আপাতত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পড়ুয়াদের কোনওরকম ধর্মীয় পোশাক পরা থেকে বিরত থাকতে বলেছে কর্নাটক হাইকোর্ট। সেই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টে দায়ের হল মামলা। সেই আবেদনে দাবি করা হয়েছে, মুসলিম মহিলাদের হিজাব পরতে দেওয়ার অনুমতি প্রদান না করে মৌলিক অধিকার খর্ব করা হয়েছে। সেইসঙ্গে হাইকোর্টে মামলার শুনানির উপর স্থগিতাদেশের আর্জি জানিয়েছেন ওই পড়ুয়া।
বৃহস্পতিবার হিজাব মামলার শুনানিতে কর্নাটক হাইকোর্টের তিন সদস্যের বেঞ্চ জানায়, দ্রুত হিজাব বিতর্কের সমাধান করতে চায় হাইকোর্ট। সেইসময় পর্যন্ত শান্তি এবং সম্প্রীতি বজায় রাখতে হবে। প্রধান বিচারপতি বলেন, 'বিষয়টির সমাধান না হওয়া পর্যন্ত আপনাদের এরকম সব ধর্মীয় জিনিস পরার উপর জেদ ধরে থাকা উচিত নয়।' সেইসঙ্গে তিনি বলেন, 'আমরা রায় দেব। স্কুল ও কলেজ শুরু হতে দিন। কিন্তু বিষয়টির সমাধান না হওয়া পর্যন্ত ধর্মীয় পোশাক পরার ক্ষেত্রে কোনও পড়ুয়ার জেদ ধরে থাকা উচিত নয়।'
হাইকোর্টের সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ করেই সুপ্রিম কোর্টে মামলা দায়ের করেছেন এক পড়ুয়া। তিনি দাবি করেছেন, হিজাব পরা থেকে বিরত থাকতে বলে মুসলিম মহিলাদের মৌলিক অধিকার খর্ব করেছে। সেইসঙ্গে হাইকোর্টের রায় এবং তিন বেঞ্চের শুনানির উপর স্থগিতাদেশের আর্জি জানিয়েছেন ওই পড়ুয়া।
উল্লেখ্য, গত বছরের ডিসেম্বরে হিজাব পরিহিত কিছু মুসলিম মেয়েকে কর্নাটকের উদুপির একটি সরকারি কলেজে প্রবেশে বাধা দেওয়া হয়েছিল। পরবর্তীতে একাধিক কলেজে সেরকম নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। গত কয়েকদিনে সেই পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠেছে। মঙ্গলবার সকালেই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে উদুপির মহাত্মা গান্ধী মেমোরিয়াল কলেজে। গেরুয়া স্কার্ফ ও পাগড়ি পরে কলেজের বাইরে জড়ো হন একদল পড়ুয়া। ‘জয় শ্রীরাম’ স্লোগান দিতে থাকেন তাঁরা। পালটা ‘ন্যায় বিচার’-এর স্লোগান দেন হিজাব পরিহিত ছাত্রীরা। হিজাব পরা ছাত্রীদের দাবি, অধ্যক্ষ ক্লাসে ঢুকতে দেননি। একাধিক কলেজে সেরকম পরিস্থিতি তৈরি হয়। বিক্ষোভ, পালটা বিক্ষোভ হয়। তারইমধ্যে একগুচ্ছ আবেদন দায়ের হয় হাইকোর্টে। বুধবার হাইকোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চ বলেছিল, ‘যে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নগুলি নিয়ে বিতর্ক হচ্ছে, সেগুলির ব্যাপকতার পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্ট মনে করছে যে বিষয়টি নিয়ে বৃহত্তর কোনও বেঞ্চ গঠন করা হবে কিনা, সে বিষযে সিদ্ধান্ত নেবেন প্রধান বিচারপতি।’ হাইকোর্ট জানিয়েছিল, অন্তর্বর্তীকালীন আবেদনও বৃহত্তর বেঞ্চের সামনে করা উচিত। যে বেঞ্চ গঠন করতে পারেন প্রধান বিচারপতি।