মায়ানমারের উপপ্রধানমন্ত্রী তথা বিদেশমন্ত্রী ইউ থান সোয়ে-র সঙ্গে বৈঠক করলেন ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শংকর। মায়ানমার-ভারত সীমান্ত ক্রমেই অশান্ত হয়েছে। সম্প্রতি মায়ানমারে বিদ্রোহীদের তীব্র আক্রমণের মুখে পড়ে সীমান্ত পার করে ভারতে অনুপ্রবেশ করেছিলেন মায়ানমারের বহু সেনা সদস্য। এদিকে ভারতের উত্তরপূর্বের রাজ্যগুলিতে মায়ানমার শরণার্থীর সংখ্যা বেড়েছে বিগত কয়েক মাসে। এই পরিস্থিতি নিয়ে দিল্লির উদ্বেগের কথা ইউ থানকে জানান জয়শঙ্কর। এর পাশাপাশি সীমান্ত পার যেভাবে নিষিদ্ধ মাদক এবং অস্ত্র পাচারের কারবার চলছে, তা নিয়েও মায়ানমারের বিদেশমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেন জয়শঙ্কর। এই আবহে অগ্রাধিকারের সঙ্গে এই পাচার বন্ধ করতে মায়ানমারের সহযোগিতা কামনা করেন জয়শঙ্কর। এদিকে মায়ানমারের মিয়াওয়াদ্দিতে ভারতীয় নাগরিকরা আটকে আছেন। তাঁদেরকে ছাড়িয়ে আনার বিষয়েও কথা হয় দুই দেশের বিদেশমন্ত্রীর। (আরও পড়ুন: সংখ্যালঘুদের ওপর হিংসা নিয়ে উদ্বেগ, 'ভারতে ধর্মীয় স্বাধীনতা' নিয়ে বিস্ফোরক USA)
আরও পড়ুন: পান্নুনকাণ্ডে ভারতের জবাবদিহি চাই, 'নরমে গরমে' দিল্লিকে বার্তা ওয়াশিংটনের
আরও পড়ুন: প্রেসিডেন্ট মুইজ্জুর ওপর 'কালো জাদু' করার অভিযোগে গ্রেফতার মলদ্বীপের ২ মন্ত্রী!
এদিকে মায়ানমারে ভারতের বেশ কিছু প্রকল্প আটকে আছে এই সব হিংসার জেরে। এই পরিস্থিতিতে ভারতের প্রকল্পগুলির কাজ এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার বিষয়ে সব পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করার কথা বলেন জয়শঙ্কর। এদিকে মায়ানমারে যাতে শীঘ্রই গণতন্ত্র ফিরে আসে, সেই বিষয়ে আশা প্রকাশ করেন জয়শঙ্কর। মায়ানমারের পাশে থাকার বার্তাও দেন ভারতের বিদেশমন্ত্রী। কয়েক বছর আগেই গণতন্ত্রের মৃত্যু ঘটেছিল দেশটিতে। ক্ষমতার দখল নিয়েছিল সেনা। দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় রাজনীতিবিদকে জেলে ভরেছিল সেনা। প্রসঙ্গত, ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে সামরিক অভ্যুত্থান ঘটেছিল মায়ানমারে। আং সান সু কি-র নির্বাচিত সরকারের থেকে ক্ষমতা কেড়ে মসনদে বসে সামরিক জুন্টা বাহিনী। সেই সময় থেকে তিন হাজারেরও বেশি নাগরিক এই বাহিনীর আক্রমণে প্রাণ হারিয়েছেন বলে দাবি করা হয়। এই আবহে মায়ানমারের বিভিন্ন প্রান্তে শাসক জুন্টা বিরোধী সশস্ত্র জোট গড়ে উঠেছে।
আরও পড়ুন: দিল্লি বিমানবন্দর কাণ্ডে মৃত ৩, দাবি TMC সাংসদের, বিস্ফোরক অভিযোগ মোদীর নামে
এদিকে কলকাতা-ব্যাংকক ত্রিদেশীয় হাইওয়ে প্রকল্পটি মায়ানমারের মধ্যেদিয়েই যাওয়ার কথা। তবে সেই দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির জেরেই এই রাস্তার কাজ থমকে বলে গতবছরই জানিয়েছিলেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। জানা গিয়েছে, এই মহাসড়কের ৭০ শতাংশ কাজই প্রায় শেষ। কলকাতা থেকে শুরু করে শিলিগুড়ি ছুঁয়ে এই মহাসড়ক চলে যাবে উত্তরপূর্ব ভারতে। মণিপুরের মোরে হবে ভারতের শেষ। এরপর মায়ানমার হয়ে থাইল্যান্ডের মায়ে সট-এ প্রবেশ করবে এই মহাসড়ক। এই মহাসড়ক করেই সরাসরি কলকাতা থেকে ব্যাংককে যাওয়া যাবে। ২০১৯ সালের ডিসেম্বরের মধ্যেই এই প্রকল্প শেষ করতে চেয়েছিল সরকার। তবে মায়ানমারের অশান্ত পরিস্থিতির কারণে তা শেষ করা সম্ভব হয়নি। 'বে অফ বেঙ্গল ইনিশিয়েটিভ ফর মাল্টি-সেক্টরাল টেকনিকাল অ্যান্ড ইকোনমিক কো-অপারেশন'-র আওতায় নির্মাণ করা হচ্ছে এই হাইওয়ে। এই মহাসড়ক চালু হলে পূর্ব ও উত্তরপূর্ব ভারতের সঙ্গে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সংযোগ স্থাপন আরও সহজ হবে। এতে বাণিজ্য বাড়বে।