মীরাটে মার্চেন্ট নেভির অফিসারের হাড়হিম করা হত্যাকাণ্ডে শিউড়ে উঠেছে গোটা দেশ৷ সেই রেশ কাটতে না কাটতেই এবার রাজস্থানের জয়পুরে স্বামীকে খুন করার অভিযোগ উঠেছে স্ত্রী এবং তার প্রেমিকের বিরুদ্ধে। তারপর স্বামীর দেহ বস্তায় ভরে প্রেমিকের বাইকে চাপিয়ে এক নির্জন জায়গায় নিয়ে গিয়ে পুড়িয়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ উঠেছে। সিসিটিভি ক্যামেরার সূত্র ধরে খুনের কিনারা করেছে পুলিশ। গ্রেফতার করা হয়েছে ওই মহিলা ও তাঁর প্রেমিককে।
জানা গিয়েছে, নিহত ব্যক্তির নাম ধন্নালাল সাইনি। দাবি করা হয়েছে, পেশায় সবজি বিক্রেতা ওই যুবকের স্ত্রী গোপালি দেবী গত পাঁচ বছর ধরে এক যুবকের সঙ্গে বিবাহ-বহির্ভূত সম্পর্কে ছিলেন। সম্প্রতি সেই বিবাহ-বহির্ভূত সম্পর্কের কথা জানতে পেরে যান তাঁর স্বামী। স্ত্রীর সঙ্গে চরম বচসাও হয় তাঁর।
অভিযোগ উঠেছে, গোপালি দেবীর প্রেমিক দীনদয়াল একটি কাপড়ের দোকানে কাজ করেন। গত ১৫ মার্চ ঘরে ফিরে স্ত্রীকে দেখতে না পেয়ে সোজা দীনদয়ালের দোকানে চলে যান ধন্নালাল। সেখানে দীনদয়ালের সঙ্গেই ছিলেন তাঁর স্ত্রী।এরপরেই ক্ষোভে ফেটে পড়েন তিনি৷ দু’জনকে একসঙ্গে দেখে ঘটনাস্থলেই অশান্তি শুরু করে দেন ধন্নালাল। বচসা বাড়তেই থাকে। এর মধ্যে ধন্নালালকে ভুল বুঝিয়ে অন্য একটি দোকানের ভিতরে নিয়ে যায় তাঁর স্ত্রী গোপালি দেবী এবং তার প্রেমিক৷ তারপর লোহার রড দিয়ে ধন্নালালের মাথায় সজোরে আঘাত করেন দীনদয়াল। প্রেমিকের আঘাতের জেরে স্বামী লুটিয়ে পড়লে গলায় দড়ি পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে তাঁকে খুন করেন স্ত্রী গোপালি।এরপর স্ত্রী ও প্রেমিক মিলে স্বামীর দেহ একটি বস্তায় ভরে ফেলেন। সব শেষে তা প্রেমিকের বাইকে চাপিয়ে কাছেই মন্দিরের পিছনে এক নির্জন জায়গায় নিয়ে গিয়ে পুড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু দেহ অর্ধেক পুড়তে না পুড়তেই একটি গাড়ি তাদের দিকে আসছে দেখে পালিয়ে যায় ধন্নালালের স্ত্রী এবং তার প্রেমিক৷ পরে অর্ধদগ্ধ ওই দেহ উদ্ধার করে পুলিশ৷ দু দিন পর ওই মৃতদেহের পরিচয় জানতে পারে পুলিশ৷ এরপরই ধন্নালালের স্ত্রী এবং তার প্রেমিককে গ্রেফতার করা হয়৷
তদন্তে জানা গিয়েছে, খুনের পূর্বপরিকল্পনা না থাকলেও খুনের পর প্রমাণ লোপাটের জন্য গোপালিই স্বামীর দেহ পুড়িয়ে ফেলার পরিকল্পনা করেছিলেন। তারপর দু’জন মিলে জয়পুর ছেড়ে পালানোর তোড়জোড়ও শুরু করেন। কিন্তু তার আগেই তাঁদের ধরে ফেলে পুলিশ। জানা গিয়েছে, মন্দির চত্বরের সিসিটিভি ক্যামেরায় ওই যুগলকে বাইকে চেপে যেতে দেখা গিয়েছিল। সঙ্গে ছিল একটি ভারী বস্তাও। শেষমেশ সেই সিসিটিভি ক্যামেরার সূত্র ধরেই গোপালি ও দীনদয়ালকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।