মারা গেলেন বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের নাতি বাবুল কাজী। তিনি ঢাকার জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন ছিলেন। ১৯ জানুয়ারি স্থানীয় সময় বিকেল ৫টার সময় শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। মৃত্যকালে বাবুল কাজীর বয়স ছিল ৫৯ বছর। জানা গিয়েছে, গ্যাস লাইটার বিস্ফোরণের কারণে আহত হয়েছিলেন নজরুল ইসলামের নাতি বাবুল কাজী। তাঁর শরীরের বিভিন্ন জায়গা পুড়ে গিয়েছে বলে জানা গিয়েছে। এই আবহে শনিবার সকাল পৌনে ৭টায় আশঙ্কজনক অবস্থায় তাকে ঢাকার জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়েছিল তাঁকে। এরপর থেকে তাঁকে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়েছিল। (আরও পড়ুন: 'ছেলের ফাঁসি হোক…একা কাঁদব', আরজি করের নির্যাতিতাকে 'মেয়ের মতো' বললেন সঞ্জয়ের মা)
আরও পড়ুন: 'ওর নামে মেয়ে ঘটিত অভিযোগ শুনিনি… আরজি করে অন্য কেউ…', মুখ খুললেন সঞ্জেয়র বোন
বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যমের রিপোর্ট অনুযায়ী, শনিবার ভোর পাঁচটার দিকে বনানীর বাসায় বাথরুমে গ্যাস লাইটার বিস্ফোরণে আহত হয়েছেন বাবুল কাজী। তাঁর শরীরের ৭৪ শতাংশ পুড়ে গিয়েছিল। এমনকী তাঁর শ্বাসনালীও পুড়ে গিয়েছিল সেই বিস্ফোরণের জেরে। এই আবহে আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাঁকে তড়িঘড়ি নিয়ে আসা হয় ঢাকার জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে। সেখানে আইসিইউতে ভরতি করে তাঁর চিকিৎসা শুরু হয়। তাঁর জন্যে ১৬ জন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক নিয়ে একটি মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করা হয়েছিল। তবে গতকাল বিকেলে তাঁর লড়াই শেষ হয়ে যায়। চেষ্টা করেও বাবুল কাজীকে বাঁচিয়ে রাখতে পারেননি চিকিৎসকরা। (আরও পড়ুন: দায়িত্ব নিয়েই ২০০ অর্ডারে সই, সীমান্তে জরুরি অবস্থা জারি করবেন ডোনাল্ড ট্রাম্প)
পরিবারের সদস্যরা জানান, ভোরে বাথরুমে ঢুকে ধূমপানের জন্যে লাইটার জ্বালিয়েছিলেন বাবুল। সেই সময়ই লাইটার বিস্ফোরণ ঘটে। ঘর বন্ধ থাকায় হয়ত অন্য কোনও গ্যাসও জমে ছিল ঘরে। এর জেরে লাইটারের বিস্ফোরণেই এত গুরুতর ভাবে জখম হন বিদ্রোহী কবির নাতি। বাবুলের দিদি খিলখিল এরপর তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছিলেন। (আরও পড়ুন: ৪৭১ দিন পর হামাসের হাত থেকে মুক্তি পেলেন ৩, ইজরায়েল ছাড়ল ৬৯ নারী ও ২১ কিশোরকে)
উল্লেখ্য, ১৮৯৯ সালে পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার চুরুলিয়া গ্রামে জন্ম নিয়েছিলেন কাজী নজরুল ইসলাম। ২৫ বছর বয়সে তিনি কলকাতায় প্রমীলা দেবিকে বিয়ে করেছিলেন। তাঁদের চার সন্তান হয়েছিল। তাঁধের তৃতীয় সন্তান কাজী সব্যসাচীর সবচেয়ে ছোট ছেলে হলেন বাবুল। কাজী নজরুল ইসলামের চতুর্থ সন্তান কাজী অনিরুদ্ধের পরিবারের বসবাস করেন এপার বাংলায়। এদিকে কাজী অনিরুদ্ধের পরিবারের বসবাস করেন কাজী নজরুল ইসলামের ভ্রাতুষ্পুত্র কাজী রেজাউল করিম। সম্প্রতি বাংলাদেশের অবস্থা নিয়ে মুখ খুলেছিলেন তিনি। বলেছিলেন, 'আজ যদি কবি জীবিত থাকতেন, তাহলে হয়তো বাংলাদেশের তরফে তাঁকে যে 'জাতীয় কবি'র সম্মান প্রদান করা হয়েছিল, তা তিনি ফিরিয়ে দিতেন।' প্রসঙ্গত, সম্প্রতি বিদ্রোহী কবি নজরুল ইসলামকে জাতীয় কবির রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দিয়েছিল বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার।