সদ্য ক্যানিং থেকে জঙ্গি সন্দেহে ধরা পড়েছে জম্মু ও কাশ্মীরের তানপুরার বাসিন্দা জাভেদ মুন্সি। তথ্য বলছে, পাকিস্তান থেকে বিশেষ প্রশিক্ষণ নিয়েছে জাভেদ। ‘আইইডি এক্সপার্ট’ জাভেদের নানান কীর্তির কথা ক্রমেই প্রকাশ পাচ্ছে। ক্যানিং হাসপাতালের কাছে গুলশান নামে এক বাড়ি থেকে কলকাতা পুলিশের এসটিএফ ও জম্মু ও কাশ্মীর পুলিশ গ্রেফতার করে জাভেদকে। কাশ্মীরের শাল বিক্রেতার বেশ ধরে ঘটনার দুই দিন আগে গুলশান হাউসে আশ্রয় নেয় জাভেদ। তারপরই এই ধরপাকড়। জানা যাচ্ছে, জঙ্গি পরিচিতি ছাড়াও কাশ্মীরে এক মৌলবীকে হত্যার অভিযোগও রয়েছে জাভেদের বিরুদ্ধে।
একটি নয়। জাভেদের সঙ্গে নাম জুড়েছে ২ টি জঙ্গি সংগঠনের। পুলিশ বলছে, লস্কর ই তৈবার নির্দেশ মতো কাজ করত জাভেদ। এছাড়াও তেহরিক-উল মুজিহিদ্দিনের সঙ্গেও জড়িত জাভেদ। ইএপিএর আওতায় তাকে জম্মু ও কাশ্মীর পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে ট্রানজিট রিমান্ডে। ট্রানজিট রিমান্ড ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত রয়েছে। জানা যাচ্ছে, তেহরিক উল মুজিহাদ্দিনের সদস্য জাভেদ, আইইডি এক্সপার্ট তথা হাতিয়ারের হ্যান্ডেলার হিসাবে কাজ করত। আইইডির বিষয়ে সে সিদ্ধহস্ত বলে জানা যাচ্ছে। পুলিশ বলছে, মুন্সির বিরুদ্ধে, জঙ্গি কার্যকলাপ ছাড়াও ২০১১ সালে এক মৌলবীকে খুনের অভিযোগও রয়েছে।
কীভাবে খুন করা হয় মৌলবীকে?
জানা যাচ্ছে, ২০১১ সালে এক বাইসাইকেলে আইইডি বসিয়ে খুন করা হয় মৌলবী শওকত আহমেদ শাহকে। তিনি আহল-ই-হদিতের নেতাও ছিলেন। এই খুনের মামলায় ৮ জন অভিযুক্ত ছিল। বিচার চলা কালে ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে জামিনে মুক্তি পায় তেহরিক উল মুিজাহিদ্দিনের আবদুল গাজিল। জামিনে মুক্তি প্রাপ্ত গাজিলকেও সেই মসজিদের সামনে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়, যেখানে ওই মৌলবীকে খুন করা হয়েছিল। এদিকে, মৌলবী হত্যা মামলায় ৬ জনের বিচার চলছিল এনআইএর বিশেষ কোর্টে। ২০২০ সালের ডিসেম্বর মাসে তাদের ছেড়ে দেওয়া হয় প্রমাণের অভাবে। এদিকে, ঘটনায় মুন্সি ছিল পলাতক, ট্র্যাক করে এজেন্সি। এদিকে, প্রাথমিক জেরায় মুন্সি জানিয়েছে, হ্যান্ডেলারদের নির্দেশে তার পাকিস্তান, বাংলাদেশ, নেপালে যাতায়াত ছিল। ভুয়ো পাকিস্তানি পাসপোর্ট ব্যবহার করে সে এভাবে যাতায়াত করত। পুলিশের তথ্য বলছে, জাভেদ আগেও জঙ্গি কার্যকলাপের জেরে হাজতবাস করেছে।
এদিকে, গুলশান হাউসের যে বাড়িতে গা ঢাকা দিয়েছিল জাভেদ, সেই বাড়িতে তাব্বাসুম বিবি ও তাঁর স্বামী গোলাম মহম্মদ থাকেন। তাব্বাসুম বিবি বলছেন, জাভেদ তাঁর ননদের স্বামী। তাঁর ননদের সঙ্গে জাভেদের ২৫ বছর আগে বিয়ে হয়। জাভেদ তাঁদের বাড়ি আসতে চেয়েছিলেন, তাঁরা আসতে দিয়েছেন। তব্বাসুম বলছেন,'এর বেশি কিছু জানি না।'