ডোনাল্ড ট্রাম্পের একের পর এক সিদ্ধান্তে ভারতীয়দের ওপর প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। অভিবাসন নীতি থেকে নাগরিকত্ব ইস্যুতে ট্রম্পের নয়া নির্বাহী নির্দেশিকায় ধাক্কা খেয়েছেন লাখ লাখ ভারতীয়। এরই মাঝে মার্কিন মুলুকে আছেন ভারতীয় বিদেশমন্ত্রী এস জয়শংকর। আর জয়শংকর ওয়াশিংটনে থাকাকালীনই ট্রম্প আবার শুল্ক জুজু দেখিয়েছেন ভারতকে। এই সবের মাঝে মার্কিন-ভারত সম্পর্ক নিয়ে ট্রাম্প ২.০-র ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন করা হয়েছিল জয়শংকরকে। আর এই প্রশ্নের জবাবে জয়শংকর বললেন, 'এটা স্পষ্ট যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে মজমুত করতে ট্রাম্প প্রশাসন আগ্রহী। তারা এই সম্পর্ককে অগ্রাধিকার দিচ্ছেন।' জয়শংকর জানান, কোয়াড উদ্যোগকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার বিষয়ে আগ্রহী বর্তমান মার্কিন প্রশাসন। তবে জয়শংকর জানান, মার্কিন আধিকারিকদের সঙ্গে বেশি গভীরে গিয়ে এখনও আলোচনা হয়নি তাঁর। (আরও পড়ুন: ঊষা ভান্সের ধর্ম কী? তিনি কোন দেশের নাগরিক? জবাবের খোঁজে হন্যে মার্কিনিরা)
আরও পড়ুন: ট্রাম্পের বিদেশ সচিবের সঙ্গে বাংলাদেশ নিয়ে কথা জয়শংকরের, চিন্তা বাড়বে ইউনুসের?
জয়শংকর বলেন, 'বর্তমানে ভারত এবং আমেরিকার মধ্যকার বিশ্বাসের ডিগ্রি বেশ ওপরের দিকেই। আমরা একসঙ্গে বৈশ্বিক এবং আঞ্চলিক স্তরে অনেক ভালো কাজ করতে পারি।' তিনি এরপর বলেন, 'দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক নিয়ে কথা বলতে হলে... আজ ট্রাম্প প্রশাসনের প্রথম দিন। তাই আমরা ওপর ওপর দিয়ে সব ইস্যু ছুঁয়ে কথাবার্তা বলেছি। তবে কোনও বিষয়ের গভীরে গিয়ে আলোচনা হয়নি। তবে এটা নিয়ে আমরা সহমত হয়েছি যে আমাদের আরও সাহসী হতে হবে, পরিসর বৃদ্ধি করতে হবে এবং উচ্চাকাঙ্খী হতে হবে।' (আরও পড়ুন: মার্কিন মুলুকে থাকা বেআইনি অভিবাসীদের ফেরত নেবে ভারত? জবাব দিলেন জয়শংকর)
আরও পড়ুন: ইজরায়েলে হামাসের হামলায় 'ক্ষতি' হয়েছে আমাদের, বিস্ফোরক ইরানের শীর্ষস্থানীয় নেতা
আরও পড়ুন: নাক কাটল পাকিস্তানের, সন্ত্রাসবাদ নিয়ে পর্দা ফাঁস করে রিপোর্ট 'বন্ধু' তালিবানের
এদিকে কোয়াডের মঞ্চ থেকে চিনকে কড়া বার্তা দিয়েছে ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন। চিনের নাম উহ্য রাখলেও ওয়াশিংটন যে বেজিংকে সতর্ক করেছে, তা স্পষ্ট। ভারত, জাপান, আমেরিকা এবং অস্ট্রেলিয়ার চতুর্দেশীয় অক্ষ বা কোয়াডের বিদেশমন্ত্রীরা যৌথ বিবৃতিতে বেজিংকে জানিয়ে দিয়েছে, শক্তিপ্রয়োগ করে বা জোরজবরদস্তি করে ইন্দো-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে একতরফা ভাবে স্থিতাবস্থায় বিঘ্ন ঘটনার চেষ্টা করা হলে সেটা কোনওভাবেই বরদাস্ত করা হবে না। আলাদাভাবে ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শংকরও জানিয়েছেন, কোয়াডের বৈঠক থেকে স্পষ্ট বার্তা দেওয়া হল যে এই অনিশ্চিত দুনিয়ায় বিশ্বের ভালোর জন্য কাজ করবে কোয়াড। (আরও পড়ুন: সেক্সে 'হ্যাঁ' মানে কি গোপন মুহূর্তের ভিডিয়ো করারও সম্মতি? কি বলল হাই কোর্ট?)
আরও পড়ুন: এবারের বাজেটে আয়করের নয়া স্ল্যাব আনতে পারে কেন্দ্র, মিলতে পারে ছাড়: রিপোর্ট
ভারতের বিদেশমন্ত্রী বলেন, 'ট্রাম্প প্রশাসনের শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানের কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই কোয়াডের বিদেশমন্ত্রী পর্যায়ের যে বৈঠক হল, তা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটা থেকেই প্রমাণিত হচ্ছে যে বন্ধু রাষ্ট্রগুলির ক্ষেত্রে (আমেরিকার) বৈদেশিক নীতি কতটা অগ্রাধিকার পায়। ইন্দো-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল যাতে মুক্ত, স্থিতিশীল এবং সমৃদ্ধশালী থাকে, তা নিশ্চিত করার জন্য আমরা বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করেছি। আরও বৃহাদাকারে ভাবনাচিন্তা করা, নিজেদের পদক্ষেপকে আরও দৃঢ় করা এবং আমাদের সমন্বয় আরও মজবুত করার বিষয়ে একমত হয়েছি (আমরা)। আজ যে বৈঠক হল, সেটা থেকে স্পষ্ট বার্তা গেল যে এই অনিশ্চিত এবং অস্থির দুনিয়ায় কোয়াড বিশ্বের ভালোর জন্য একটি শক্তি হয়ে থাকবে।'
এর আগে কোয়াডভুক্ত দেশগুলির বিদেশমন্ত্রীদের যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়েছিল, 'আগামিদিনে কোয়াডের কাজকর্মকে আরও এগিয়ে নিয়ে যেতে আমরা মুখিয়ে আছি। ভারত যে পরবর্তী কোয়াড নেতাদের সম্মেলেনের আয়োজন করবে (২০২৫ সালেই হবে), সেটার জন্য প্রস্তুতি নেওয়ার মধ্যেই আমরা নিয়মিত আলোচনা চালিয়ে যাব।'