কাশ্মীরি যুবকদের মধ্যে জঙ্গিদলে যোগদানের প্রবণতা কমছে। যা এক 'বিরাট সাফল্য' বলেই মনে করছে সংশ্লিষ্ট প্রশাসন। জম্মু ও কাশ্মীর পুলিশের পেশ করা তথ্য অনুসারে, চলতি বছর (২০২৪) কাশ্মীরের মাত্র সাতজন যুবক সন্ত্রাসবাদী সংগঠনের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েছেন।
আরও লক্ষ্যণীয় বিষয় হল, শ্রীনগর জেলা থেকে একজনকেও জঙ্গিরা মগজধোলাই করে নিজের সংগঠনে যোগ দেওয়াতে পারেনি। যে সাত যুবক এবছর জঙ্গি সংগঠনে নাম লিখেছেন বলে জানা গিয়েছে, তাঁরা মূলত দক্ষিণ কাশ্মীরের বাসিন্দা।
স্থানীয় প্রশাসনের আধিকারিকরা জানিয়েছেন, শ্রীনগর জেলা থেকে একজন তরুণও এবছর সন্ত্রাসবাদীদের সংগঠনে যোগদান করেননি। এবং এই মুহূর্তে এই জেলায় কোনও স্থানীয় জঙ্গি সক্রিয় নেই।
স্থানীয় প্রশাসনের এক আধিকারিক এই প্রসঙ্গে বলেন, 'জেলায় কোনও স্থানীয় সন্ত্রাসবাদী সক্রিয় নেই। এবং এবছর শ্রীনগর থেকে একজন তরুণও কোনও জঙ্গি সংগঠনের সদস্যপদ গ্রহণ করেননি। যা অত্যন্ত ভালো খবর। এলাকার যুবসমাজ ধীরে ধীরে সন্ত্রাসবাদীদের দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে। এটা খুবই ভালো লক্ষণ।'
তবে, একইসঙ্গে প্রশাসনের আধিকারিকরা এও স্বীকার করেছেন যে শ্রীনগর কাশ্মীরের অন্যান্য অংশে 'হাইব্রিড জঙ্গি'রা সক্রিয় রয়েছে। হাইব্রিড জঙ্গি তাদেরই বলা হয়, যারা হয় পুলিশের ব়্যাডারে রয়েছে, অথবা যাদের নাম পুলিশের খাতায় রয়েছে।
সন্ত্রাসদমন বাহিনীর সঙ্গে যুক্ত এক আধিকারিক এই প্রসঙ্গে বলেন, 'শ্রীনগর বা অন্যান্য এলাকায় কিছু হাইব্রিড জঙ্গি গা-ঢাকা দিয়ে থাকতে পারে। সেই সম্ভাবনা রয়েছে। তারা যখনই কোনও অপকর্ম করবে বা কোনও অ্যাকশনে অংশ নেবে, সঙ্গে সঙ্গে সামনে চলে আসবে।'
প্রশাসনের আরও আশঙ্কা, স্থানীয় সন্ত্রাসবাদীরা ছাড়াও প্রায় ৫০ জন বিদেশি জঙ্গি কাশ্মীর, কিশতওয়ার এবং ডোডা এলাকায় সক্রিয় থাকতে পারে। যেহেতু বাহিনী ঘন ঘন অভিযান চালাচ্ছে, তাই সেই অনুসারে এইসব জঙ্গিরাও বারবার নিজেদের অবস্থান বদল করে।
প্রশাসনের আধিকারিকরা বলছেন, বিদেশি জঙ্গিরা যেসমস্ত এলাকায় সক্রিয় থাকতে পারে, সেগুলি হল - দক্ষিণ কাশ্মীরের কুপওয়ারা এবং কাশ্মীরের বান্দিপোরা।
আধিকারিকরা আরও একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয় সামনে এনেছেন। তা হল - এই মুহূর্তে কাশ্মীরে মোট যত পরিমাণ স্থানীয় সন্ত্রাসবাদী সক্রিয় রয়েছে, তাদের সংখ্যা - এক অঙ্কের (সর্বাধিক ৯) থেকে বেশি হবে না। কারণ, বৃহস্পতিবারই কাশ্মীরে জঙ্গি দমন অভিযানে পাঁচ সন্ত্রাসবাদীকে খতম করা হয়েছে। তাদের মধ্যে এমন একজনও ছিল, যে বাকিদের তুলনায় অনেক সময় ধরে কাশ্মীরে সন্ত্রাসবাদের সঙ্গে যুক্ত ছিল।