বিবিসি-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে কেরালার স্বাস্থ্যমন্ত্রী কে কে শৈলজার কথায় দারুণ চটেছে গোয়া প্রশাসন। ড্যামেজ কন্ট্রোলে নেমেও গোয়ার মুখ্যমন্ত্রীর রোষ থেকে রেহাই পেলেন না ‘শৈলজা টিচার’।
সম্প্রতি ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে শৈলজা জানান, নিম্ন মানের স্বাস্থ্য পরিকাঠামোর ফলে গোয়ার এক করোনা রোগী কেরালায় চিকিৎসা করাতে এসে মারা গিয়েছেন। পরে অবশ্য তিনি বলেন, কেরালা সংলগ্ন কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল মাহের উল্লেখ করতে গিয়ে মুখ ফস্কে তিনি গোয়া বলে ফেলেন। কিন্তু সে যুক্তি মানতে নারাজ পানাজি।
টুইটারে শৈলজাকে একহাত নিয়ে গোয়ার মুখ্যমন্ত্রী প্রমোদ সাওয়ান্ত পালটা তোপ দেগে জানিয়েছেন, ‘বিবিসি-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে গোয়ার এক করোনা রোগীর মৃত্যু সম্পর্কে কেরালার স্বাস্থ্যমন্ত্রী কে কে শৈলজাজির তথ্যগত ভুল বিবৃতিতে আমি স্তম্ভিত। আমাদের প্রাপ্ত তথ্য এবং কেরালা আইডিএসপি দলের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী উল্লিখিত রোগী গোয়ার বাসিন্দা নন এবং নিম্ন মানের স্বাস্থ্য পরিকাঠামোর কারণে এখান থেকে কেরালায় যাননি।’
তিনি লিখেছেন, ‘গোয়ায় অসাধারণ চিকিৎসা পরিষেবা সুলভ, যেখানে গোয়া মেডিক্যাল কলেজের মতো এশিয়ার অন্যতম প্রাচীন ও উন্নত মানের চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। কয়েক দশক ধরে আমরা গোয়ার বাইরের, বিশেষ করে আমাদের প্রতিবেশী রাজ্যগুলির অসংখ্য রোগীর বিভিন্ন রকম সমস্যার চিকিৎসা করছি। আপনাকে আরও জানিয়ে রাখি ম্যাডাম, গোয়া কোনও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল নয়, এক স্বয়ং সম্পূর্ণ রাজ্য।’
গোয়ার স্বাস্থ্যমন্ত্রী বিশ্বজিৎ রানেও টুইটারে কেরালার মন্ত্রীকে সতর্ক করে দেন যে, তাঁর মন্তব্যের জেরে গোয়ার ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হয়েছে। তিনি লিখেছেন, ‘এমন এক সংকটকালে যখন গোটা বিশ্ব এক হয়ে লড়ছে এবং প্রতিটি রাজ্য সর্বশক্তি দিয়ে লড়াই করছে, তখন শ্রীমতি কে কে শৈলজাজিকে অনুরোধ করছি এমন ভ্রান্ত মন্তব্য দয়া করে করবেন না যা আমাদের রাজ্যের ভাবমূর্তি নষ্ট করতে পারে। এই অতিমারির বিরুদ্ধে আমরা সকলেই লড়ছি এবং বর্তমান পরিস্থিতিতে এমন কোনও মন্তব্য বা বিবৃতি দেওয়া উচিত নয় যাতে ভুল বার্তা অথবা আতঙ্ক ছড়ায়।’
সেই সঙ্গে তিনি মনে করিয়ে দিয়েছেন যে উক্ত রোগী পুদুচেরীর অধীনস্থ কেন্দ্রশাসিত মাহে অঞ্চল থেকে কেরালায় চিকিৎসার জন্য পৌঁছেছিলেন ও পরে মারা যান।
প্রসঙ্গত, গত সপ্তাহ পর্যন্ত গোয়ায় নতুন ৭ জন করোনা আক্রান্তের খোঁজ পাওয়া গিয়েছে, যাঁরা সকলেই সুস্থ হয়ে উঠেছেন। তবে গত এক সপ্তাহে গোয়ায় মোট ৩৯টি নতুন করোনা রোগীর সন্ধান মিলেছে। তাঁরা সকলেই অন্য রাজ্য থেকে গোয়ায় প্রবেশ করেন।