কর্ণাটকের বিজেপি কর্মীদের 'সুখবর' দিয়েও ভোলবদল করলেন দলেরই এক বিধায়ক! সংবাদমাধ্যমে প্রকাশ, ওই বিজেপি বিধায়ক নাকি বলেছিলেন, দলের কার্যকর্তারা চাইলেই অতি সহজে লক্ষ-লক্ষ টাকা রোজগার করতে পারেন! এবং তার জন্য খুব বেশি পরিশ্রমও করতে হবে না তাঁদের। শুধুমাত্র রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ও তাঁর সরকারের বিরুদ্ধে গলা চড়িয়ে স্লোগান দিতে হবে এবং মুখ্যমন্ত্রীর সভাস্থলে ক্ষুব্ধ উপভোক্তাদের জড়ো করতে হবে। তাহলেই তাঁদের ১ লক্ষ থেকে ২০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত 'পুরস্কার' দেবেন বিজেপি বিধায়ক সুরেশ গৌড়া!
সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুসারে, দলীয় সহকর্মীদের উদ্বুদ্ধ এবং আন্দোলনমুখী করতেই নাকি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন সুরেশ। যদিও বিজেপি বিধায়কের এই 'উদ্যোগ' সোসাল মিডিয়ায় চাউর হওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই সুরেশ গৌড়া তাঁর ঘোষিত অবস্থান থেকে পাল্টি খান এবং বলেন, যে ইস্যুতে প্রতিবাদ করার কথা ভাবা হয়েছিল, সেই সমস্যা মিটে গিয়েছে!
অন্যদিকে, বিজেপি বিধায়কের এহেন তৎপরতা জানার পর কংগ্রেসও হাত গুটিয়ে বসে থাকেনি। রবিবার তুমাকুরুতেই একটি সাংবাদিক সম্মেলন করেন কংগ্রেস নেতা তথা দলের প্রাক্তন বিধায়ক ডি সি গৌরীশঙ্কর। বিজেপি বিধায়কের লক্ষ-লক্ষ টাকা পুরস্কার সংক্রান্ত ঘোষণার নিন্দা করেন তিনি।
সেইসঙ্গে জানান, ওই বিজেপি বিধায়ক 'সংশ্লিষ্ট এলাকার আইন-শৃঙ্খলা নষ্ট করতে চাইছেন'। এর জন্য তাঁর বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগ জানানো হবে বলেও হুঁশিয়ারি দেন গৌরীশঙ্কর।
তিনি ওই সাংবাদিক বৈঠকে একটি অডিয়ো ক্লিপিং সকলকে শোনান। তাঁর দাবি, সেখানে যে গলা শোনা গিয়েছে, সেটি বিজেপি বিধায়ক সুরেশ গৌড়ার। গৌরীশঙ্করের দাবি, বিজেপির একটি জনসভা থেকে সুরেশ দলীয় কর্মীদের উস্কানি দিয়েছেন।
আসলে, সোমবার তুমাকুরুর জনসভায় যোগদান করার সময়েই সরকারি বিভিন্ন প্রকল্পের সুবিধাভোগীদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করার কথা ঘোষণা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়া। সেখানেই যাতে মুখ্যমন্ত্রীকে কালো পতাকা দেখানো হয়, সেই বিষয়ে বিজেপি বিধায়ক দলের কর্মীদের উস্কানি দিয়েছিলেন বলে দাবি করেন গৌরীশঙ্কর।
সুরেশ গৌড়া নাকি তাঁর দলীয় সহকর্মীদের বলেছিলেন, 'আমি আমাদের কার্যকর্তাদের বলেছি, যাতে তাঁরা প্রত্যেকে অন্তত ৫ থেকে ১০ জন (ক্ষুব্ধ) উপভোক্তাকে অনুষ্ঠানস্থলে আনার ব্যবস্থা করেন। একইসঙ্গে তাঁরা যেন সিদ্দারামাইয়া ও তাঁর সরকারের বিরুদ্ধে জোর গলায় স্লোগান তোলেন। এভাবে সভাস্থলে লোক ধরে আনতে পারলে আমি এমন প্রত্যেকটি লোকের জন্য ওই কার্যকর্তাদের ১ লক্ষ টাকা করে দেব। তাঁরা যদি ১০ জন এমন লোকের ব্যবস্থা করেন, তাহলে ১০ লক্ষ টাকা দেব। আর, তাঁরা যদি ২০ জন এমন লোক আনতে পারেন, তাহলে ২০ লক্ষ টাকা দেব। কিন্তু, এই বিষয়ে কার্যকর্তারা একে-অপরকে কোনও কথা বলতে পারবেন না।'
যদিও পরে সুরেশ গৌড়া জানান, নির্দিষ্ট কিছু দাবি আদায়ের জন্য তাঁরা প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। কিন্তু, পরে রাজ্যের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী শীঘ্রই সেই সমস্যা মিটিয়ে দেওয়ার আশ্বাস দেন। তাই, সিদ্দারামাইয়ার জনসভায় লোক জোগাড় ও স্লোগান তোলার ওই প্রতিবাদী কর্মসূচি বাতিল করা হয়েছে!