আতিক আহমেদ ও তাঁর ভাই আশরাফকে খুনের পর থেকেই দেশ জুড়ে উত্তরপ্রদেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। অনেকেই প্রশ্ন করেছেন, মাফিয়া হলেই কি এই পরিণতি গ্রহণযোগ্য? নৈতিকতার এই প্রশ্ন অবশ্য অনেকদিন ধরেই ঘুরছে যোগী সরকারের ওপরে। পরপর সেই রাজ্যে যেভাবে অভিযুক্তরা পুলিশি এনকাউন্টারে মারা গিয়েছে, তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বিরোধীরা। তবে আতিকের ঘটনাটি একটু ভিন্ন। তাঁকে পুলিশি এনকাউন্টারে মরতে হয়নি। বরং পুলিশি হেফাজতে থাকাকালীন দুষ্কৃতীদের গুলিতে মরেছেন তিনি। একদিন আগেই অবশ্য তাঁর ছেলে আসাদ ও এক সহযোগীকে পুলিশই মেরেছিল এনকাউন্টারে। এই আবহে এবার আতিকের মৃত্যু ঘিরে আটটি রহস্যের সন্ধান পেলেন সমাজবাদী পার্টির সমর্থিত নির্দল সাংসদ কপিল সিব্বল। (আরও পড়ুন: গরম থাকবে আর কয়েকদিন, তারপরই জেলয় জেলায় ঝমঝমিয়ে নামবে বৃষ্টি)
এক টুইট বার্তায় বর্ষীয়ান সাংসদ লেখেন, 'আতিক এবং আশরাফ (দ্য আর্ট অফ এলিমিনেশন)। ১) কেন রাত ১০টার সময় মেডিক্যাল চেকআপের জন্য নিয়ে যাওয়া হল? ২) কোনও মেডিক্যাল জরুরি অবস্থা তো ছিল না। ৩) ধৃতদের হাঁটিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। ৪) মিডিয়াকে প্রশ্ন করতে দেওয়া হয়েছিল কেন? ৫) যে আততীয়রা একে অপরকে চেনে না, এমন ব্যক্তিরা একই জায়গায় এসে জড়ো হল কীভাবে? ৬) ৭ লাখ টাকার বেশি দামি অস্ত্র কীভাবে এল আততীয়দের হাতে? ৭) শুটিংয়ের প্রশিক্ষণ কে দিল? ৮) ঘটনার পরপরই তিনজনেই আত্মসমপর্পণ করে দিল।' উল্লেখ্য, এর আগে আতিক হত্যাকাণ্ডে সরকারের ভূমিকা নিয়ে একই সুরে প্রশ্ন তুলেছিলেন সমাজবাদী পার্টি প্রধান অখিলেশ যাদব, বিহারের উপমুখ্যমন্ত্রী তেজস্বী যাদবরা। এমনকী এর আগে আতিকের ছেলে আসাদের এনকাউন্টারকে 'ভুয়ো' বলে আখ্যা দিয়েছিলেন অখিলেশ। আর এবার আতিকের হত্যাকাণ্ড নিয়ে পরপর পয়েন্ট তুলে ধরে সরকারকে বিঁধলেন কপিল সিব্বল।
রিপোর্ট অনুযায়ী, আতিককে গুলি করে খুন করার ঘটনায় ধৃতদের নাম হল লাভলেশ তিওয়ারি, অরুণ মৌর্য এবং সানি সিং। প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, আতিক ও আশরাফকে গুলি করার পর সানি, লাভলেশরা 'জয় শ্রী রাম' স্লোগান তুলেছিল। এদিকে আতিক ও আশরাফকে খুনের পরই সানি, অরুণ এবং লাভলেশকে ধরে ফেলে পুলিশ। উল্লেখ্য, একদিন আগেই আতিকের ছেলে আসাদ আহমেদের মৃত্যু হয়েছিল এক এনকাউন্টারে। ছেলের শেষযাত্রায় অংশ নেওয়ার জন্য আতিক আবেদন জানালেও তাঁকে ছাড়া হয়নি। এই আবহে শনিবার রাত ১০টা নাগাদ আতিককে প্রয়াগরাজের এক সরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল স্বাস্থ্যপরীক্ষার জন্য। সেখানেই গাড়ি থেকে নামার পর আতিককে ঘিরে ধরেছিলেন সাংবাদিকরা। তাঁর ছেলের শেষযাত্রা না যেতে পারা নিয়ে প্রশ্ন করা হচ্ছিল আতিককে। প্রথমে কিছু বলতে না চাইলেও কয়েক পা যাওয়ার পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাব দিতে শুরু করেছিলেন আতিক। কিছু কথা বলার পরই আচমকা আতিকের বাঁদিক থেকে একটি বন্দুকধারী এসে মাথায় 'পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জে' গুলি করে তাঁকে।