হিজাব মামলায় সুপ্রিম কোর্টের দুই বিচারপতি দুই ভিন্ন মত দিয়েছেন। ফলে মামলা আপাতত উচ্চতর বেঞ্চে গিয়েছে। কর্ণাটকের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে হিজাব পরা নিয়ে যে বিতর্ক ছড়িয়েছিল, তা নিয়ে মামলা যায় দেশের শীর্ষ আদালতে। এই মামলা নিয়ে বিচারপতি সুধাংশু ধুলিয়া প্রশ্ন তুলেছেন যে, একজন মেয়ের জীবন কি উন্নত হতে পারে যদি তাঁর শিক্ষাকে অস্বীকার করা হয়, শুধু তিনি হিজাব পরেন বলে?
এর আগে কর্ণাটকের হাইকোর্ট হিজাব মামলায় ১৫ মার্চ রায় দেয়। সেই রায়কে সরিয়ে রেখে সুপ্রিম কোর্টের দুই বিচারপতি দুই ধরনের মতামত পোষণ করেন। তাঁদের মধ্যে বিচারপতি সুধাংশু ধুলিয়া বলেন, ' শুধুমাত্র হিজাব পরে বলে, এই কোর্টের সামনে এই প্রশ্নটিও দাঁড়াচ্ছে যে, আমরা কি কোনও মেয়ের জীবন আরও উন্নত করছি, তার শিক্ষাকে অস্বীকার করে?' হিজাব কাণ্ডে সমস্ত আবেদন ও রিট পিটিশনকে স্বাগত জানিয়ে নিজের বক্তব্য স্পষ্ট করেছেন বিচারপতি ধুলিয়া। এছাড়াও কর্ণাটক সরকারের নির্দেশকে তিনি কার্যত নস্যাৎ করে দিয়েছেন। হিজাব নিয়ে যে নির্দেশ এসেছিল গত ৫ ফেব্রুয়ারি। এর আগে সেখানে শিক্ষা ক্ষেত্রে হিজাব পরা নিয়ে ব্যাপক তোলপাড় শুরু হয়। তারপর তারপরই কর্ণাটকের বিজেপি সরকারের তরফে আসে নির্দেশ। মামলা গড়ায় হাইকোর্ট পর্যন্ত। তারর তা গিয়েছে সুপ্রিম কোর্টে। পরবর্তীকালে তার শুনানি হয় সুপ্রিম কোর্টে। সেখানে দুই বিচারপতির মত ভিন্ন হওয়ায় মামলা যায় উচ্চতর বেঞ্চে।
'মেয়েদের স্কুলের গেটে ঢোকার আগে হিজাব খুলে ফেলতে বলা তাদের গোপনীয়তার উপর আক্রমণ' বলছেন বিচারপতি ধুলিয়া। তিনি আরও বলছেন, ' এরপর একটি আক্রমণ তাঁদের সম্মানের উপর আর শেষপর্যন্ত তাদের ধর্মনিরপেক্ষ শিক্ষাকে অস্বীকার করা
ধারা ১৯(১)(এ), ২১ এবং ২৫(১) এর লঙ্ঘন।' এদিকে, একটি বৃহত্তর বেঞ্চ গঠনের জন্য বিষয়টি ভারতের প্রধান বিচারপতির কাছে পাঠানো হয়েছে। এদিকে, সুপ্রিম কোর্টে আজ বিচারপতি হেমন্ত গুপ্ত, যিনি বেঞ্চের নেতৃত্বে ছিলেন, ১৫ মার্চের রায়ের বিরুদ্ধে আপিলগুলি খারিজ করেছেন, যা নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করতে অস্বীকার করেছিল। তিনি বলেন যে হিজাব ইসলাম বিশ্বাসীদের 'প্রয়োজনীয় ধর্মীয় অনুশীলনের' অংশ নয়। যে বার্তার কার্যত উল্টো দিকে ছিলেন বিচারপতি ধুলিয়া।