দীক্ষা ভরদ্বাজ
ফেসবুক ইন্ডিয়া কি পক্ষপাতদুষ্ট। তারা কী বিজেপি নেতাদের গরমাগরম উক্তির ক্ষেত্রে ব্যবস্থা নিতে দ্বিধা করে। নাকি এই সবই অপপ্রচার ফেসবুকে দক্ষিণপন্থী সমর্থকদের কোণঠাসা করার জন্য। বিজেপি-কংগ্রেস এই দোষারোপের পালার মধ্যেই এদিন ফেসবুক ইন্ডিয়ার শীর্ষ নেতৃত্বের ডাক পড়েছিল তথ্য প্রযুক্তি সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সামনে।
তবে এদিন পুরো আলোচনা হয়নি। যদিও প্রায় সব দলই বিভিন্ন অভিযোগ করে ফেসবুক প্রতিনিধির কাছে। ফের এই কমিটির সামনে উপস্থিত থাকতে হবে ফেসবুক ইন্ডিয়ার প্রতিনিধিদের। তবে ১১ সেপ্টেম্বর এই কমিটির মেয়াদ ফুরোচ্ছে। তাই এরপর নয়া গঠিত কমিটির সামনে সম্ভবত উপস্থিত হবেন সোশ্যাল মিডিয়া ওয়েবসাইটের হর্তাকর্তারা।
বৈঠকের শেষে শশী থারুর বলেন যে আমরা সাড়ে তিন ঘণ্টা ধরে বৈঠক করলাম ও সবাই ঠিক মিলে ঠিক করা হয়েছে যে ফের বসা হবে। ফেসবুকের প্রতিনিধিরাও সেখানে থাকবেন বলে জানিয়েছেন কমিটির প্রধান থারুর।
সূত্রের খবর, কমিটি ক্ষিপ্ত হয় এটা দেখে যে ফেসবুকের পাবলিক পলিসি টিমের কেউ আসেননি সাক্ষী দিতে। শুধু ম্যানেজিং ডিরেক্টর অজিত মোহন এসেছিলেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কমিটির সদস্য বলেন যে ফেসবুককে জিজ্ঞেস করা হয় কেন কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি যারা নিয়ম লঙ্ঘন করছেন তাদের বিরুদ্ধে।
সূত্রের খবর, বৈঠকে কংগ্রেস সাংসদ শক্তিসিং গোহিল পুরো বিষয়টির জেপিসি তদন্তের দাবি করেন। অন্যদিকে কেমব্রিজ অ্যানালিটিকা বিতর্কের কি হল, সেই প্রশ্ন করেন বিজেপি সাংসদ নিশিকান্ত দুবে।
ফেসবুকে যারা কাজ করেন তারা আদৌ কতটা নিরপেক্ষ ভাবে কাজ করেন, সেই নিয়ে বারবার প্রশ্ন ওঠে। বিশেষত ফেসবুকের পলিসি ডিরেক্টর আঁখি দাসের কার্যকলাপ আতসকাঁচের ওপর পড়ে। সংস্থা জানিয়েছে তারা এই নিয়ে লিখিত ভাবে জবাব দেবে। বিভিন্ন সময় আঁখি বিজেপির স্বপক্ষে বলেছেন ও কংগ্রেসের পরাজয়ের পর রীতিমত উচ্ছ্বসিত হয়েছিলেন, বলে অভিযোগ উঠেছে সংবাদমাধ্যমে।
বৈঠকে থাকা সদস্যদের থেকে জানা যাচ্ছে বাংলার অর্জুন, তেলেঙ্গানার রাজা সিংয়ের কথা তোলা হয় ফেসবুকের সামনে। কিন্তু এই সব প্রশ্ন এড়িয়ে যেতে চেয়েছেন ফেসবুকের প্রতিনিধিরা বলে সদস্যদের দাবি। অজিত মোহনের সঙ্গে কংগ্রেস, বাম ও ওয়ার্ল্ড স্ট্রিট জার্নালের সম্পর্ক আছে বলে অভিযোগ করেন রাজ্যবর্ধন রাঠৌর। যদিও সেই অভিযোগ খারিজ করে মোহন বলেন যে তিনি জন্মে কোনও দিন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে কাজ করেননি ও আগে ম্যাকেনসিতে কর্মরত ছিলেন।
ফেসবুকের সঙ্গে সরকারি সংস্থাগুলির কী সম্পর্ক, সেই নিয়ে খুঁটিয়ে প্রশ্ন করা হয়। আমেরিকা ও ভারতে ফেসবুক ভিন্ন মাপকাঠি ব্যবহার করে, এমন অভিযোগও উঠেছে। সূত্রের খবর ফেসবুকের পক্ষ থেকে বলা হয় যে সারা বিশ্বে যে মাপদণ্ড আছে সেটিই ভারতে ব্যবহার করা হচ্ছে ও তারা সম্পূর্ণ ভাবে নিরপেক্ষ বলেও দাবি করা হয়। বৈঠকের শেষে ফেসবুকের পক্ষ থেকে একটি বিবৃতিতে বলা হয়েছে যে তারা কৃতজ্ঞ যে সংসদীয় কমিটি তাদের বক্তব্য শুনেছে। খোলা ও স্বচ্ছ একটি প্ল্যাটফর্ম যেখানে মানুষের বাকস্বাধীনতার অধিকার আছে, প্রদান করতে ফেসবুক বদ্ধপরিকর বলে সংস্থা জানিয়েছে।