দেবব্রত মোহান্তি
চার বছরের কিছু বেশি সময়। নবীন পট্টনায়ক সরকার ওড়িশার লোকসেবা ভবনে সাংবাদিকদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল। এটাই হল ওড়িশা রাজ্য সরকারে সচিবালয়। সেখানে প্রবেশের ক্ষেত্রে নিষেধ করে দিয়েছিল আগের সরকার। আর এবার বিজেপি সরকার ক্ষমতায় আসার পরেই, মুখ্য়মন্ত্রী হিসাবে শপথ নেওয়ার পরের দিনই মুখ্য়মন্ত্রী মোহন মাঝি সাংবাদিকদের জন্য় দরজা খুলে দিলেন।
লোকসেবা ভবন। এখানে মূলত সরকারের একাধিক অফিস রয়েছে। ২০০০ সালের মার্চ মাসে তৎকালীন বিজেডি সরকার এই সচিবালয়ে সাংবাদিকদের জন্য় দরজা বন্ধ করে দিয়েছিল। কোভিডের সময় থেকে সাংবাদিকদের এই ভবনে প্রবেশ বন্ধ করা হয়েছিল। এরপর দু বছর পরে কেবলমাত্র সরকারি পরিচয়পত্র যুক্ত সাংবাদিকরা এখানে প্রবেশ করতে পারতেন। এদিকে বহু টিভি ও প্রিন্টের সাংবাদিক রয়েছেন যাঁদের কাছে সরকারি কার্ড নেই। সেকারণে তাঁরা সেখানে প্রবেশ করতে পারতেন না। এনিয়ে বার বার বলা হয়েছিল বিরোধীদের তরফেও বলা হয়েছিল সাংবাদিকদের প্রবেশে বাধা দেওয়া ঠিক নয়। কিন্তু তারপরেও শোনেনি তৎকালীন বিজেডি সরকার। সাংবাদিকদের সংগঠনের তরফেও এনিয়ে বলা হয়েছিল। কিন্তু তারপরেও এনিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
তবে বুধবার সন্ধ্যায় মুখ্যমন্ত্রী মোহন মাঝি ও তাঁর মন্ত্রিসভার সদস্যরা শপথ নেওয়ার পরেই সচিবালয়ের দরজা সংস্ত সাংবাদিকের জন্য় খুলে দেওয়া হল। একেবারে খোলা হাওয়া। এরপরই সাংবাদিকদের মধ্য়ে একেবারে খুশির হাওয়া। তাঁদের অনেকেই এনিয়ে উল্লসিত। বিজেপি এবার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল যে তারা ক্ষমতায় এলে সচিবালয়ের দরজা খুলে দেওয়া হবে সাংবাদিকদের জন্য।
এদিক সাংবাদিক রামচন্ডী রানাসিং জানিয়েছেন, এটা অত্যন্ত খারাপ সিদ্ধান্ত ছিল।ফোর্থ এস্টেটে সবসময় সরকারকে লক্ষণরেখা দেখায়। আর ওড়িশার সরকার সাংবাদিকদেরই লক্ষণরেখা দেখিয়েছিল। তাদের স্বাধীনতা কেড়ে নেওয়া হয়েছিল। যেটা ভাবা হয় তার থেকে ভয়াবহ ছিল সেই দমন। আমি খুশি যে বিজেপি তাদের কথা রেখেছে।
এদিকে সাংবাদিকদের প্রবেশের ক্ষেত্রে নানা জায়গায় বিধিনিষেধ আরোপ করেছিল আগের সরকার। ২০২২ সালের জুলাই মাসে তৎকালীন সরকার কিছু জায়গার স্কুলে সাংবাদিকদের প্রবেশের ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিল। সেই সময় স্কুল কর্তৃপক্ষকে বলে দেওয়া হয়েছিল সাংবাদিকদের যেন স্কুলে প্রবেশ করতে দেওয়া না হয়। কারণ তারা দেখিয়ে দিয়েছিল স্কুলের পড়ুয়ারা অঙ্কে কতটা কাঁচা। তারপরই সাংবাদিকদের প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। তবে এবার অন্তত সচিবালয়ে প্রবেশ করতে পারবেন সাংবাদিকরা।