কর্ণাটক হাইকোর্টে বড়সড় ধাক্কা খেলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়া। মঙ্গলবার আদালতের তরফে স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হয়, মুডা কেলেঙ্কারিতে তাঁর বিরুদ্ধে মামলা শুরু করায় কোনও সমস্যা নেই।
উল্লেখ্য, আগেই এই মামলায় মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে মামলার শুরুর অনুমতি দিয়েছিলেন রাজ্য়পাল থাওয়ার চাঁদ গেহলট। মঙ্গলবার কর্ণাটকের রাজ্যপালের সেই অবস্থানে সমর্থন জানিয়ে, তাঁর নির্দেশ বহাল রেখেছে কর্ণাটক হাইকোর্ট।
ঘটনা প্রসঙ্গে জানা যায়, মাইসোর আরবান ডেভেলপমেন্ট অথোরিটি (মুডা)-এর তরফ থেকে মুখ্যমন্ত্রীর স্ত্রী পার্বতীকে বেআইনিভাবে জমি পাইয়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। এই ঘটনাতেই মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে মামলার রুজুর অনুমোদন দেওয়া হয়।
সংশ্লিষ্ট তিন ব্যক্তিকে সেই অনুমতি দেন রাজ্যপাল থাওয়ার চাঁদ গেহলট। কিন্তু, সিদ্দারামাইয়া রাজ্যপালের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হন। মঙ্গলবার তাঁর সেই আবেদন খারিজ করে দেন বিচারপতি এম নাগাপ্রসন্ন।
এই বিষয়ে আদালতের পর্যবেক্ষণ হল, অভিযোগকারীরা ন্যায়সঙ্গতভাবেই এই অভিযোগ তুলেছিলেন এবং সেই ঘটনায় রাজ্যপালের হস্তক্ষেপ চেয়েছিলেন। আদালত মনে করে, সাধারণ নিয়ম অনুসারে, রাজ্যপালের এক্ষেত্রে সক্রিয় হওয়া উচিত এবং সংশ্লিষ্ট মন্ত্রিসভাকে পরামর্শ দেওয়া উচিত।
তবে, আদালত এও মনে করে যে, ব্যতিক্রমী ঘটনা ঘটলে রাজ্যপাল এককভাবেও সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। এখানে যে মামলাটি উপস্থাপিত করা হয়েছে, সেটিও তেমনই ব্যতিক্রমী একটি ঘটনা।
আদালতের পর্যবেক্ষণ হল, যে কোনও আবেদনকারী বা অভিযোগকারীই এক্ষেত্রে রাজ্যপালের হস্তক্ষেপ এবং তাঁর অনুমোদন চাইতে পারেন। তবে, একজন পুলিশকর্মীকেও যে এমনটাই করতে হবে, তা নয়।
আদালত আরও জানিয়েছে, বর্তমান প্রেক্ষাপটে ১৭এ ধারা অনুসারে এই অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। যা বাধ্যতামূলক। ভারতীয় ন্যায় সংহিতার ২০০ এবং ২২৩ নম্বর ধারা অনুসারে, কোনও পুলিশকর্মীর এই ধরনের অনুমোদন নেওয়ার প্রয়োজন নেই। কিন্তু, অভিযোগকারীদের ক্ষেত্রে এই ধরনের অনুমোদন চাওয়াটা তাঁদের কর্তব্য।
এই অবস্থায় সিদ্দারামাইয়ার আইনজীবী আদালতের কাছে আবেদন জানান, এই রায়ের উপর অন্তত দু'সপ্তাহের জন্য স্থগিতাদেশ দেওয়া হোক। যাতে মুখ্যমন্ত্রী তাঁর আবেদন দাখিল করার জন্য ন্যূনতম সময়টুকু পান। কিন্তু, আদালত সেই আবেদনও খারিজ করে দিয়েছে।
এই প্রসঙ্গে সংশ্লিষ্ট বিচারপতি বলেন, 'আমি আমার জারি করা নির্দেশের উপরেই স্থগিতাদেশ দিতে পারি না।'
উল্লেখ্য, গত ২৬ জুলাই এই গোটা ঘটনায় মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে মামলা রুজুর অনুমতি দিয়েছিলেন রাজ্যপাল। সেই অনুমতি দেওয়া হয়েছিল টিজে আব্রাহাম, স্নেহময়ী কৃষ্ণা এবং প্রদীপ কুমার এসপি নামে তিন সমাজকর্মীকে।