রমজান উপলক্ষে জাকাত বিতরণের জন্য সংযুক্ত আরব আমিরশাহি দূতাবাস থেকে ৫ লাখ টাকা অনুদান গ্রহণের জেরে কঠিন সমস্যায় পড়লেন কেরালার উচ্চশিক্ষা মন্ত্রী কে টি জলিল।
গত ১৪ জুলাই কেরালা সোনা পাচারকাণ্ডে অভিযুক্ত স্বপ্না সুরেশের মোবাইল ফোন কল লিস্ট সংবাদমাধ্যমে ফাঁস হলে তাতে জলিলের ফোন নম্বর পাওয়া যায়। দেখা যায়, জুন মাসে মোট ৯বার তাঁর সঙ্গে ফোনে স্বপ্নার কথা হয়েছিল। ফোনগুলি ৬৪ সেকেন্ড থেকে ১৯৫ সেকেন্ড পর্যন্ত দীর্ঘ। তা ছাড়া, মন্ত্রীর দফতরের কর্মীদের সঙ্গে একাধিকবার স্বপ্নার যোগাযোগ হয়েছে বলেও জানা যায়।
ফোন কল লিস্ট ফাঁস ঙোয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে মন্ত্রী সাংবাদিক সম্মেলন করে জানান, আমিরশাহি দূতাবাস থেকে রমজান উপলক্ষে জাকাত-এর জন্য অএমুদান গ্রহণের বিষয়ে তাঁর সঙ্গে স্বপ্নার কথা হয়েছিল। কিন্তুল এই ব্যাখ্যা তাঁকে আরও সমস্যার জালে জড়িয়ে দেয়।
আইন অনুযায়ী, বিদেশ মন্ত্রকের অনুমতি ছাড়া কোনও বিদেশি সংস্থার থেকে উপহার বা অনুদান স্বীকার করতে পারেন না কোনও রাজ্যের মন্ত্রী। এই ধরনের পদক্ষেপ কূটনৈতিক নিয়ম ও শৃঙ্খলার পরিপন্থী।
ঘটনার জেরে দুই দিন আগেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চিঠি লিখে জলিলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আবেদন জানিয়েছে বিরোধী কংগ্রেস। পাশাপাশি, মন্ত্রীর অবিলম্বে পদত্যাগ করার দাবিতে সরব হয়েছে বিজেপি।
তিরুবনন্তপুরম সোনা পাচারকাণ্ডের তদন্তে যুক্ত শীর্ষ স্থানীয় এক আধিকারিক জানিয়েছেন, জলিলকে কিছু দিনের মধ্যেই জেরা করা হবে। যদিও গত সপ্তাহে প্রধানমন্ত্রীকে লেখা চিঠিতে ঘটনার অনুসন্ধানে সন্ত্রাসবাদী যোগ খতিয়ে দেখার অনুরোধ জানিয়েছেন কেরালার মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন।
বিধানসভা নির্বাচনের ৯ মাস আগে এই ঘটনায় স্বাভাবিক ভাবেই কোণঠাসা সিপিএম। দলের নেতা কে এন বালাগোপালের আশঙ্কা, তদন্তে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য চরিতার্থ করার পথে হাঁটতে পারে কেন্দ্র।
উল্লেখ্য, ৫ জুলাই তিরুবনন্তপুরম বিমানবন্দরে আমিরশাহি দূতাবাসের এক কর্তার নামে আসা কনসাইনমেন্ট থেকে ৩০ কেজি চোরাই সোনা উদ্ধার করে শুল্ক বিভাগ। ঘটনার তদন্তভার পায় এনআইএ-সহ একাধিক কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা বিভাগ। এ পর্যন্ত ১৩ জনকে ঘটনায় জড়িত হিসেবে চিহ্নিত করেছে গোয়েন্দা সংস্থা। তাদের মধ্যে কেরালা রাজ্য তথ্য প্রযুক্তি দফতরের অধীনে কর্মরত উপদেষ্টা স্বপ্না সুরেশ-সহ ৪ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
স্বপ্নার মোবাইল ফোন কল লিস্টে নাম থাকার কারণে এবং তাঁর সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার জেরে মুখ্য সচিব এম শিবশংকর এবং মুখ্যমন্ত্রী তথ্য প্রযুক্তি সচিব অরুণ বালাচন্দ্রনকে বদলি করা হয়।