বিজেপি শাসিত অসমে বিধানসভার চলতি অধিবেশনে শুক্রবারের জুম্মার নমাজ পাঠের প্রচলিত দু'ঘণ্টার বিরতি তুলে দেওয়া হয়েছে। অসম বিধানসভায় সর্বসম্মতিক্রমে এনিয়ে একটি প্রস্তাব পাশ হয়েছে। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা সোশ্যাল মিডিয়ায় এই ঘোষণা করেন। এই সিদ্ধান্তের পরেই সমালোচনায় সরব হয়েছে বিরোধীরা। আর হিমন্ত সরকারের তীব্র সমালোচনা করল কেন্দ্রের এনডিএ সরকারের শরিক দল জনতা দল ইউনাইটেডের (জেডিইউ) এক নেতা। নীরজ কুমার নামে ওই নেতা অসম সরকারের এই সিদ্ধান্তের সমালোচনা করেছেন।
আরও পড়ুন: হিমন্তকে ‘যোগীর চাইনিজ ভার্সান’ কটাক্ষ তেজস্বীর! পাল্টা লালু-পুত্রকে তোপ BJPর
জেডিইউ নেতা দাবি করেছেন, হিন্দু ও মুসলিম বিধায়কদের সর্বসম্মতিক্রমে নেওয়া এই সিদ্ধান্তটি ধর্মীয় বিশ্বাসকে ক্ষুণ্ন করে। সেই সঙ্গে তিনি পরামর্শ দিয়েছেন, অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মার এসবের পরিবর্তে দারিদ্র্য দূর করা এবং বন্যা প্রতিরোধের মতো বিষয়গুলিতে মনোনিবেশ করা উচিত।
তিনি এখানেই থেমে থাকেননি। আরও বলেন, ‘মুখ্যমন্ত্রী যে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তা দেশের সংবিধানের মূল নীতির বিরোধী। প্রতিটি ধর্মীয় বিশ্বাসের নিজস্ব ঐতিহ্য সংরক্ষণের অধিকার রয়েছে। আমি মুখ্যমন্ত্রী শর্মাকে জিজ্ঞেস করতে চাই, আপনি রমজানের, শুক্রবারের ছুটিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করছেন এবং দাবি করছেন যে এরফলে কাজের দক্ষতা বাড়বে। হিন্দু ঐতিহ্যের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ হল মা কামাখ্যা মন্দির। আপনি কি সেখানে বলিদানের প্রথা নিষিদ্ধ করতে পারবেন?’
এর মন্তব্যের পালটা প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা। তিনি বলেছেন, ‘হিন্দু ও মুসলিম বিধায়করা মিলিতভাবে এই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছে। আমাদের বিধানসভার হিন্দু ও মুসলিমরা বিধায়কের রুলিং কমিটিতে বসে এবং সর্বসম্মতিক্রমে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যে দু ঘণ্টা বিরতি ঠিক নয়। আমাদের এই সময়ের মধ্যেও কাজ করা উচিত। এই প্রথাটি ১৯৩৭ সালে শুরু হয়েছিল এবং গতকাল থেকে বন্ধ করা হয়েছে।’
প্রসঙ্গত, ১৯৩৭ সালে অসম বিধানসভায় এই নিয়ম চালু করেছিল মুসলিম লিগ। সেইসময় থেকেই রাজ্যের মুসলিম বিধায়করা প্রতি জুম্মার দিন দুপুর ১২টা থেকে ২টো পর্যন্ত নামাজ পড়ার জন্য বিরতি পেতেন। নতুন নিয়ম অনুযায়ী, এখন জুম্মার নামাজ পড়ার জন্য আর কোনও বিরতি থাকবে না। বিধানসভায় কাজ জারি থাকবে। সংশোধিত নিয়ম অনুযায়ী, অসম বিধানসভা শুক্রবার সহ প্রতিদিন সকাল সাড়ে ৯ টায় কাজ শুরু করবে।