সোনা কিংবা রুপোর গয়না, কাঁড়ি কাঁড়ি নগদ অথবা নামি দামি সংস্থার গাড়ি - যেকোনও অভিযানে এইসব জিনিসপত্র উদ্ধার বা বাজেয়াপ্ত করতে রীতিমতো অভ্যস্থ আয়কর আধিকারিকরা। কিন্তু, তা বলে আস্ত এবং জ্যান্ত কুমির উদ্ধার? তাও কিনা একসঙ্গে তিনটে?
আজ্ঞে হ্য়াঁ! অভিযানে নেমে এবার কুমিরের দেখা পেলেন আয়কর আধিকারিকরা। সেগুলিকে উদ্ধার করারও ব্যবস্থা করলেন তাঁরা। ঘটনাস্থল মধ্যপ্রদেশের সাগর বিধানসভা কেন্দ্রের প্রাক্তন বিজেপি বিধায়ক হরবংশ সিং রাঠোরের বাসভবন!
বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম এবং সোশাল মিডিয়ার সৌজন্যে যে ছবি সামনে এসেছে, তা থেকে জানা গিয়েছে, নিজের বাড়ির জলাশয়ে একসঙ্গে তিন-তিনখানা কুমির পুষে রেখেছিলেন হরবংশ! যা দেখে চক্ষু চড়কগাছ আয়কর আধিকারিকদের।
আসলে, কোটি কোটি টাকা কর ফাঁকি দেওয়ার অভিযোগে একসঙ্গে দুই ব্যক্তির বাড়িতে অভিযান চালায় আয়কর বিভাগ। এঁদের একজন হলেন হরবংশ। এবং অন্যজন হলেন প্রাক্তন কাউন্সিলর রাজেশ কেশওয়ারনি। গত রবিবার এই অভিযান শুরু করা হয়।
এখনও পর্যন্ত যত দূর জানা গিয়েছে, সব মিলিয়ে প্রায় ১৫৫ কোটি টাকার কর ফাঁকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। অভিযান চলাকালীন আয়কর আধিকারিকরা নগদ ৩ কোটি টাকা এবং প্রচুর পরিমাণে সোনা ও রুপোর গয়না বাজেয়াপ্ত করেছেন। তারও দাম কোটি কোটি!
সূত্রের খবর, বিড়ির ব্যবসা করেই নাকি এত রমরমা প্রাক্তন বিধায়ক ও প্রাক্তন কাউন্সিলর জুটির। তাঁরা একত্রেই এই ব্যবসা চালান। এই অভিযানে কর ফাঁকি সংক্রান্ত প্রচুর গুরুত্বপূর্ণ নথিও উদ্ধার করা হয়েছে। এছাড়াও, বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে একাধিক দামি গাড়ি। যেগুলি বেনামে কেনা হয়েছিল বলে কোনও কোনও মহল সূত্রে খবর পাওয়া যাচ্ছে।
জানা গিয়েছে, অভিযুক্তদের মধ্য়ে রাজেশ কেশওয়ারনি যৌথভাবে বিড়ির ব্যবসা করার পাশাপাশি নির্মাণ ব্যবসাও করেন।
তবে, এই অভিযানে সবথেকে বেশি যে বিষয়টি নজর কেড়েছে, তা হল - তিনটি কুমিরের উপস্থিতি। সূত্রের দাবি, রাঠোরের বাড়িতে একটি ছোট্ট পুকুর রয়েছে। সেখানেই তিনটি কমির ছেড়ে রেখেছিলেন তিনি।
আয়কর বিভাগের প্রতিনিধিরা মোটেও এই দৃশ্য দেখার জন্য প্রস্তুত ছিলেন না। বিষয়টি সামনে আসার পরই তাঁদের তরফে সঙ্গে সঙ্গে বন দফতরকে খবর পাঠানো হয়।
প্রসঙ্গত, এলাকায় বিজেপি নেতা হিসাবে রাঠোরের যথেষ্ট প্রভাব রয়েছে। ২০১৩ সালে বিজেপির টিকিটেই বিধায়ক নির্বাচিত হয়েছিলেন তিনি। তাঁর বাবা হরনাম সিং রাঠোর একটা সময় মধ্যপ্রদেশ সরকারের মন্ত্রী ছিলেন।