এইচ১বি ভিসার ফি বৃদ্ধি করেছে আমেরিকা। ট্রাম্পের এই ঘোষণার পরই ভারতীয় অভিবাসীদের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দেয়। এই আবহে মার্কিন মুলুকে দাঁড়িয়ে বড় মন্তব্য ভারতের বিদেশমন্ত্রীর। নিউইয়র্কে জি২০ বিদেশমন্ত্রীদের বৈঠকে এস জয়শঙ্কর বলেন, আজকের পরিবর্তিত বিশ্বের জন্য একটি বৈশ্বিক কর্মীবাহিনীর প্রয়োজন। তিনি জোর দিয়ে বলেন যে, জাতীয় জনসংখ্যার কারণে অনেক দেশ নিজেদের চাহিদা পূরণ করতে পারে না। এই বাস্তবতা থেকেই দেশগুলি বৈশ্বিক কর্মীবাহিনীর প্রয়োজনীয়তা এড়াতে পারে না। জয়শঙ্কর বলেন, 'বৈশ্বিক কর্মীদের কোথায় মোতায়েন করা হবে তা রাজনৈতিক বিতর্কের বিষয় হতে পারে, তবে বৈশ্বিক কর্মবাহিনী অনিবার্য। চাহিদা এবং জনসংখ্যার দিকে তাকান, অনেক দেশ তাদের জাতীয় জনসংখ্যার ভিত্তিতে চাহিদা পূরণ করতে পারে না।'
এরপর জয়শঙ্কর বলেন, 'বৈশ্বিক কর্মবাহিনীর চাহিদা একটা বাস্তবতা। এই বাস্তবতা এড়িয়ে যাওয়া যায় না। তাহলে আমরা কি এমন এক বৈশ্বিক কর্মীবাহিনীর মডেল তৈরি করতে পারি, যা গ্রহণযোগ্য, সমসাময়িক এবং দক্ষ হবে, যা বিকেন্দ্রীভূত হবে, বিশ্বব্যাপী কর্মক্ষেত্রে যাদের মোতায়েন করা যেতে পারে? আমি মনে করি এটি আজকের দিনে একটি খুব বড় প্রশ্ন এবং আন্তর্জাতিক অর্থব্যবস্থাকেই এই সমস্যার সমাধান করতে হবে। এই পুনর্গঠিত বিশ্বের অংশ হিসেবে আমরা দেশগুলির মধ্যে নতুন এবং ভিন্ন বাণিজ্য চুক্তি হতে দেখব - এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে যা স্বাভাবিক পরিস্থিতিতে নেওয়া নাও হতে পারে।' এরপর ভারতের বিদেশমন্ত্রী আরও বলেন, 'অনিশ্চয়তা এবং অপ্রত্যাশিত থাকলেও ব্যবসা-বাণিজ্য শেষ পর্যন্ত পথ খুঁজেই পায়।'
এদিকে রাশিয়ার থেকে তেল কেনা ইস্যুতে ভারতের সমালোচনা করার বিষয়ে পশ্চিমাদের দ্বিচারিতার তীব্র নিন্দা করেছেন জয়শঙ্কর। যুক্তরাষ্ট্রের নাম না করে তিনি বলেন, 'বৈশ্বিক উন্নয়নকে বিপন্ন করে আমরা আন্তর্জাতিক শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে পারি না।' তিনি জোর দিয়ে বলেন, এই মুহূর্তে বিশ্বের পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে। এর ফলে গ্লোবাল সাউথ এবং সারা বিশ্ব প্রভাবিত হচ্ছে। শুধু তাই নয়, সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণের ওপরও গুরুত্বারোপ করেন ভারতের বিদেশমন্ত্রী।
জয়শঙ্কর বলেন, 'আমরা শান্তির মাধ্যমে উন্নয়ন আনতে পারি, কিন্তু উন্নয়নকে বিপন্ন করে আমরা বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে পারি না।' শান্তি ও সংলাপের মাধ্যমেই যে কোনও সমস্যার সমাধান করার আহ্বান জানান জয়শঙ্কর। তিনি বলেন, 'উন্নয়নের মাধ্যমেই শান্তি আসতে পারে। জ্বালানি এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় পণ্যের বাণিজ্যকে আরও অনিশ্চিত করে তোলা হলে কারও কোনও উপকার হবে না। ইতিমধ্যে একটি ভঙ্গুর পরিস্থিতিতে রয়েছে জ্বালানি বাণিজ্য। তাই যেকোনও ইস্যু সংলাপ, কূটনীতির মাধ্যমে সমাধান করতে হবে। এতে জটিলতা যুক্ত করা ঠিক নয়।'