এবারের মার্কিন নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে হারিয়ে যেন কমলা হ্যারিসই প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন। এই প্রার্থনাই করছেন তামিলনাড়ুর তিরুঅনন্তপুরমের ছোট্ট একটি গ্রামের বাসিন্দারা।
এই গ্রামের সঙ্গে রয়েছে কমলা হ্যারিসের নাড়ির টান! কারণ, কমলার দাদামশাই ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা একটা সময় এই গ্রামেরই বাসিন্দা ছিলেন। বস্তুত, কমলা হ্যারিসের পূর্বপুরুষদের (কমলার মায়ের বাড়ির দিক দিয়ে) সঙ্গে এই তামিল গ্রামের সম্পর্ক শতাব্দীপ্রাচীন!
কমলার জয় প্রার্থনা করে স্থানীয় কাউন্সিলর অরুলমোঝি একটি বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণ করেন। কমলার পরিবারের যে মন্দির এই গ্রামে রয়েছে, সেই মন্দিরের পুরোহিতকে দিয়েই একটি বিশেষ পুজো করান অরুলমোঝি।
এই পুজো সম্পর্কে এনডিটিভি-কে তিনি জানিয়েছেন, 'এই ভগবান অত্যন্ত জাগ্রত। আমরা গতবারও ওঁর (কমলা হ্যারিস) জন্য প্রার্থনা করেছিলাম। সেবারও তিনি জিতেছিলেন এবং আমেরিকার ভাইস প্রেসিডেন্ট হয়েছিলেন। তিনি নারী ক্ষমতায়নের আদর্শ উদাহরণ। যে কোনও নারী, যিনি জীবনে সফল হতে চান, তাঁর জন্য তিনি (কমলা) অনুপ্রেরণাস্বরূপ।'
প্রসঙ্গত, কমলা হ্যারিসের দাদামশাই পি ভি গোপালন ছিলেন একজন আমলা। তামিলনাড়ুর এই গ্রামেই তাঁর জন্ম হয়েছিল এবং তিনি এখানেই বড় হয়ে উঠেছিলেন।
পরবর্তীতে এই পরিবারটি চেন্নাইয়ে (তৎকালীন মাদ্রাজ) চলে যায়। ছোট্ট কমলা যখন ভারতে থাকতেন, তখন তাঁর দাদামশাই তাঁকে এলিয়ট সৈকতে ঘোরাতে নিয়ে যেতেন। কমলা নিজে বহুবার জানিয়েছেন, তাঁর জীবনে তাঁর দাদামশাইয়ের প্রভাব অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
কমলার দাদামশাইয়ের পৈতৃক গ্রামে তাঁদের পারিবারিক মন্দিরটি আজও অক্ষত রয়েছে। বহু বছর আগে সেই মন্দিরের সংস্কার করা হয়। সেই সময় সেই কাজের জন্য কমলা ৫,০০০ টাকা দান করেছিলেন।
মন্দিরে গায়ে এখনও দাতাদের নামের তালিকা খোদাই করা রয়েছে। তাতে কমলা হ্যারিসের নামও রয়েছে।
শ্যারন নামে কমলার এক বন্ধু সংবাদমাধ্যমকে বলেন, 'গণতন্ত্রকে রক্ষা করার জন্যই কমলার জেতা দরকার।' প্রসঙ্গত, শ্য়ারন নিজে মার্কিনি হলেও আপাতত চেন্নাইয়ে থাকেন।
কমলা সম্পর্কে তিনি বলেন, 'তাঁর অবশ্যই আমেরিকার প্রথম মহিলা প্রেসিডেন্ট হওয়া উচিত। ভারত ইতিমধ্যেই মহিলা প্রেসিডেন্ট এবং মহিলা প্রধানমন্ত্রী পেয়েছে। কিন্তু, আমেরিকায় আজ পর্যন্ত কোনও মহিলা প্রেসিডেন্ট হননি। আমেরিকা ইতিমধ্যেই এই বিষয়ে অনেক দেরি করে ফেলেছে।'
কমলার দাদামশাইয়ের গ্রামের সংশ্লিষ্ট কাউন্সিলর অরুলমোঝি জানিয়েছেন, যদি কমলা এবারও জেতেন এবং মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন, তাহলে তাঁরা মানুষকে একবেলার খাবার বিতরণ করবেন। তিনি বলেন, 'আমরা ওঁর (কমলা হ্যারিসের) প্রিয় ইডলি খাওয়াব সকলকে।'
তবে, গ্রামের সকলেই যে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন নিয়ে মেতে রয়েছেন এমনটা কিন্তু নয়। গ্রামেরই এক চায়ের দোকানের মালিক জানান, 'কমলা হ্যারিসের দাদামশাই বহু বছর আগে এই গ্রামে থাকতেন বলে শুনেছি। আমরা কখনও তাঁদের দেখিনি। তাই, আমাদের এ নিয়ে কোনো আগ্রহ নেই।'