রাজ্যপাল ও বাম সরকারের মধ্যে সংঘাত আরও বাড়ল কেরলে। মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়নকে চিঠি পাঠিয়ে ‘তাঁর আনুগত্য হারানোয়’ অর্থমন্ত্রী কেএন বালাগোপালের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থার নির্দেশ দেন রাজ্যপাল আরিফ মহম্মদ। যদিও সেই আর্জি পত্রপাঠ খারিজ করে দিয়েছেন বিজয়ন। তিনি জানিয়েছেন, অর্থমন্ত্রীর উপর পূর্ণ আস্থা আছে।
বিজয়নকে যে চিঠি পাঠিয়েছেন রাজ্যপাল, তাতে অর্থমন্ত্রী বালাগোপালের মন্তব্য নিয়ে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনও আছে। চিঠিতে কেরলের রাজ্যপাল দাবি করেছেন, সম্প্রতি অর্থমন্ত্রী বালাগোপাল মন্তব্য করেন যে ‘যাঁরা আদতে উত্তরপ্রদেশের লোক, তাঁরা কেরলের মতো রাজ্যের অবস্থা বুঝবেন না।’ সেই মন্তব্যের জেরে ‘তাঁর আনুগত্য হারিয়েছেন’ বালাগোপাল।
‘হিন্দুস্তান টাইমস’-র হাতে চিঠির যে প্রতিলিপি এসেছে, তাতে রাজ্যপাল বলেছেন, ‘একটি অনুষ্ঠানে মন্ত্রী বলেছিলেন, যাঁরা উত্তরপ্রদেশের মতো জায়গা থেকে এসেছেন, তাঁরা কেরলের বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিস্থিতি বুঝতে সমস্যার মুখে পড়তে পারেন। বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা রক্ষীরা পাঁচ পড়ুয়াকে গুলি করে হত্যা করেছিলেন। আমি যখন সাংসদ ছিলাম, তখন ওখানে গিয়েছিলাম। উপাচার্যের জন্য ৫০-১০০ জন নিরাপত্তারক্ষী মোতায়েন ছিলেন। ওখানকার বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থা এরকমই।’
চিঠিতে কেরলের রাজ্যপাল আরও বলেছেন, ‘মন্ত্রী হিসেবে যে শপথ নিয়েছিলেন, তা লঙ্ঘন করেছেন এবং ভারতের অখণ্ডতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।’ সঙ্গে তিনি বলেন, ‘তাঁর মন্তব্যে শুধুমাত্র দেশের ঐক্য এবং অখণ্ডতা ধাক্কা খায়নি, সেইসঙ্গে সাংবিধানিক রীতিনীতি নিয়েও প্রশ্ন তোলা হয়েছে। যে রীতিনীতির আওতায় প্রত্যেক রাজ্যের রাজ্যপালকে রাজ্যের বাইরের হতে হয়। আমি যদি কেএন বালাগোপালের রাষ্ট্রদ্রোহী মন্তব্য নিয়ে কোনও পদক্ষেপ না করি, তাহলে আমার উপর যে দায়িত্ব আছে, তার প্রতি চূড়ান্ত অবিচার করা হবে।’
আরও পড়ুন: Kerala Cannibalism: নরবলিতেই শেষ নয় বিভীষিকা, মৃতদেহের ‘বিশেষ অংশ’ রান্না করে খেয়েছিল কেরলের দম্পতি
যদিও পালটা কেরলের বাম সরকারের মুখ্যমন্ত্রী দাবি করেন, বালাগোপাল যে মন্তব্য করেছেন, তা জাতীয়তাবাদ বা অখণ্ডতার বিরোধী বলে ব্যাখ্যা করা যাবে না। রাজ্যের ১১ জন উপাচার্য সরিয়ে দেওয়ার যে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন আচার্য (রাজ্যপাল), তা নিয়ে একটি রাজনৈতিক অনুষ্ঠানে মন্তব্য করেছিলেন। বিজয়ন বলেছেন, 'অর্থ দফতরের দায়িত্বে থাকা বালাগোপালের উপর এখনও ভরসা এবং আত্মবিশ্বাস অক্ষত আছে আমার।’