেই।
তাঁর প্রবন্ধে তিনি যুক্তি দিয়ে লিখেছেন, ‘ভারতের গণতন্ত্রের মেরামত প্রয়োজন। আমাদের অবশ্যই ক্ষতিপূরণ করতে হবে।’ তিনি বলেন, ‘ বিগত কয়েক দশকে অর্জিত অগ্রগতি বর্তমান সরকারের জন্য বিপরীত পথে চালিত হয়েছে। এখন শুধু ফাঁকা স্লোগান, ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট ও ব্র্যান্ড তৈরিতে খরচ করা হচ্ছে।’ তিনি প্রশ্ন তোলেন, আমাদের স্বপ্নের ভারতের কয়েক দশকের অগ্রগতির পরও কেন গণতন্ত্র বিপদগ্রস্ত হবে?
তিনি আরও লেখেন, ‘ যাদের দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে কোনও অবদান নেই, তাঁরা আমাদের মণীষীদের নিয়ে মাতামাতি করবেন, তাতে আমরা বিচলিত হব না। কারণ, তারা গান্ধীজীর চশমা ধার নিতে পারেন, কিন্তু আমাদের দেশের জন্য তাদের সেই গডসেরই দৃষ্টিভঙ্গি রয়ে গিয়েছে।৭৫ বছর আগে আমাদের পূর্বসুরিরা সেই বিভাজনের দৃষ্টিভঙ্গি প্রত্যাখ্যান করেছিলেন, এবারে আমাদের প্রত্যাখ্যান করতে হবে।’