কর্মীদের স্বেচ্ছায় চাকরি ছাড়ার হার বা অ্যাট্রিশন রেট বেড়েছে বেশ কিছু আইটি সংস্থায়। মনে করা হচ্ছে, রিটেল, ম্যানুফ্যাকচারিংয়ের মতো সেক্টরে কিছু বিশেষজ্ঞদের রোলে কর্মীদের চাহিদা বৃদ্ধির ফলেই আইটি কর্মীদের চাকরি ছাড়ার হার বেড়েছে। এরই সঙ্গে আইটি ইন্ডাস্ট্রিতেই আরও ভালো সুযোগ পাওয়ার ফলে অনেকেই আগের সংস্থার চাকরি ছাড়ছেন অনেকে। রিপোর্ট অনুযায়ী, চলতি অর্থবর্ষের দ্বিতীয় কোয়ার্টারে যেখানে টিসিএসে অ্যাট্রিশন রেট ছিল ১২.৩ শতাংশ, সেখানেই তৃতীয় ত্রৈমাসিকে তা বেড়ে ১৩ শতাংশ হয়। এদিকে ইনফোসিসে সেই হার ১২.৯ শতাংশ থেকে বেড়ে ১৩.৭ শতাংশ হয়। এইচসিএল টেক-এ এই হার ১২.৯ শতাংশ থেকে বেড়ে ১৩.২ শতাংশ হয়। উইপ্রোতে সেটা ১৪.৫ থেকে বেড়ে ১৫.৩ শতাংশ হয়। আর টেক মহিন্দ্রায় এই হার দুটি ত্রৈমাসিকেই ১১ শতাংশ থাকে। (আরও পড়ুন: রুশ তেলে মার্কিন নিষেধাজ্ঞার প্রভাব পড়বে ভারতে? জবাব দিলেন ইন্ডিয়ান অয়েল প্রধান)
আরও পড়ুন: জাহাজে করে শহরে এল মেট্রোর নতুন দু'টি ডালিয়ান রেক, আছে কী কী ফিচার?
এদিকে ২০২৬ অর্থবর্ষে আরও বেশি সংখ্যক ফ্রেশার নিয়োগের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে টাটা কনসাল্টেন্সি সার্ভিসেস এবং ইনফোসিসের মতো ভারতীয় তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থাগুলি। রিপোর্ট অনুযায়ী, দেশের সবচেয়ে বড় ৬টি আইটি সংস্থা আসন্ন অর্থবর্ষে ৮২ হাজার ফ্রেশারকে চাকরি দিতে চাইছে। এহেন পরিস্থিতিতে এবছর ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজগুলি থেকে পাশ করে চলা পড়ুয়াদের মুখে হাসি ফুটতে পারে। এদিকে বিদায়ী অর্থবর্ষেও এই একই ধরনের লক্ষ্যমাত্রা স্থির করেছিল ভাতরীয় তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থাগুলি। তবে দেখা যায়, আসলে কর্মী চাহিদা কমেছে। রিপোর্ট অনুযায়ী, বিদায়ী অর্থবর্ষের তৃতীয় ত্রৈমাসিকে ভারতের ৬টি সবচেয়ে বড় আইটি সংস্থার কর্মী সংস্থা সম্মিলিত ভাবে ২২৫ জন কমেছে গত কোয়ার্টার থেকে। আর ২০২৪ অর্থবর্ষে সব মিলিয়ে ভারতের আইটি ইন্ডাস্ট্রিতে কর্মী সংস্থা কমেছে ৭০ হাজার। (আরও পড়ুন: আরজি করের বেঞ্চে শুয়ে ছিল 'রহস্যময়', ২ রাত আগেও নির্যাতিতার কাছে যায় এক মত্ত)
আরও পড়ুন: নিম্নবিত্তদের খরচ কমছে না মূল্যস্ফীতিতেও, নেপথ্যে কি নানা সরকারি প্রকল্প?
আরও পড়ুন: ভারতের বৈদেশিক মুদ্রা রিজার্ভ কমছে হু হু করে,পড়শি বাংলাদেশের পকেটে এখন কত ডলার?
টাইমস অফ ইন্ডিয়ার রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, এই সামনের অর্থবর্ষে টিসিএস ৪০ হাজার ফ্রেশারকে নিয়োগ করতে চাইছে। এদিকে এই তালিকায় এরপরেই আছে ইনফোসিস। তারা চাইছে ১৫ থেকে ২০ হাজার ফ্রেশারকে নিয়োগ করতে। এইচসিএল চাইছে ৭ হাজার ফ্রেশারকে নিয়োগ করতে, উইপ্রো চাইছে ১০ হাজারের বেশি ফ্রেশার নিয়োগ করতে, টেক মহিন্দ্রা চাইছে ৬ হাজারের মতো ফ্রেশার নিয়োগ করতে। এদিকে এল অ্যান্ড টি মাইন্ডট্রি তাদের ফ্রেশার নিয়োগের লক্ষ্যমাত্রা প্রকাশ করেনি। সম্প্রতি টাটা কনসাল্টেন্সি সার্ভিসের ত্রৈমাসিক ফলাফল প্রকাশিত হয়েছিল। সেই সময় টিসিএসের চিফ এইচআর অফিসার মিলিন্দ লক্কড় বলেন, 'আমাদের এই বছরের ক্যাম্পাসিং পরিকল্পনামাফিক চলছে। আগামী বছরে এর থেকেও বেশি সংখ্যক কর্মী নিয়োগ করা হবে ক্যাম্পাসিংয়ে। এর জন্যে আমরা প্রস্তুতি নিচ্ছি।' (আরও পড়ুন: আদানির চাপে চোখে অন্ধকার, আঁধার মেটাতে বিশ্বব্যাঙ্ক থেকে $৩ কোটির ঋণ বাংলাদেশের)
আরও পড়ুন: ৪ দশক আগে ভারতের অর্থনীতিতে তৃতীয় সর্বোচ্চ অবদান ছিল বাংলার? আজ কোথায় রাজ্য?
এদিকে ইনফোসিসে ফ্রেশারদের বেতন বৃদ্ধি নিয়ে নেতিবাচক ধারণা হয়েছে সাম্প্রতিককালে। অনেক ইনফোসিস কর্মীরই অভিযোগ, গত ১ দশকেও ইনফোসিসে ফ্রেশারদের বেতন বাড়েনি। এই আবহে কাজের তুলনায় কর্মীদের কম বেতন দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। এদিকে সম্প্রতি ভূমপেন্দ্র বিশ্বকর্মা সোশ্যাল মিডিয়ায় অভিযোগ করেন, হাতে কোনও চাকরি না থাকা সত্ত্বেও তিনি ইনফোসিসে কাজ ছাড়তে বাধ্য হয়েছিলেন কারণ সেখানে কোনও আর্থিক বৃদ্ধি ছিল না এবং কাজের অত্যধিক চাপ ছিল। তবে অ্যাট্রিশন রেট বৃদ্ধির নেপথ্যে ভালো বেতনের হাতছানির বিষয়টিতেই বেশি উল্লেখযোগ্য মনে করছেন ইন্ডাস্ট্রি পর্যবেক্ষকরা।