উত্তরপ্রদেশের হাথরাসে পদপিষ্ট হয়ে শতাধিক মানুষের মৃত্যুর ঘটনা কদিন আগেই গোটা দেশে আলোড়ন ফেলে দিয়েছিল। যোগী রাজ্যের এই ঘটনার পর উঠে এসেছিল স্বঘোষিত ‘ভোলে বাবা’র নাম। এই ঘটনার পর থেকে তিনি নিখোঁজ ছিলেন। যাঁর আসল নাম সূরয পাল। অবশেষে এবার তিনি আত্মপ্রকাশ করলেন মানুষের সামনে। আর বিস্তর অজুহাত খাঁড়া করলেন। অথচ এই হাথরাসে পদপিষ্ট হয়ে মারা গিয়েছিল ১২১ জন মানুষ। গত ২ জুলাই পদপিষ্ট হয়ে মৃত্যুর খবর সামনে এসেছিল। নেমেছিল শুধু হাহাকার।
এদিকে এত মানুষের মৃত্যুর পর প্রথমে ভোলে বাবা ওরফে সূরয পাল নিখোঁজ ছিলেন। আর যখন প্রকাশ্যে এলেন তখন দার্শনিক তত্ত্ব আউড়ালেন। কিন্তু মৃত মানুষজনের পরিবারের সদস্যদের ক্ষতে প্রলেপ পড়ল না। সংবাদসংস্থা এএনআই–কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ভোলে বাবা বলেন, ‘আমি অত্যন্ত দুঃখিত ২ জুলাইয়ের দুর্ঘটনায়। কিন্তু যা ঘটতে বাধ্য তা কে থামাতে পারে? যে এসেছে তাকে একদিন না একদিন যেতেই হবে।’ এই মন্তব্য নিয়ে এখন জোর চর্চা শুরু হয়েছে। কারণ এটা কোনও কথা হতে পারে না এত বড় দুর্ঘটনায় এতজনের প্রাণ যাবার পরে।
আরও পড়ুন: রথের মেলায় দেদার ‘মোমো’ খেয়ে হাসপাতালে ভর্তি প্রায় ৫০ জন, দেখতে গেলেন মন্ত্রী অখিল
অন্যদিকে এই দুর্ঘটনা নিয়ে যে এফআইআর হয়েছে তাতে ভোলে বাবা ওরফে সূরয পালের নাম নেই। এই দুর্ঘটনার পিছনে ষড়যন্ত্র আছে বলে অভিযোগ ভোলে বাবার। আর তাঁর বক্তব্য, ‘আমার আইনজীবী ড. এপি সিং এবং প্রত্যক্ষদর্শীরা আমাকে বিষাক্ত স্প্রে’র বিষয়ে জানিয়েছে। এটা সত্যি যে এখানে কোনও একটা ষড়যন্ত্র করা হয়েছে। তবে আমাদের বিশ্বাস আছে সিট এবং বিচারব্যবস্থার উপর। সত্য বেরিয়ে আসবেই। এখন আমি নিজের জন্মস্থান বাহাদুর নগর কাসগঞ্জে আছি।’ এই ভোলে বাবার আইনজীবী দাবি করেছেন, কয়েকজন অজ্ঞাতপরিচয়ের ব্যক্তি বিষাক্ত স্প্রে ছড়িয়ে দেওয়াতেই পদপিষ্টের ঘটনা ঘটেছে।
এই ঘটনা নিয়ে যখন সারা দেশজুড়ে আলোড়ন ছড়িয়ে পড়েছে তখন সামনে এল এই বিষাক্ত স্প্রে’র কাহিনী। ভোলে বাবার আইনজীবী ড. এপি সিংয়ের কথায়, ‘আমার কাছে প্রত্যক্ষদর্শীরা এসে বলেছেন, ১৫–১৬ জন ব্যক্তি ক্যান নিয়ে এসে জনবহুল পথে খুলে দেয়। আর তাতেই ছিল বিষাক্ত বস্তু। আমি ময়নাতদন্তের রিপোর্টও দেখেছি। তাতে দেখা যাচ্ছে, আহত হয়ে মৃত্যু ঘটেনি। বরং শ্বাস বন্ধ হয়ে মৃত্যু হয়েছে।’ এই দুর্ঘটনায় এত মানুষের মৃত্যুর জেরে আয়োজক দেবপ্রকাশ মধুকর গ্রেফতার হয়েছেন। উত্তরপ্রদেশ সরকার এই ঘটনায় সিট গঠন করে।