কোয়াড বৈঠকের ফাঁকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর অটোগ্রাফ চেয়ে বসলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। জানা গিয়েছে কোয়াডের বৈঠকের সময় চার দেশের রাষ্ট্রনেতারা যখন আলোচনা করছিলেন, তখন মোদীর জনপ্রিয়তা নিয়ে মুখ খোলেন জো বাইডেন। বাইডেন জানান, মোদীর অনুষ্ঠানে এত সংখ্যক বিশিষ্ট ব্যক্তি অংশগ্রহণ করতে চান, যে তা সামাল দিতে তাঁকে রীতিমতো নাজেহাল হতে হয়। এরপর অস্ট্রেলিয়ান প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি অ্যালবানিজও জানান, সিডনিতে ২০ হাজার আসন বিশিষ্ট হলে মোদীর একটি অনুষ্ঠান হওয়ার কথা। সেখানে অংশ নেওয়ার জন্য এত মানুষ তাঁর কাছে আবেদন জানাচ্ছে যে তিনি সবাইকে সন্তুষ্ট করতে পারছেন না। এরপরই নাকি প্রধানমন্ত্রী মোদীর থেকে অটোগ্রাফ চান প্রেসিডেন্ট বাইডেন।
রিপোর্ট অনুযায়ী, মোদীর জনপ্রিয়তার প্রসঙ্গ তুলে জো বাইডেন তাঁকে বলেন, 'আপনি গোটা বিশ্বে এটা প্রমাণ করছেন যে গণতন্ত্রের দাম কতটা।' বাইডেন নাকি মজার ছলে এও বলেন, 'আপনি আমার জন্য সমস্যা তৈরি করে দিয়েছেন। পরের মাসে ওয়াশিংটনে আমরা আপনার সম্মানে একটি ডিনার পার্টির আয়োজন করব। সেই পার্টিতে গোটা দেশের সবাই যেন আসতে চাইছেন। আমাদের টিকিট শেষ হয়ে গিয়েছে। তবে টিকিটের চাহিদা শেষ হয়নি। আপনার মনে হচ্ছে আমি মজা করছি? তাহলে আমার দলকে জিজ্ঞেস করতে পারেন। আমি এমন সব মানুষের থেকে ফোন পাচ্ছি যাদের সঙ্গে আগে জীবনে কথা হয়নি আমার। সিনেমার অভিনেতা থেকে শুরু করে আমার আত্মীয়রা ফোন করে ডিনার পার্টির টিকিট চাইছেন। আপনি খুব বেশি জনপ্রিয়। আপনি অনেক কিছুর ওপরই বিস্তর প্রভাব ফেলেছেন। আমরা কোয়াডে যা করছি, তার ওপও আপনার প্রভাব অপরিসীম। আপনি পরিবেশ সংক্রান্ত ইস্যুতে মনোভাব বদলেছেন সবার। ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলেও আপনার প্রভাব রয়েছে।'
এদিকে মোদী পরবর্তী কোয়াড সম্মেলন ভারতে আয়োজনের আগ্রহ জানান। বৈঠকে মোদী বলেন. 'আমরা ২০২৪ সালের কোয়াড সম্মেলন করতে পারলে খুশি হব। বিশ্ব শান্তি এবং উন্নয়নের জন্য কোয়াড কাজ করতে থাকবে।' প্রসঙ্গত, কোয়াডের বৈঠক অস্ট্রেলিয়াতে হওয়ার কথা ছিল। তবে দেশের অর্থনৈতিক সংকটের আবহে অস্ট্রেলিয়া সফর বাতিল করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। এই পরিস্থিতিতে জাপানে জি৭ বৈঠকের ফাঁকেই কোয়াডের বৈঠকে বসেন ভারত, আমেরিকা, জাপান এবং অস্ট্রেলিয়ার রাষ্ট্রনেতারা।
এদিকে কোয়াড বৈঠকের আগেও জি৭ সম্মেলনে যোগ দিয়েছিলেন মোদী। সেখানেও বাইডেনের সঙ্গে তাঁর রসায়ন চোখে পড়েছিল সবার। জি৭ বৈঠকের মাঝে বাইডেন ও মোদীকে আলিঙ্গন করতে দেখা গিয়েছিল। এদিকে জাপানের হিরোশিমায় জি৭ বৈঠকের ফাঁকে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সঙ্গেও বৈঠক করেন মোদী। ২০২২ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি রাশিয়া ইউক্রেনের ওপর হামলার পর এই প্রথম দুই রাষ্ট্রনেতা মুখোমুখি বৈঠকে বসেন। জেলেনস্কি ছাড়াও আরও দেশের প্রধানদের সঙ্গে একান্তে সাক্ষাৎ করেন মোদী। জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদার সঙ্গে তাঁৎ প্রায় ৫০ মিনিটের বৈঠক হয়। এছাড়াও রাষ্ট্রসংঘের মহাসচিব, ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের প্রেসিডেন্ট, ইন্দোনেশিয়ার রাষ্ট্রপতি, জার্মানির চ্যান্সেলার, দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট, ভিয়েতনামের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেন। এছাড়াও জাপানের বেশ কয়েকজন বিশিষ্ট ব্যক্তিত্বের সঙ্গেও দেখা করেন মোদী।