ওয়াকফ বিলের যৌথ সংসদীয় কমিটি (জেপিসি) থেকে বিরোধী সাংসদদের সাসপেন্ড করা হল। কমিটির চেয়ারম্যান জগদম্বিকা পালের বিরুদ্ধে তাড়াহুড়ো করার অভিযোগ তুলে যে লাগাতার বিক্ষোভ দেখানো হয়, তার জেরে তৃণমূল কংগ্রেস নেতা কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ মোট ১০ সাংসদকে একদিনের জন্য সাসপেন্ড করা হয়েছে। তাছাড়াও সাসপেনশনের মুখে পড়েছেন এআইএমআইএম প্রধান তথা হায়দরাবাদের সাংসদ আসাদউদ্দিন ওয়াইসি, নাসের হুসেন, মহম্মদ জাভেদ, এ রাজা, অরবিন্দ সাওয়ান্ত, নাদিম-উল-হক, ইমরান মাসুদ, মোহিবুল্লাহ এবং মহম্মদ আবদুল্লা।
‘ন্যক্কারজনক’ আচরণ কল্যাণদের, তোপ বিজেপির
তাঁদের সাসপেনশনের প্রস্তাব উত্থাপন করেন বিজেপি সাংসদ নিশিকান্ত দুবে। যা কমিটিতে গৃহীত হয়েছে। বিজেপির সাংসদ অপরাজিত সারঙ্গী অভিযোগ করেন, বিরোধী সাংসদরা যে আচরণ করেছেন, তা চূড়ান্ত ‘ন্যক্কারজনক’। কারণ তাঁরা বৈঠকের সময় হাঙ্গামা পাকাচ্ছিলেন। আর কমিটির চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অসংসদীয় ভাষা প্রয়োগ করছিলেন।
উপহাসের পাত্রে পরিণত হয়েছে জেপিসি, কটাক্ষ কল্যাণদের
যদিও বিরোধীদের পালটা দাবি, ওয়াকফ (সংশোধনী) বিল নিয়ে অহেতুক তাড়াহুড়ো করছেন কমিটির চেয়ারম্যান। এমন কাজকর্ম করা হচ্ছে, যা সংসদীয় সংস্কৃতির সঙ্গে খাপ খায় না। জরুরি অবস্থার মতো পরিস্থিতি তৈরি করা হচ্ছে। কিন্তু ওয়াকফ বিল নিয়ে কেন এত তাড়াহুড়ো করছে বিজেপি? পদ্মশিবির যৌথ সংসদীয় কমিটিকে তো পুরো হাস্যস্পদে পরিণত করেছে বলে অভিযোগ করেন কল্যাণরা।
দিল্লি ভোটের দিকে তাকিয়ে এত তাড়াহুড়ো? ক্ষুব্ধ বিরোধীরা
আর সেই পুরো সংঘাতের সূত্রপাত হয় বৈঠকের গোড়া থেকেই। বিরোধী সাংসদরা দাবি করেন, প্রস্তাবিত বিলে কী কী সংশোধন করা হয়েছে, তা নিয়ে ভালোভাবে পর্যালোচনা করার সময় দেওয়া হচ্ছে না। তা নিয়ে উত্তপ্ত বাক্যবিনিময় শুরু হয়ে যায়। অভিযোগ ওঠে যে দিল্লি বিধানসভা নির্বাচনের দিতে তাকিয়ে তড়িঘড়ি কমিটির কাজ সেরে ফেলার চেষ্টা করছে বিজেপি, যাতে রাজধানীর ভোটে ফায়দা তোলা যায়। যেখানে ২৬ বছরের বেশি ধরে মসনদ ছুঁতে পারেনি বিজেপি।
উল্লেখ্য, গত বছর সংসদের নিম্নকক্ষ লোকসভায় ২০২৪ সালের ওয়াকফ (সংশোধনী) বিল পেশ করেছিলেন কেন্দ্রীয় সংখ্যালঘু বিষয়ক মন্ত্রী কিরেণ রিজিজু। তারপর ৮ অগস্ট সেই বিলটি পাঠানো হয় যৌথ সংসদীয় কমিটির কাছে। যে বিলের মাধ্যমে ১৯৯৫ সালের ওয়াকফ আইনকে সংশোধনের লক্ষ্য নেওয়া হয়েছে। ওয়াকফ সম্পত্তি সামলানোর ক্ষেত্রে বিভিন্ন বিষয় সংশোধনের চেষ্টা করা হচ্ছে ওই বিলের মাধ্যমে।