ড্রোন ব্যবহার করে এতদিন অস্ত্র, বিস্ফোরক এবং মাদক পাকিস্তান থেকে ভারতে পাঠানো হত। তবে ড্রোনের সাহায্যে ভারতের মাটিতে হামলা চালানোর ঘটনা শনিবার রাতে প্রথমবার ঘটে। আর সেই রেশ যেতে না যেতেই রবিবার রাতে জম্মু-পাঠানকোটে হাইওয়েতে সামরিক বাহিনীর ঘাঁটির উপরও দুটি ড্রোন দেখা যায়। এই পরিস্থিতিতে ভারতীয় সেনা তথা নিরাপত্তারক্ষীদের কাছে খুবই চিন্তার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। ড্রোন ব্যবহার করে হামলার এই ছক উপত্যকায় সন্ত্রাসের মানচিত্রে নয়া সংযোজন, যার জন্যে প্রস্তুত ছিল না সেনা।
এর আগে অনেকবার ড্রোন ব্যবহার করে অস্ত্র, বিস্ফোরক পাচারের পরিকল্পনা সীমান্তে বানচাল করেছে ভারতীয় জওয়ানরা। তবে এই ধরনের হামলা চালানোর লক্ষ্যে উড়ে আসা ড্রোনকে ঠেকানোর পরিকল্পনা নতুন করে ছকতে হবে সেনাকে।
প্রসঙ্গত, শনিবার রাত ১টা ৩৭ মিনিটে এবং ১টা ৪২ মিনিটে জম্মু বিমানবন্দরে অবস্থিত ভারতীয় বায়ুসেনার ঘাঁটিতে বিস্ফোরণ ঘটনায় জঙ্গিরা। হেলিকপ্টার পার্কিং এরিয়ায় বিস্ফোরণ দুটি হয়। যে ঘটনায় ভারতীয় বায়ুসেনা ঘাঁটির একতলার ছাদ বিস্ফোরণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এছাড়া আর তেমন কোনও ক্ষয়ক্ষতি হয়নি সেখানে। তবে, বায়ুসেনার এক ওয়ারান্ট অফিসার এবং এক এয়ারম্যান বিস্ফোরণের ঘটনায় জখম হয়েছেন।
নিরাপত্তবাহিনীর অনুমান, হামলায় ব্যবহৃত ড্রোনটি কাছাকাছি কোনও স্থান থেকেই নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছিল। আর পাকিস্তান থেকে ড্রোন উড়িয়ে এনে এই হামলা করার সম্ভব নয়। কারণ, ভারত-পাক সীমান্তে মোতায়েন রোবাস্টের নজরদারি এড়িয়ে ড্রোনকে ভারতীয় ভূখণ্ডের এত ভিতরে নিরাপদে নিয়ে আসা অসম্ভব বলে মনে করছেন আধিকারিকরা।
উল্লেখ্য, চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে কাশ্মীরে অভিযান চালিয়ে ১৫টি ম্যাগনেটিক বোম উদ্ধার করা হয়। জানা গিয়েছে, এই ম্যাগনেটিক বোম বেশি ব্যবহার করে তালিবান জঙ্গিরা। এই বোমা ড্রোনে লাগিয়ে ব্যবহার করতে পারে জঙ্গিরা। মধ্যপ্রাচ্যে বহু হামলা এভাবে চালিয়েছে আইএস জঙ্গিরা।
এদিকে জম্মু বিমানবন্দরের বিস্ফোরণে হেক্সাকপ্টার ড্রোন ব্যবহার করা হয়েছে বলে মনে করছে নিরাপত্তাবাহিনী। এই হেক্সাকপ্টার ব্যবহার করে অস্ত্র, মাদক এবং সন্ত্রাসবাদীদের জন্য বিভিন্ন সামগ্রী নিয়ন্ত্রণরেখা পার করে ভারতে পাঠাত জঙ্গি সংগঠনগুলি। কম দামের এই হেক্সাকপ্টার খোলা বাজারে খুব সহজেই পাওয়া যায়। ফলে স্থানীয় জঙ্গিরা সেরকমই কোনও হেক্সাকপ্টার ব্যবহার করে এই হামলা চালিয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। যা চিন্তা বাড়াচ্ছে নিরাপত্তাবাহিনীর। কারণ ভবিষ্যতেও এই একই ধাঁচে হামলা চালানোর পরিকল্পনা করতে পারে জঙ্গি সংগঠনগুলি।