বিদায়বেলায় প্রায় ১,৫০০ জনকে ক্ষমা করে দিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। তাঁদের মধ্য়ে চারজন ভারতীয় বংশোদ্ভূত মার্কিন নাগরিক। বৃহস্পতিবার সংশ্লিষ্ট আবেদনকারীদের ক্ষমাপ্রার্থনা মঞ্জুর করেছেন জো বাইডেন।
সেই তালিকায় যে চারজন ভারতীয় বংশোদ্ভূত মার্কিন নাগরিক রয়েছেন, তাঁরা হলেন - মীরা সচদেব, বাবুভাই প্যাটেল, কৃষ্ণা মোটে এবং বিক্রম দত্ত।
তথ্য বলছে, সাম্প্রতিক অতীতে কোনও মার্কিন প্রেসিডেন্ট একদিনে একসঙ্গে এত জনের ক্ষমা প্রার্থনা মঞ্জুর করেননি।
ওই দিন যে চারজন ভারতীয় বংশোদ্ভূত মার্কিন নাগরিককে বাইডেন ক্ষমা করেছেন, তাঁরা সকলেই এত দিন ধরে কারাবাস ভোগ করছিলেন। তাঁরা মূলত প্রতারণা ও মাদক বিলির অপরাধের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন বলেও জানা গিয়েছে।
সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত বিভিন্ন প্রতিবেদন অনুসারে, ২০১২ সালের ডিসেম্বর মাসে ডা. মীরা সচদেবকে ২০ বছরের কারাবাসের শাস্তি দেওয়া হয়। তিনি একটি ক্যান্সার চিকিৎসাকেন্দ্রে বিপুল অঙ্কের আর্থিক প্রতারণা করেছিলেন। বর্তমানে তাঁর বয়স ৬৩ বছর।
বাবুভাই প্য়াটেলকে ১৭ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছিল ২০১৩ সালে। তিনি প্রতারণামূলক চক্রান্ত, মাদকের কারবার এবং ড্রাগ আইন লঙ্ঘন করার অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত হয়েছিলেন।
ওই একই বছর কৃষ্ণা মোটেকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছিল। তাঁর বিরুদ্ধে বিপুল পরিমাণ মাদক বিলি করার অভিযোগ সঠিক বলে প্রমাণিত হয় এবং আদালত তাঁকে দোষী সাব্যস্ত করে। বর্তমানে এই ব্যক্তির বয়স ৫৪ বছর।
এছাড়াও, ২০১২ সালেই বিক্রম দত্তকে ২৩৫ মাস কারাবাসের সাজা শুনিয়েছিল ম্যানহ্যাটনের একটি আদালত। তাঁর একটি সুগন্ধীর ব্যবসা ছিল। সেই ব্যবসার আড়ালেই মাদকের কারবার খুলে বসেছিলেন বিক্রম। মূলত, মেক্সিকোর একটি মাদক চক্রের জন্য কাজ করতেন তিনি। বর্তমানে তাঁর বয়স ৬৩ বছর।
কিন্তু, হঠাৎ করে কেন এতজন দোষী সাব্যস্ত হওয়া ব্যক্তিকে ক্ষমা করার সিদ্ধান্ত নিলেন জো বাইডেন? তার উত্তরও নিজেই দিয়েছেন তিনি।
বাইডেন তাঁর বিবৃতিতে জানিয়েছেন, 'আমেরিকা সকলকেই দ্বিতীয়বার সুযোগ দেওয়ায় বিশ্বাসী। এই বিশ্বাসের উপরেই আমেরিকা গড়ে উঠেছে।'
বাইডেন আরও জানিয়েছেন, যে ব্যক্তিরা ইতিমধ্যেই তাঁদের অপরাধের জন্য সাজা ভোগ করেছেন এবং আন্তরিকভাবে সমাজের মূল স্রোতে ফিরে আসতে চাইছেন, সেই মানুষগুলির ক্ষমা প্রার্থনার আবেদন মঞ্জুর করতে পারায় প্রেসিডেন্ট হিসাবে তিনি নিজেকে ধন্য মনে করছেন।
এক্ষেত্রে প্রেসিডেন্ট মূলত সেই ব্যক্তিদেরই আবেদন মঞ্জুর করেছেন, যাঁরা সরাসরি কোনও হিংসা ছড়াননি।