মেয়েদের বিয়ের বয়সসীমা ১৮ থেকে বাড়িয়ে ২১ বছর করা নিয়ে কেন্দ্রের সিদ্ধান্তের চরম বিরোধিতায় নামলেন ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেন। সোমবার সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে, তিনি নানান প্রশ্নের জবাব দেন। সেই সময়ই কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্তের প্রসঙ্গ ওঠে। ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী সাফ বলেন, বিয়ের বয়সের সীমা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত সম্পূর্ণ রাজনৈতিক। যখন লিভ-ইনের ক্ষেত্রে মান্যতা দেওয়া হচ্ছে, তখন এই সিদ্ধান্তের নেপথ্যের যুক্তি নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।
সোমবার ঝড়খণ্ড সরকারের দ্বিতীয় বছর পূর্তি অনুষ্ঠানে নিজের বাসভবনে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন হেমন্ত। সেই সময় বিয়ের বয়সসীমা ইস্যু ছাড়াও বর্ণভিত্তিক আদমশুমারি নিয়ে প্রশ্ন ওঠে মুখ্য়মন্ত্রীর সামনে। মুখ্যমন্ত্রী ইঙ্গিত দিয়েছেন, যে তাঁর সরকার শীঘ্রই ঝাড়খণ্ডেও বর্ণভিত্তিক আদমশুমারি আয়োজনে বিহারের নীতি পথ অনুসরণ করতে পারে। এবিষয়ে কথা বলতে গিয়ে তিনি বলেন, 'মনে হচ্ছে কেউ আমাদের অইডিয়া ওঁদের কাছে (নীতীশ কুমার শিবির) ফাঁস করে দিয়েছে।' উল্লেখ্য, ঝাড়খণ্ডে ভোটের আগে ২৭ শতাংশ সংরক্ষণ অনঅগ্রসর শ্রেণির মানুষকে (ওবিসি) দেওয়া হবে বলে প্রতিশ্রুতি দেয় হেমন্তের পার্টি ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চা। সেই প্রসঙ্গে হেমন্ত বলেন, তাঁর সরকার বর্ণভিত্তিক আদমশুমারি শুরু করতে চায় রাজ্যে। এর আগে বিহার জানিয়েছিল যে, সেরাজ্য নিজের খরচে এই আদমশুমারি করতে চায়। একই দাবি তুলে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের সঙ্গে দেখা করেন ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেনও।
এদিকে, মহিলাদের বিয়ের বয়স সীমা প্রসঙ্গে মুখ খুলে ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী বলেন, 'এখন মেয়েদের বয়সসীমা ১৮ থেকে বাড়িয়ে ২১ করা হয়েছে। এরপর কী? এই বয়স ৩০ থেকে বাড়িয়ে ৩৫ করা হবে? আসল প্রশ্ন হল, এমন সিদ্ধান্তের নেপথ্যে কেন্দ্রের কোন ভাবনা রয়েছে?' হেমন্ত সোরেন বলেন, যেখানে লিভ ইনকে মান্যতা দেওয়া হচ্ছে, সেখানে এই ধরনের সিদ্ধান্ত সম্পূর্ণ রূপে রাজনৈতিক। এদিকে, হেমন্তের এমন বক্তব্য ঘিরে কটাক্ষের সুরে বিজেপি দাবি করেছে, আসাদউদ্দিন ওয়েইসির দেখানো রাস্তায় হাঁটছেন হেমন্ত। বিজেপি নেতা প্রতুল সহদেও জানিয়েছেন, 'যদি বিয়ের বয়সের আগে বিয়ের ঘটনা ঘটেই যায়, তাহলে সরকারের উচিত তা রোখা।' পাশাপাশি তাঁর দাবি, যাতে মহিলাদের কেরিয়ার ভালো হয়, তাঁরা সুপ্রতিষ্ঠিত হতে পারেন, সেই কথা ভেবেই এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চাকে কটাক্ষ করে প্রতুল সহদেও বলেন, 'যেখানে একদিকে উনি (হেমন্ত সোরেন) প্রগতিশীল সমাজের কথা বলছেন, সেখানে আবার আসাউদ্দিনের লাইনে কথা বলছেন।'