জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের (জেএনইউ) ‘নারীবিদ্বেষী’ বিজ্ঞপ্তি প্রত্যাহার করা হোক। এমনই দাবি তুললেন জাতীয় মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন রেখা শর্মা। যে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছিল, যৌন হেনস্থা রুখতে পুরুষ বন্ধুদের সঙ্গে সম্পর্কের ক্ষেত্রে কীভাবে ‘নির্দিষ্ট’ রেখা টানতে হবে, তা মেয়েদের জানতে হবে।
মঙ্গলবার টুইটারে জাতীয় মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন বলেন, 'সবসময় কেন শুধু মেয়েদের শিক্ষা দেওয়া হয়? এবার নির্যাতিত নয়, হেনস্থাকারীদের শেখানোর সময় এসে গিয়েছে। জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের নারীবিদ্বেষী নির্দেশিকা প্রত্যাহার করতে হবে। নির্যাতিতদের পক্ষে অভ্যন্তরীণ কমিটির (জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ অভিযোগ সংক্রান্ত কমিটি বা আইসিসি) দৃষ্টিভঙ্গি থাকা উচিত।'
সম্প্রতি জেএনইউয়ের অভ্যন্তরীণ অভিযোগ সংক্রান্ত কমিটির তরফে একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। তাতে জানানো হয়, নয়া বছরের ১৭ জানুয়ারি যৌন হেনস্থার উপর একটি কাউন্সেলিং সেশনের আয়োজন করা হয়েছে। যা এবার থেকে প্রতি মাস হবে এবং পড়ুয়াদের যৌন হেনস্থার বিরুদ্ধে অবহিত করবে বলে বিজ্ঞপ্তিতে দাবি করা হয়। সেই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘আইসিসি এমন কয়েকটি ঘটনার সম্মুখীন হয়েছে, যেখানে দেখা গিয়েছে যে কাছের বন্ধুদের মধ্যে যৌন হেনস্থার ঘটনা ঘটেছে। বন্ধুত্বপূর্ণ আড্ডা এবং যৌন হেনস্থার মধ্যে যে সূক্ষ্ম রেখা রয়েছে, তা সাধারণত ছেলেরা অতিক্রম করে যায় (কখনও ইচ্ছাকৃতভাবে, কখনও অসাবধানতাবশত)। এরকম কোনও হেনস্থা রুখতে মেয়েদের জানা উচিত যে (তাঁদের এবং পুরুষ বন্ধুদের) মধ্যে কীভাবে নির্দিষ্ট রেখা টানতে হবে।’
বিজ্ঞপ্তির সেই অংশ ঘিরে তুমুল বিতর্ক তৈরি হয়। যৌন হয়রানির দায় প্রকারান্তরে মেয়েদের উপর চাপিয়ে দেওয়ায় ক্ষোভপ্রকাশ করেন পড়ুয়া এবং শিক্ষক-শিক্ষিকাদের একাংশ। সেই বিতর্কের মধ্যেই জেএনইউয়ের অভ্যন্তরীণ অভিযোগ সংক্রান্ত কমিটির প্রিসাইডিং অফিয়ার তথা অধ্যাপক পুনম কুমারী বলেন, 'প্রত্যেকেরই নিজস্ব দৃষ্টিভঙ্গি আছে। তাঁরা কীভাবে কোনও বিষয়কে দেখবেন, তা প্রত্যেকের আলাদা হয়। তাঁরা কাউন্সেলিং সেশনকে ইতিবাচক দিক থেকে দেখতে পারেন এবং মনে করতে পারেন যে এরকম কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে।'