মুসলিম সম্প্রদায়কে নিয়ে মন্তব্য করে বিতর্কে জড়ালেন কর্ণাটকের সিপিএম বিধায়ক কেটি জলিল। তিনি মন্তব্য করেছেন, করিপুর বিমানবন্দরে স্বর্ণ পাচারের সঙ্গে জড়িতদের বেশিরভাগই মুসলমান। এ বিষয়ে প্রখ্যাত এক কাজীকে ফতোয়া জারি করার পরামর্শ দিয়েছেন, যাতে মুসলিম সম্প্রদায় মানুষ এই সমস্ত কাজকর্ম থেকে বিরত থাকে। তবে বিধায়কের মন্তব্য সামনে আসতেই বিতর্ক তৈরি হয়েছে। সোনা পাচারের সঙ্গে মুসলিম সম্প্রদায়কে টেনে আনার জন্য বিধায়ককে অবিলম্বে ক্ষমা চাইতে হবে বলে দাবি জানিয়েছে বিরোধীরা।
আরও পড়ুন: ‘সাভারকর গোমাংস খেতেন’ মন্তব্যে কর্ণাটকের মন্ত্রীর বিরুদ্ধে থানায় বজরং দল
উল্লেখ্য, করিপুর বিমানবন্দরের আশেপাশে প্রায়ই সোনা পাচারের অভিযোগ ওঠে। বিধায়কের দাবি, সেই জড়িতরা অধিকাংশই মুসলিম সম্প্রদায়ের। তিনি বলেন, এই বিষয়টি নিয়ে কথা না বলে সমাজের উন্নতি বা অগ্রগতি সম্ভব হবে না। পানাক্কড় সাদিক আলি শিহাব থাঙ্গালকে এনিয়ে একটি ধর্মীয় ফতোয়া জারি করার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি। তাঁর পরামর্শ হল কাজীকে বলতে হবে যে সোনার অবৈধ ব্যবসা করা দেশবিরোধী কাজ। মুসলমানদের এ ধরনের কাজে জড়িত হওয়া উচিত নয়। শিহাব থাঙ্গাল হলেন একজন প্রখ্যাত কাজী।
সোশ্যাল মিডিয়ায় বিধায়ক লিখেছেন, অপরাধী যে সম্প্রদায়েরই হোক না কেন, ধর্ম নির্বিশেষে সব সম্প্রদায়ের মানুষকেই অবশ্যই অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে হবে। তিনি আরও লেখেন, ‘খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের লোকদেরও তাদের সম্প্রদায়ের মধ্যে ত্রুটিগুলি দূর করতে হবে, মুসলিম সম্প্রদায়ের লোকদেরও বিষয়গুলি সামনে রাখতে হবে। হিন্দুদের উচিত তাদের মানুষের ভুলগুলি তুলে করা। এই ধরনের ধর্মীয় সংস্কার ও সামাজিক জাগরণ সর্বদাই হয়েছে।’
কে টি জলিল বলেন, ‘এটা সত্য যে বিপুল সংখ্যক মুসলমান সোনা চোরাচালান ও হাওয়ালা মামলায় জড়িত। কারণ বিপুল সংখ্যক মুসলমান বিশ্বাস করে যে এই কাজগুলি তাদের ধর্মীয় বিশ্বাসের পরিপন্থী নয়। ধর্মীয় নেতাদের উচিত এমন ব্যক্তিদের শিক্ষিত করা।’
বিধায়কের এই মন্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়ে মুসলিম যুব লিগের জাতীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ইটি মুহাম্মদ বশির, রাজ্য সাধারণ সম্পাদক পিএমএ সালাম এবং মুসলিম যুব লিগের সাধারণ সম্পাদক পি কে ফিরোস সহ অন্যান্য নেতারা সোনা চোরাচালান ইস্যুতে পুরো সম্প্রদায়কে টেনে আনার জন্য জলিলের নিন্দা করেছেন। তারা বিধায়ককে ক্ষমা চাওয়ার দাবি জানিয়েছেন।
এই বিষয়ে সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক এম ভি গোবিন্দনের অবস্থান কী তা জানতে চেয়েছেন সালাম। লিগের নেতারা মনে করেন, জলিল দলের নেতাদের সন্তুষ্ট করার চেষ্টা করছেন। এমনকী বিজেপি এবং আরএসএস যা করেনি জলিল এখন তাই করছেন।
কংগ্রেস নেতা এপি অনিলকুমার, রাহুল মামকুট্টাথিল এবং শফি পারম্বিলও জলিলের মন্তব্যের নিন্দা করেছেন। শফি বলেন, ‘ফতোয়া দিয়ে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড মোকাবেলা করার জন্য ভারত কোনও ধর্মতান্ত্রিক রাষ্ট্র নয়। ভারত একটি গণতান্ত্রিক দেশ এবং এখানে বেআইনি কার্যকলাপকে আইনগতভাবে প্রতিহত করা উচিত।’