'ডুবন্ত' জোশীমঠে নতুন করে ধসের আতঙ্ক দেখা দিল। সোমবার নতুন করে আরও ৬৮টি বাড়িতে ফাটল দেখা দিয়েছে। এই আবহে বিপজ্জনক বাড়িগুলিকে চিহ্নিত করে বাসিন্দাদের দ্রুত নিরাপদ স্থানে নিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন সেরাজ্যের মুখ্যসচিব এসএস সান্ধু। এখনও পর্যন্ত সরকারি হিসেব অনুযায়ী সোমবারের আগে পর্যন্ত ৬০৩টি বাড়িতে ফাটল দেখা দিয়েছে জোশীমঠে। সোমবার সেই সংখ্যাটা আরও বেড়েছে। এই আবহে উত্তরাখণ্ডের মুখ্যসচিব সান্ধু বলেছেন, 'জোশীমঠে জমির তলদেশ সরে যাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে প্রতি মিনিট আমাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ক্ষতিগ্রস্থ এলাকায় বসবাসকারী লোকজনকে অবিলম্বে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়ে যেতে হবে।' তিনি আরও নির্দেশ দিয়েছেন, 'যেসব ভবনে ফাটল ধরেছে এবং জরাজীর্ণ হয়ে গিয়েছে, সেগুলিকে অবিলম্বে ভেঙে ফেলতে হবে যাতে সেগুলি কারও কোনও ক্ষতি না করতে পারে।' (আরও পড়ুন: জোশীমঠে কেন এই ভয়ানক ভূমিধস? কী হবে হাজার হাজার মানুষের?)
জেলা প্রশাসনকে পানীয় জলের ব্যবস্থা করার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যসচিব। তিনি বলেন, 'জোশীমঠের ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় ভাঙা পানীয় জলের লাইন, নর্দমা এবং বিদ্যুতের লাইনগুলি দ্রুত মেরামত করতে হবে।' তিনি নির্দেশ দিয়েছেন, আধিকারিকদের জোশীমঠে উপস্থিত থাকতে হবে এবং পরিস্থিতির উপর নজর রাখতে হবে। তাঁদের নিশ্চিত করতে হবে যাতে কোনও প্রাণহানী না হয় বা সম্পত্তির ক্ষতি না হয়। কর্মকর্তাদের সোমবার থেকেই ভূমিধস রোধে কাজ শুরু করতে বলেছিলেন মুখ্যসচিব। হেলিকপ্টারে করে বিশেষজ্ঞদের আনার ব্যবস্থা করতে বলেছেন তিনি। বিপর্যয় মোকাবিলা আইন, ২০০৫-এর ৩৩ এবং ৩৪ নং ধারার অধীনে এলাকাটি খালি করার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। এদিকে জেলা প্রশাসনের আধিকারিকদের মতে, তাঁরা ভূমিধসে ক্ষতিগ্রস্থ বাড়িগুলি চিহ্নিত করছেন এবং ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলিকে সাময়িকভাবে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
সরকারি আধিকারিকদের মতে, ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারগুলিকে তাদের প্রয়োজনীয়তা অনুসারে খাদ্য কিট এবং কম্বল বিতরণ করা হয়েছে। অতিরিক্তভাবে, পরিবার প্রতি ৫০০০ টাকা করে দেওয়া হয়েছে প্রয়োজনীয় দ্রব্য কেনার জন্য। এখনও পর্যন্ত ৬৮টি পরিবারকে নিরাপদ স্থানে নিয়ে যাওয়া হয়েছে এবং ৪৬টি ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে অর্থ সাহায্য করা হয়েছে বলে জানিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন। জোশীমঠে এই মুহূর্তে প্রশাসনের ৯টি দল কাজ করছে। ৩ থেকে ৪ সদস্য বিশিষ্ট এই দলগুলি বাড়ি বাড়ি ঘুরে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখছে।
দাবি করা হয়, ‘পুরনো ভূমিধ্বসের উপর’ তৈরি হয়েছিল চামোলি জেলার এই শহরটি। এই কারণেই বারবার প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের সম্মুখীন হয় জোশীমঠ। এই আবহে একটি বিশেষজ্ঞের দল গঠন করা হয়েছে রাজ্য সরকারের তরফে। সেই দলটি গিয়ে ফাটল ধরা বাড়িতে গিয়ে সমীক্ষা চালাচ্ছে। নির্বিচারে গাছ কাটা ও পাহাড় কেটে নির্মাণকাজের জেরেই আজ এই পরিস্থিতি বলে মত অনের বিশেষজ্ঞর। কেন্দ্রের তরফেও একটি বিশেষজ্ঞ দল গঠন করা হয়েছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে মোতায়েন করা হয়েছে জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীকে।