জিলিপি এবং সিঙাড়ার কাছে হার মেনে গেল সব ঝামেলা! মাসকয়েকের তুমুল সংঘাত, গ্লাস ছোড়া, রক্ত ঝরা, সাসপেনশনের পর্ব পেরিয়ে ওয়াকফ বিল (সংশোধনী) বিল নিয়ে গঠিত যৌথ সংসদীয় কমিটির (জেপিসি) সদস্যরা একসঙ্গে সিঙাড়া এবং জিলিপিতে মেতে উঠলেন। চলল হাসি-ঠাট্টার পর্ব, ফোটোসেশন। তারইমধ্যে চেয়ারম্যান জগদম্বিকা পাল জানিয়েছেন, সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভোটে (১৫-১১) কমিটির খসড়া রিপোর্ট এবং প্রস্তাবিত আইনের সংশোধনী গৃহীত হয়েছে। যদিও বিরোধীদের দাবি, সংশোধনী বিলে যে যে প্রস্তাব আছে, তা অসাংবিধানিক। মুসলিমদের ধর্মীয় ব্যাপারে সরকারের হস্তক্ষেপের দরজা খুলে রেখে ওয়াকফ বোর্ডকে ধ্বংস করে দেবে।
বুড়ো আঙুল দেখানো হয়েছে সংবিধানকে, দাবি তৃণমূলের
তৃণমূল কংগ্রেসের অভিযোগ, সংসদীয় রীতিনীতি পুরোপুরি লঙ্ঘন করেছেন যৌথ সংসদীয় কমিটির চেয়ারম্যান। বিরোধীদের অধিকার পুরোপুরি লঙ্ঘিত হয়েছে। বুড়ো আঙুল দেখানো হয়েছে সংবিধানের ১৪ ধারাকে।
একইসুরে শিবসেনা (উদ্ধব ঠাকরে শিবির) সাংসদ অরবিন্দ সাওয়ান্ত দাবি করেছেন যে ন্যায়বিচারের জন্য, রাজনৈতিক স্বার্থ চরিতার্থ করতে সংশোধনী বিল আনা হয়েছে। যা সংবিধানকেও তোয়াক্কা করছে না। এমনকী এটাও বলা হয়েছে যে মুসলিম নন, এমন ব্যক্তিদেরও ওয়াকফ বোর্ডে অন্তর্ভুক্ত করা হবে। সেই পরিস্থিতিতে মন্দিরের নিয়মকানুনের উপরে কী প্রভাব পড়বে ভেবে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন বলে দাবি করেছেন শিবসেনা (উদ্ধব ঠাকরে শিবির) সাংসদ।
ওয়াকফ বোর্ডকে ধ্বংস করে দেবে, দাবি ওয়াইসির
আবার এআইএমআইএম প্রধান তথা হায়দরাবাদের সাংসদ আসাদউদ্দিন ওয়াইসি দাবি করেছেন, প্রস্তাবিত বিলে যে যে সংশোধনী রয়েছে, তা ওয়াকফ বোর্ডের স্বার্থের জন্য খুব একটা ভালো হয়। গত রাতে ৬৫০ পৃষ্ঠার রিপোর্টে স্বাক্ষর করা হয়েছে। ওই স্বল্প সময়ের মধ্যে সেই রিপোর্টের পুরোটা পড়ে ফেলা কার্যত অসম্ভব। সংশোধনী বিলে যা প্রস্তাব আছে, তা ওয়াকফ বোর্ডকে ধ্বংস করে দেবে বলে অভিযোগ করেন হায়দরাবাদের সাংসদ।
বৃহস্পতিতে লোকসভার স্পিকারের কাছে রিপোর্ট জমা পড়বে
যদিও চেয়ারম্যান তথা বর্ষীয়ান বিজেপি সাংসদের বক্তব্য, এমন কয়েকটি সংশোধনীতে অনুমোদন দিয়েছে কমিটি, যা বিরোধী সাংসদদেরও উদ্বেগ দূর করবে। প্রস্তাবিত সংশোধনী বিল যখন আইনে পরিণত হবে, তখন আরও স্বচ্ছতার সঙ্গে ও কার্যকরীভাবে দায়িত্ব পালন করতে পারবে ওয়াকফ বোর্ড।
তিনি জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লার কাছে সেই রিপোর্ট জমা দেবেন। তারপর লোকসভার স্পিকার এবং সংসদ নিম্নকক্ষ ঠিক করবে যে ওই রিপোর্ট নিয়ে কীভাবে এগিয়ে যাওয়া হবে। অর্থাৎ বাজেট সেশনে (আগামী ৩১ জানুয়ারি থেকে শুরু) সেই বিল পাশ করিয়ে নেওয়া হবে কিনা, সে বিষয়ে কিছু জানাননি যৌথ সংসদীয় কমিটির চেয়ারম্যান।