থাইল্যান্ডে বিমসটেক শীর্ষ সম্মেলনের ফাঁকে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে একান্ত সাক্ষাৎকার করতে চাইছেন বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা মহম্মদ ইউনুস। এই বিষয়ে ঢাকার তরফ থেকে আনুষ্ঠানিক ভাবে অনুরোধ জানানো হয়েছে দিল্লিকে। বাংলাদেশের বিদেশ উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন নিজে সেই বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। আর এবার বাংলাদেশের অনুরোধ নিয়ে মুখ খুললেন ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শংকর নিজে। বার্তাসংস্থা পিটিআই-এর রিপোর্ট অনুযায়ী, বিদেশ বিষয়ক সংসদীয় পরামর্শদাতা কমিটির বৈঠকে জয়শংকর বলেন, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মহম্মদ ইউনুস এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর মধ্যে আসন্ন বিমসটেক শীর্ষ সম্মেলনে বৈঠকের অনুরোধ বিবেচনাধীন রয়েছে। (আরও পড়ুন: আওয়ামি লিগ নিয়ে সেনার গোপন বৈঠকের কথা সামনে, হাসনাতের পাশে নেই তাঁরই দল?)
আরও পড়ুন: 'হাস্যকর, অবিশ্বাস্য…', নগদ উদ্ধারকাণ্ডে মুখ খুললেন দিল্লি হাইকোর্টের বিচারপতি
এদিকে সূত্রের বরাত দিয়ে সেই রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, বিদেশ বিষয়ক সংসদীয় কমিটির বেশ কয়েকজন সংসদ সদস্য বাংলাদেশে হিন্দুদের ওপর হামলার বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে জানতে চেয়েছেন, এ ব্যাপারে ভারত কী পদক্ষেপ নিচ্ছে। এই নিয়ে জয়শংকর নাকি সংসদীয় কমিটিকে জানান, ঢাকা দাবি করেছে হিন্দুদের ওপর হামলা রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ছিল এবং সেগুলি ধর্মীয় কারণে ঘটানো হয়নি। জয়শঙ্কর বলেন, ভারত সরকার বিভিন্ন পর্যায়ে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সাথে এই বিষয়ে যোগাযোগ রেখে চলেছে এবং এই সংক্রান্ত উদ্বেগ উত্থাপিত হয়েছে। ভবিষ্যতেও সরকারের এই প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখা হবে বলেও জানান তিনি।
উল্লেখ্য, প্রধানমন্ত্রী মোদী থাইল্যান্ডের ব্যাঙ্ককে ২ থেকে ৪ এপ্রিল বিমস্টেক (দ্য বে অফ বেঙ্গল ইনিশিয়েটিভ ফর মাল্টি-সেক্টোরাল টেকনিক্যাল অ্যান্ড ইকোনমিক কো-অপারেশন) শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে পারেন। জয়শংকর জানিয়েছেন, পাকিস্তানের দৃষ্টিভঙ্গির কারণে সার্ক নিষ্ক্রিয় হয়ে গিয়েছে। এই কারণে ভারত বিমসটেককে শক্তিশালী করার চেষ্টা করছে।
প্রসঙ্গত, আওয়ামি লিগকে নিষিদ্ধ করা হবে না বলে সম্প্রতি জানিয়েছেন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মহম্মদ ইউনুস। আবার কয়েকদিন আগে বিবিসি বাংলাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ইউনুস বলেছিলেন, 'ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক ভালো না থেকে উপায় নেই'। এদিকে দাবি করেছিলেন, সরকারে আসার পরই নাকি মোদীর সঙ্গে 'কথা' হয়েছিল তাঁর। অনেক বিশ্লেষকেরই মত, থাইল্যান্ডে আসন্ন বিমসটেক সম্মেলনে মোদীর সঙ্গে একান্ত সাক্ষাৎ করার জন্যেই 'সুর' নরম করেছেন ইউনুস। নয়ত যেই ইউনুস সরকারে আসার আগে ভারতকে 'সেভেন সিস্টার' নিয়ে হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন, তিনিই সম্প্রতি উত্তরপূর্ব ভারতের সঙ্গে যৌথ অর্থনীতি গড়ে তোলার কথা বলেছিলেন। উল্লেখ্য, এর আগে ২০২৪ সালে নিউইয়র্কেও মোদীর সঙ্গে সাক্ষাতের চেষ্টা করে বিফল হয়েছিলেন ইউনুস। এবার ব্যাঙ্ককে সেই সাক্ষাৎ সম্ভব হয় কি না, সেটাই দেখার।