১০০ দিনের কাজের অধীনে রাজ্যের বরাদ্দ পাওনা মেটাচ্ছে না কেন্দ্রের মোদী সরকার। মঙ্গলবার এই অভিযোগে ফের একবার সংসদে সুর চড়ালেন রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসের সাংসদরা। যার জেরে আবারও একবার উত্তাল হয়ে উঠল লোকসভার অধিবেশন।
এদিন সংসদের নিম্ন কক্ষে 'কোয়েশ্চন আওয়ার' চলাকালীন তৃণমূল কংগ্রেসের সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় দাবি করেন, ২০২২-২৩ এবং ২০২৩-২৪ অর্থবর্ষে কেন্দ্রীয় প্রকল্প ১০০ দিনের কাজের অধীনে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের যে বিপুল পরিমাণ আর্থিক বরাদ্দ বকেয়া রয়েছে, তা এখনও দেওয়ার নাম করছে না মোদী সরকার।
এই ঘটনা আদতে বাংলার প্রতি কেন্দ্রের বিমাতৃসুলভ আচরণেরই প্রমাণ বলে দাবি করেন কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, 'কেন এভাবে পশ্চিমবঙ্গ সরকারকে বঞ্চিত করা হচ্ছে? কেন এ নিয়ে কোথাও কোনও কথা বলা হচ্ছে না? আপনারা কি বাঙালিদের পছন্দ করেন না? সেই কারণেই কি বাংলাকে তার ন্যায্য বরাদ্দ থেকে বঞ্চিত করছেন?'
প্রশ্নোত্তর পর্বেই কল্যাণের তোলা এইসব প্রশ্নের জবাব দেন কেন্দ্রীয় কৃষি ও উন্নয়ন মন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহান। তিনি পালটা অভিযোগ করে বলেন, কেন্দ্রীয় সরকারি এই প্রকল্প আদতে আয়তনে বিরাট। কিন্তু, পশ্চিমবঙ্গের তৃণমূল সরকার সেই বৃহৎ প্রকল্পকেই ছোট ছোট কর্মসূচিতে ভেঙে দিয়েছে। যাতে নির্দিষ্ট কিছু ব্যক্তি লাভবান হতে পারেন।
এরই সঙ্গে, কেন্দ্রের মন্ত্রী বলেন, যদি সংশ্লিষ্ট প্রকল্পের বরাদ্দ অর্থ সঠিকভাবে বা নিয়ম মেনে ব্যবহার বা খরচ না করা হয়, তাহলে কেন্দ্রীয় সরকার পরবর্তীতে সেই প্রকল্পের টাকা আটকে রাখতেই পারে। আইনে সেই পথ রয়েছে।
কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর কথায়, 'এই প্রকল্পে যাঁরা আদতে উপভোক্তা নন, তাঁদের উপভোক্তা হিসাবে দেখানো হয়েছে। আবার, যাঁরা প্রকৃত উপভোক্তা, তাঁদের নাম নথিভুক্ত করা হয়নি। এমনকী, গ্রামীণ উন্নয়ন প্রকল্পগুলির নাম পর্যন্ত বদলে দেওয়া হয়েছে। যেটা করার কোনও অনুমতি নেই। এর উদাহরণ হিসাবে বলা যায়, প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার নামও বদলে ওরা সেই প্রকল্পের নিজস্ব নাম রেখেছে। উপরন্তু, যাঁদের প্রকল্পের সুবিধা পাওয়ার কথা নয়, তাঁদেরই সেই সুবিধা প্রদান করা হয়েছে।'
কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর এই পালটা অভিযোগ শুনে বেজায় চটে যান কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি চিৎকার করে মন্ত্রীর এই সমস্ত দাবি খারিজ করে দেন। কল্যাণ বলেন, কেন্দ্রীয় সরকার বলছে, বরাদ্দ অর্থের অপব্যবহার করা হয়েছে। তাহলে সেসবের বিরুদ্ধে কেন্দ্র পদক্ষেপ করছে না কেন?
কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় প্রশ্ন তোলেন, 'গত বছর আমরা শুনলাম, বরাদ্দ অর্থের নাকি অপব্যবহার করা হয়েছে। আমরা তো বলছি, যদি আপনাদের মনে হয়, কোনও অনিয়ম হয়েছে, তাহলে সেই দোষীদের খুঁজে বের করুন এবং তাদের গ্রেফতার করুন। কিন্তু আপনারা সেটাও করছেন না। আপনারা এভাবে কী করে পশ্চিমবঙ্গের মানুষকে বঞ্চিত করতে পারেন? এটা কি সংবিধানের ১৪ নম্বর অনুচ্ছেদ লঙ্ঘন করা নয়?'