এবারের লোকসভা নির্বাচনে কেরলে বিজেপি খাতা খুলেছে। ভরাডুবি হয়েছে সিপিএম নেতাদের। সুতরাং বিজেপির চোখে চোখ রেখে লড়াই করতে পারেনি সিপিএম। কেরলে ২০টি লোকসভা আসনের মধ্যে মাত্র একটি আসনে জিতেছে সিপিএমের নেতৃত্বাধীন এলডিএফ। পাঁচ বছর আগের লোকসভা নির্বাচনেও একইরকম ফল ছিল। এখন এই হিসেবকে ধরে এগোলে কেরলে ১৪০টি বিধানসভা কেন্দ্রের মধ্যে ২০টিতে এগিয়ে আছে এলডিএফ। প্রাথমিক পর্যালোচনায় পিনারাই বিজয়নের নেতৃত্বাধীন সরকারের কাজকর্মকেই দায়ী করছে সকলে। এখানে প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেস। তারা দাবি করেছে, রাজ্য শাসন করার ‘নৈতিক অধিকার’ হারিয়েছে মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন। তাই তাঁর ইস্তফা দেওয়া উচিত।
কেরলে লোকসভা নির্বাচনে সিপিএমের রাজ্য নেতৃত্বের হিসেব ছিল, এলডিএফ এবার ৮ থেকে ১৫টি পর্যন্ত আসন পেতে পারে। সিপিএমের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব ৬টি আসন আসতে পারে বলে আশা করেছিলেন। কিন্তু দেখা গেল, রাজ্যে ২০টির মধ্যে ১৮টি আসন পেয়েছে কংগ্রেসের নেতৃত্বাধীন ইউডিএফ। ২০১৯ সালের জেতা আলপ্পুঝা হারিয়ে এবার আলাতুর আসন জিতেছে সিপিএম। আর ত্রিশূর জিতে কেরলে খাতা খুলেছে বিজেপি। তাই সিপিএমের পলিটব্যুরো বৈঠকে তোপের মুখে পড়েছে কেরল রাজ্য নেতৃত্ব। তাহলে কি সরিয়ে দেওয়া হবে পিনারাই বিজয়নকে? উঠছে প্রশ্ন। সিপিএম অবশ্য মনে করছে, এখন সরালে ভুল বার্তা যাবে মানুষের কাছে। একুশের নির্বাচনে জিতে দ্বিতীয়বার ফিরেছিল এলডিএফ। আর তখন এই জয়ের কারিগর ছিলেন পিনারাই বিজয়ন।
আরও পড়ুন: রাজবংশী ভাষায় শপথ নিতে চান জগদীশ বর্মা বসুনিয়া, কেন এমন সিদ্ধান্ত নিলেন?
এখন যা পরিস্থিতি তাতে ভুলগুলি শুধরে নিয়ে কাজ করতে হবে। তাতে যদি অবস্থার পরিবর্তন ঘটে। কিন্তু পরিসংখ্যান বলছে, ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে এলডিএফের পাওয়া ৪৫ শতাংশ ভোট কমে ৩৪.৬৩ শতাংশ হয়েছে। পিনারাই বিজয়ন যখন দ্বিতীয়বারের জন্য ক্ষমতায় ফেরেন, তখন বামেরা জিতেছিল ৯৯টি বিধানসভা আসন। কংগ্রেসের পায় বাকি ৪১টি আসন। আর ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের ফলের নিরিখে কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ইউডিএফ এগিয়ে ১০৯টি বিধানসভা কেন্দ্রে। আর এলডিএফ গিয়ে ২০টি আসনে। বাকি ১১টি বিধানসভা কেন্দ্রে এগিয়ে বিজেপি। এই আবহে আরও মানুষের জন্য কাজ করতে হবে।
এই ফলাফল থেকে স্পষ্ট মানুষ রাজনৈতিকভাবে প্রত্যাখ্যান করেছে সিপিএমকে। সেটা কেরলে এবং বাংলায়। কেরলে একটি আসন পেলেও বাংলায় শূন্যের গেরো কাটিয়ে উঠতে পারেননি। তবে এই বিষয়ে পিনারাই বিজয়ন বলেন, ‘লোকসভা নির্বাচনে এলডিএফের এই ফল ধারণার অতীত। গভীর আত্মসমীক্ষা করতে হবে। ময়নাতদন্তের প্রয়োজন। তার পরে যা বেরিয়ে আসবে তার উপর কাজ করতে হবে। যাতে নাগরিকের কাছে কাযর্কর পরিষেবা পৌঁছয়।’