করাচি বিশ্ববিদ্যালয়ে এক আত্মঘাতী হামলা চালিয়ে তিন চিনা নাগরিককে হত্যা করেন বালুচ বিদ্রোহী শারি। ৩০ বছর বয়সি শারি বালুচ এককালে ছিলেন শিক্ষক। প্রাণীবিদ্যায় স্নাতোকত্তর শারি নিজের ভূমির দাবিতে আত্মঘাতী হন। ছয় মাস আগেই তিনি তাঁর এই কীর্তি ঘটানোর সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছিলেন। এহেন শারির স্বামী হাবিতান বশির বালুচ নিজের স্ত্রীর এই কাণ্ডে ‘গর্বিত’। এমনই দাবি করেছেন এক আফগান সাংবাদিক। আফগান সাংবাদিক বশির আহমদ গওয়াখ দাবি করেন, শারির স্বামী নিজের স্ত্রীকে কুর্নিশ জানিয়ে বলেছেন, ‘শারি জান, আপনার নিঃস্বার্থ এই কাজ আমাকে বাকরুদ্ধ করেছে, আমি আজ গর্বিত। মাহরোচ এবং মীর হাসান (শারি ও বশিরের দুই সন্তান) খুব গর্বিত মানুষ হিসেবে বেড়ে উঠবে এই ভেবে যে তাদের মা কত মহান মহিলা ছিলেন। আপনি আমাদের জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হয়ে থাকবেন।’
করাচি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিতরে কনফুসিয়াস ইনস্টিটিউটের কাছে একটি ভ্যানগাড়িতে বিস্ফোরণ হয় গতকাল। ওই ভ্যানে সাত থেকে আটজন ছিলেন। তাদের মধ্যে অনেকে চিনা নাগরিক ছিলেন। সেই গাড়িতেই বিস্ফোরণের জেরে তিন চিনা নাগরিক সহ চার জনের মৃত্যু হয়। সেই হামলার দায় স্বীকার করে বালুচ লিবারেশন আর্মি। সংগঠনের তরফে দাবি করা হয়, এই প্রথম তাদের সংগঠনের তরফে কোনও মহিলা আত্মঘাতী হামলা চালালেন।
জানা গিয়েছে, বালুচিস্তানের তুরবাতের বাসিন্দা শারি প্রাণীবিদ্যায় স্নাতকোত্তর করেছেন বালুচিস্তান বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। এমফিলও করেন তিনি। ২০১৪ সালে বিএড এবং ২০১৮ সালে এমএড করেন শারি। এর পর বালুচিস্তানের কেচ জেলায় একটি প্রাথমিক স্কুলে শিক্ষকতা শুরু করছিলেন। এরপর ২০২০ সাল নাগাদ বালুচ স্বাধীনতাকামী সংগঠনের আত্মঘাতী স্কোয়াডে যোগ দিয়েছিলেন শারি। শারির দুই সন্তান আছে। তাই শারিকে অন্য স্কোয়াডে যোগ দিতে বলেছিলেন সংগঠনের নেতৃত্ব। তবে শারি অনড় ছিলেন নিজের সিদ্ধান্তে। তারপরও শারিকে তাঁর সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করার জন্য সময় দেওয়া হয়েছিল। এরপর ছয় মাস আগে শারি নেতৃত্বকে জানান, তিনি প্রস্তুত। এরপরই করাচি বিশ্ববিদ্যালয়েক হামলার ছক কষা শুরু হয়।