মেয়াদ শেষ। আর হাতে গোনা কয়েকটা দিন। এই আভহে ১৬ জানুয়ারি মার্কিন বিদেশ সচিব হিসেবে শেষবারের মতো সাংবাদিক সম্মেলন করেন অ্যান্টনি ব্লিনকেন। আর সেখানেই এক সাংবাদিক তাঁকে অপমান করলেন। 'ক্রিমিনাল' বলে ডাকা হল ব্লিনকেনকে। গাজা নিয়ে বাইডেন প্রশাসনের নীতির সমালোচনাতেই বিদায়ী সেক্রেটারি অফ স্টেটকে এভাবে অপমান করলেন সাংবাদিক। রিপোর্ট অনুযায়ী, ব্লিনকেনকে তোপ দাগা সাংবাদিকের নাম স্যাম হুসেন। ব্লিনকেনকে নিশনা করে স্যাম বলেন, 'ক্রিমিনাল। তোমার জায়গা হ্যাগে (ইন্টারন্যাশনাল কোর্ট অফ জাস্টিসের সদর দফতর এখানে) হওয়া উচিত।' উল্লেখ্য, আন্তর্জাতিক আদালতে ইজরায়েলের বিরুদ্ধে যুদ্ধ অপরাধের মামলা চলছে।
এদিকে মার্কিন নিরাপত্তারক্ষীরা সেই সাংবাদিককে জোর করে কনফারেন্স রুম থেকে বের করে নিয়ে যাওয়ার ঘটনার ভিডিয়ো সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। সেখানে দেখা গিয়েছে, সেই সাংবাদিক প্রথমে তাঁর গায়ে হাত দিতে বারণ করেন নিরাপত্তারক্ষীদের। পরে তাঁকে সেখান থেকে জোর করে নিয়ে যাওয়া হলে তিনি বলতে থাকেন, ‘আমার ব্যথা লাগছে’। তারপরও তাঁকে ছাড়া হয়নি। এরপর ঘর থেকে বেরিয়ে যেতে যেতে তিনি ব্লিনকেনকে তোপ দেগে বলেন, ‘তুমি ক্রিমিনাল। তুমি হ্যাগে কেন নেই… তুমি হ্যাগে কেন নেই?’
এদিকে ব্লিকেনের বিরুদ্ধে সেই সাংবাদিক সরব হতেই তাঁকে সেখান থেকে সরিয়ে নিয়ে যায় নিরাপত্তারক্ষীরা। তবে যাওয়ার সময়ও সেই সাংবাদিক নিজের প্রতিবাদ জারি রেখেছিলেন। এদিকে গতকাল মার্কিন স্টেট ডিপার্টমেন্টের সাংবাদিক সম্মেলনে পদে পদে সাংবাদিকদের প্রশ্নবাণে বিদ্ধ হন ব্লিনকেন। ম্যাক্স ব্লুমেন্থাল নামের এক সাংবাদিক গতকাল ব্লিনকেনকে প্রশ্ন করেন, 'যদি শান্তিচুক্তি আগে থেকেই ছিল, তাহলে গাজায় কেন বোমাবাজি হতে দিল আমেরিকা?'
উল্লেখ্য, গাজা যুদ্ধের আবহে ইজরায়েলকে অস্ত্র সরবরাহ এবং কূটনৈতিক সাহায্য করায় বাইডেন প্রশাসন এবং ব্লিনকেনের সমালোচনা করেছে আমেরিকার একাংশ। গাজায় ইজরায়েলি হামলা শুরুর পর থেকে ওয়াশিংটনে একাধিকবার এই ইস্যুতে অস্বস্তিকর পরিস্থিতিতে পড়তে হয়েছে ব্লিনকেনকে। এদিকে তাঁর ভার্জিনিয়ার বাসভবনের সামনে প্রতিবাদীরা মাসের পর মাস বিক্ষোভ দেখিয়েছেন। ব্লিনকেনের গাড়িতে লাল রং ছুড়ে মেরেছেন তারা।
এদিকে গতকাল সমালোচনার মুখে পড়ে ব্লিনকেন বলেন, 'যুদ্ধে আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করা হয়েছে কি না, তা নিয়ে বহু মামলার তদন্তে নেমেছে ইজরায়েল নিজেরাই। তাদের নিজেস্ব প্রক্রিয়া আছে। তাদের আইন আছে। এটাই একটা গণতন্ত্রের ইতিবাচক লক্ষণ।' এদিকে ব্লিনকেন এই যুদ্ধ নিয়ে আরও বলেন, 'ইজরায়েলি সরকার সেই নীতিতেই চলেছে যা সেখানকার মানুষ চেয়েছেন। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবরের পরে সেখানকার মানুষের মনে যে আতঙ্ক ছিল, তার পরিপ্রেক্ষিতেই আমেরিকাও প্রতিক্রিয়া দিয়েছিল।'