১৫ দিনের জন্য স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া এবং পঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্কের সঙ্গে সমস্ত লেনদেন নিষিদ্ধ করে দিয়েছে কর্ণাটক সরকার। এই গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ করে মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়া কর্তৃক অনুমোদিত একটি আদেশে বলা হয়েছে, এই ব্যাঙ্কগুলিতে থাকা নিজেদের অ্যাকাউন্ট বন্ধ করতে হবে রাজ্যের সমস্ত বিভাগকে। এতদিন পর্যন্ত এই ব্যাঙ্কে যা যা আমানত জমা রাখা হয়েছে, সবই অবিলম্বে তুলে নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এই দু'টি ব্যাঙ্কের বিরুদ্ধেই সরকারি অ্যাকাউন্ট থেকে তহবিল অপব্যবহারের অভিযোগ রয়েছে, যার কারণে রাজ্য সরকার এই পদক্ষেপ করেছে বলে খবর। তবে বিষয়টি নিয়ে সমাধানসূত্র খোঁজার চেষ্টা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে দুই রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কই।
আরও পড়ুন: (Sheikh Hasina: বাংলাদেশে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবীকে অপহরণের বিস্ফোরক অভিযোগ! হাসিনার বিরুদ্ধে দ্বিতীয় মামলা)
সরকারি আদেশে আরও উল্লেখ করা হয়েছে যে স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া বা পঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্কে আর কোনও আমানত করা উচিত নয়। নির্দেশিকাটি পাবলিক এন্টারপ্রাইজ, কর্পোরেশন, স্থানীয় সংস্থা, বিশ্ববিদ্যালয় এবং অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য বলে জানানো হয়েছে এবং তাঁদের একই নির্দেশিকা অনুসরণ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়া-র নির্দেশ অনুসারে, অর্থ বিভাগের সচিব পিসি জাফর একটি আদেশ জারি করে আরও বলেছেন যে এই দু' টি ব্যাঙ্কে জমা করা সমস্ত ফিক্সড ডিপোজিট (এফডি) ২০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে তুলে নিতে হবে।
আরও পড়ুন: (Independence Day Gallantry Awards: চারটি কীর্তি চক্র এবং ১৮ টি শৌর্য চক্র, স্বাধীনতা দিবসে বিশেষ সম্মান)
সরকারি তহবিলের অপব্যবহারের অভিযোগের রয়েছে এই দুই ব্যাঙ্কের বিরুদ্ধে। দাবি করা হয়েছে, অপব্যবহারের বিষয়ে পূর্ববর্তী সতর্কতা এবং যোগাযোগ সত্ত্বেও সমস্যাগুলি অমীমাংসিত রয়ে গিয়েছে, ব্যাঙ্ক সেভাবে কোনও গুরুত্ব দেয়নি, যার ফলে এই পদক্ষেপ করা হয়েছে। তাই কর্ণাটক সরকারের এই সিদ্ধান্ত আগামিদিনে এই ব্যাঙ্কগুলির সঙ্গে সম্পর্কের ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন আনতে পারে। ব্যাঙ্কিং ব্যবস্থায় স্বচ্ছতা ও আস্থা বজায় রাখতে এই পদক্ষেপ নিয়েছে রাজ্য প্রশাসন। এই সিদ্ধান্ত ব্যাঙ্কিং খাতেও বড় আলোচনার বিষয় হয়ে উঠতে পারে।
আরও পড়ুন: (Vijayendra Bidari: বিদেশ থেকে ফিরিয়ে আনেন পলাতক অপরাধীদের, সেই CBI অফিসারকে রাষ্ট্রপতি পদক)
কেন এই সিদ্ধান্ত
কর্ণাটকের মহর্ষি বাল্মীকি তফসিলি উপজাতি উন্নয়ন কর্পোরেশন লিমিটেডের সঙ্গে জড়িত আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ নিয়ে, কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন কর্ণাটক সরকার এবং বিরোধী দল বিজেপির মধ্যে বিতর্কিত রাজনৈতিক লড়াইয়ের পরে এই কঠোর পদক্ষেপটি করা হয়েছে।
কর্পোরেশনের অ্যাকাউন্ট সুপারিনটেনডেন্ট চন্দ্রশেখর পি২৬ মে আত্মহত্যা করার পর থেকেই বিতর্কের সূত্রপাত। অনুমোদন ছাড়াই ১৮৭ কোটি টাকার অননুমোদিত স্থানান্তরের অভিযোগে একটি নোট রেখে গিয়েছিলেন তিনি। নোটে দাবি করা হয়েছে যে এই পরিমাণের মধ্যে ৮৮.৬২ কোটি টাকা বিভিন্ন অ্যাকাউন্টে পাঠানো হয়েছে।
এর মধ্যে হায়দরাবাদের আইটি সংস্থা এবং একটি সমবায় ব্যাঙ্কের অ্যাকাউন্টও রয়েছে৷ এছাড়াও, কর্ণাটক ইন্ডাস্ট্রিয়াল এরিয়া ডেভেলপমেন্ট বোর্ড এবং কর্ণাটক স্টেট পলিউশন কন্ট্রোল বোর্ডও একই ধরনের কেলেঙ্কারিতে জড়িত, যেখানে ব্যাঙ্কের আধিকারিকরাও এই আর্থিক তছরূপের সঙ্গে জড়িত বলে অভিযোগ করা হয়েছে।