এক মহিলাকে যৌন নির্যাতনের মামলায় ওলা অ্যাপ ক্যাব সংস্থাকে ৫ লক্ষ টাকা জরিমানা করল হাইকোর্ট। অভিযোগ উঠেছিল, ওই সংস্থার এক ক্যাব চালক মহিলার যৌন নির্যাতন করেছিলেন। সেই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে এমন নির্দেশ দিয়েছে কর্ণাটক হাইকোর্ট। আদালতের নির্দেশ, ওই মহিলাকে ৫ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেবে ওলার মূল সংস্থা এএনআই টেকনোলজিস।
আরও পড়ুন: মাঝপথেই নামিয়ে বেশি ভাড়া! Ola Cabs-কে ৯৫,০০০ টাকা ক্ষতিপূরণের নির্দেশ আদালতের
মামলার বয়ান অনুযায়ী, ঘটনাটি ঘটেছিল ২০১৯ সালে। নির্যাতিতা মহিলা ওলা ক্যাব বুক করেছিলেন। তাতে যাওয়ার সময় ক্যাব চালক তাকে যৌন নির্যাতন করে বলে অভিযোগ। এই ঘটনায় নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে তিনি প্রথমে সংস্থার কাছে অভিযোগ জানিয়েছিলেন। কিন্তু, ক্যাব সংস্থার তরফে কোনও পদক্ষেপ না করায় কর্ণাটক হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন নির্যাতিতা।
ওই মহিলা ওলাকে তার অভিযোগ খতিয়ে দেখার জন্য এবং মহিলা ও শিশু উন্নয়ন মন্ত্রকের নির্দেশিকা কোম্পানিটি যাতে মেনে চলে তা নিশ্চিত করার জন্য নির্দেশ চেয়ে কর্ণাটক হাইকোর্টে আবেদন জানিয়েছিলেন মহিলা। এর পাশাপাশি মহিলাদের নিরপত্তায় মন্ত্রকের নির্দেশিকা বাস্তবায়নের জন্য রাজ্যকেও নির্দেশ দেওয়া আবেদন জানিয়েছিলেন তিনি।
মামলায় হাইকোর্টের বিচারপতি এমজিএস কামালের একক বেঞ্চ কর্মক্ষেত্রে মহিলাদের যৌন হয়রানি প্রতিরোধে আইনের অধীনে মামলার তদন্ত করার জন্য ওলাকে নির্দেশ দেয়। আদালতের আরও নির্দেশ, ৯০ দিনের মধ্যে তদন্ত শেষ করে এবং জেলা অফিসারের কাছে একটি প্রতিবেদন জমা দিতে হবে। আদালত কর্ণাটক রাজ্য সড়ক নিরাপত্তা কর্তৃপক্ষকেও নির্দেশ দিয়েছিল যে এএনআই টেকনোলজিস যাতে ৯০ দিনের মধ্যে তদন্ত সম্পূর্ণ করে সেবিষয়ে রাজ্যকে পদক্ষেপ করতে হবে। এছাড়া পদক্ষেপ করতে ব্যর্থ হওয়ায় রাজ্য সরকারকেও এক লাখ টাকা জরিমানা দেওয়ার নির্দেশ দেয় আদালত।
পাশাপাশি, আবেদনকারীর মামলার খরচ বাবদ এএনআই টেকনোলজিসকে ৫০ হাজার টাকা দেওয়ার নির্দেশ দেয় হাইকোর্ট। আদালত জোর দিয়েছে, যে সমস্ত পক্ষকে অবশ্যই কর্মক্ষেত্রে হয়রানি প্রতিরোধ আইন ২০১৩ এর ১৬ ধারা মেনে চলতে হবে এবং নির্যাতিতার গোপনীয়তা নিশ্চিত করতে হবে। গত ২০ অগস্ট আদালত এই মামলায় রায় সংরক্ষণ রাখে।
মামলা চলাকালীন, আবেদনকারীর আইনজীবী যুক্তি দিয়েছিলেন যে ওলা একটি পরিবহণ সংস্থা হিসাবে কাজ করে। তাই চালকদের কাজকর্মের জন্য ওলাকে দায়বদ্ধ হওয়া উচিত। ওলার কৌঁসুলি অবশ্য যুক্তি দিয়েছিলেন যে চালকরা স্বাধীনভাবে কাজ করেন, তারা সংস্থার কর্মী নন। তাই কোম্পানিকে শ্রম আইনের অধীনে দায়ী করা উচিত নয়।