'আজ থেকেই শুরু হল অন্তর্বর্তী সরকারের দ্বিতীয় অধ্যায়!' শনিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫) বাংলাদেশের নবগঠিত 'জাতীয় ঐকমত্য কমিশন'-এর সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলির বৈঠকে নাকি একথা বলেছেন কেয়ারটেকার সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মহম্মদ ইউনুস।
পূর্ব নির্ধারিত সূচি ও নির্ঘণ্ট মেনে এদিন বিকেল ৩টে (স্থানীয় সময় অনুসারে) থেকে, ঢাকার ফরেন সার্ভিস অ্যাকাডেমিতে শুরু হয় এই বৈঠক। বাংলাদেশি বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুসারে, সেই বৈঠকে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সভাপতি ইউনুস বলেন, 'প্রথম ছ'মাসে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রথম ইনিংস বা প্রথম অধ্যায় শেষ হয়েছে। আজ, রাজনৈতিক আলোচনার মাধ্যমে দ্বিতীয় অধ্যায় শুরু হল।'
শেষ পাওয়া খবর অনুসারে, এদিনের এই বৈঠক এখনও চলছে। তবে, মাঝে নমাজ পড়ার জন্য কিছুক্ষণের বিরতি ঘোষণা করা হয়। সেই ফাঁকেই সংবাদমাধ্যমের কাছে মহম্মদ ইউনুসের করা ওই মন্তব্য পৌঁছে দেন তাঁর প্রেস সচিব শফিকুল আলম। তাঁর কথায়, 'আজ একটি ঐতিহাসিক দিন। আজ জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলির আলোচনা শুরু হয়েছে। বলা যায়, এটি একটি প্রস্তুতিমূলক সভা।'
বাংলাদেশি বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, এদিনের এই আলোচনা সভায় প্রায় ২৬টি রাজনৈতিক দল এবং তাদের প্রায় ১০০ জন নেতা অংশগ্রহণ করছেন।
তাঁদের মধ্যে রয়েছেন - বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, সংশ্লিষ্ট স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, সালাহউদ্দিন আহমেদ, মেজর (অবসরপ্রাপ্ত) হাফিজউদ্দিন আহমেদ, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামির সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিঞা গোলাম পরওয়ার, লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) চেয়ারম্যান কর্নেল (অবসরপ্রাপ্ত) অলি আহমদ, নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, জাতীয় পার্টির (জাফর) মোস্তফা জামাল হালদার, বিজেপির চেয়ারম্যান আন্দালিব রহমান পার্থ, বাংলাদেশ এলডিপির চেয়ারম্যান শাহাদাত হোসেম সেলিম, ইসলামি আন্দোলন বাংলাদেশের প্রেসিডিয়াম সদস্য সৈয়দ মোহাম্মদ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানি, এবি পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু, গণ-অধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নূর, গণ ফোরামের প্রেসিডিয়াম সদস্য সুব্রত চৌধুরী-সহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা।
প্রসঙ্গত, এর আগে গত বুধবার সাত সদস্যের জাতীয় ঐকমত্য কমিশন গঠন করার কথা ঘোষণা করে ইউনুসের সরকার। যার সভাপতি পদে রয়েছেন ইউনুস নিজেই। এবং সহ-সভাপতি করা হয়েছে সম্প্রতি গঠিত সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রধান অধ্যাপক ড.আলি রিয়াজকে।
উল্লেখ্য, হাসিনা সরকারের পতনের পর বাংলাদেশের নির্বাচন প্রক্রিয়া, পুলিশ প্রশাসন ও বিচার বিভাগ, জন প্রশাসন বিভাগ, সংবিধান ও দুর্নীতি দমন বিভাগের সংস্কার সাধন করার লক্ষ্যে একাধিক কমিশন গঠন করে মহম্মদ ইউনুসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার।
এই কমিশনগুলির কাজ হল - তাদের নিজ নিজ ক্ষেত্রগুলিতে সংস্কার সংক্রান্ত সুপারিশ পেশ করা। যা সমস্ত রাজনৈতিক দল ও সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে তবেই কার্যকর করা হবে। এই প্রক্রিয়াকে বলা হচ্ছে জাতীয় ঐকমত্য গঠন। এক্ষেত্রে যে কমিশন অন্যান্য কমিশনের সুপারিশগুলি নিয়ে বাকিদের সঙ্গে আলোচনা করবে, সেটিই হল এই সাত সদস্যের জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। আপাতত যার কার্যকালের মেয়াদ ৬ মাস।