কেরালা হাইকোর্টে ধাক্কা খেলেন লাক্ষাদ্বীপের প্রশাসক প্রফুল খোড়া প্যাটেল। দ্বীপপুঞ্জের মিড ডে মিলে মাংস বন্ধ এবং ডেয়ারি ফার্ম বন্ধের যে বিতর্কিত খসড়া আইন আনা হয়েছিল, তাতে অন্তর্বর্তীকালীন স্থগিতাদেশ দিল কেরালা হাইকোর্ট। সেইসঙ্গে দু'সপ্তাহের মধ্যে কেন্দ্রীয় সরকার এবংলাক্ষাদ্বীপ প্রশাসনকে বিস্তারিত হলফনামা পেশের নির্দেশ দিয়েছে প্রধান বিচারপতি এস মণিকুমারের নেতৃত্বাধীন দুই সদস্যের ডিভিশন বেঞ্চ।
আজমল আহমেদ নামে এক আইনজীবীর দায়ের করা জনস্বার্থ মামলায় প্রধান বিচারপতি নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ জানায়, বিস্তারিত হলফনামা দাখিল না করা পর্যন্ত দুটি বিষয়ে কোনও পদক্ষেপ করা যাবে না। সেই রায়কে স্বাগত জানিয়েছেন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা। টুইটারে কেরালার প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী থমাস আইজ্যাক বলেন, ‘একনায়ক প্রশাসক এই প্রথম বড়সড় ধাক্কা খেলেন। তাঁর অন্যান্য বিতর্কিত সিদ্ধান্তগুলির বিরুদ্ধেও আদালতে যাওয়া হবে।’
নিজের আবেদনে আজমল দাবি করেন, দ্বীপপুঞ্জবাসীর দীর্ঘদিনের খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তনের জন্য ‘বিদ্বেষপরায়ণ অভিপ্রায়’ নিয়ে সেইসব নির্দেশ দিয়েছেন প্রশাসক। সেইসব নয়া নিয়ম আদতে ২০২১ সালের পশু সংরক্ষণ (রেগুলেশন) আইনের প্রথম ধাপ। যে আইনের মাধ্যমে মুসলিম-অধ্যুষিত দ্বীপপুঞ্জে গো-হত্যা এবং গোমাংস ভক্ষণের উপর নিষেধাজ্ঞা চাপানো হবে। তিনি অভিযোগ করেন, গুজরাতের দুগ্ধজাত দ্রব্যের জনপ্রিয়তা বৃদ্ধির জন্য স্থানীয় ডেয়ার ফার্ম বন্ধের নিয়ম করেছেন গুজরাতের প্রাক্তন মন্ত্রী তথা লাক্ষাদ্বীপের বর্তমান প্রশাসক। সেইসঙ্গে আজমল দাবি করেন, বিভিন্ন পক্ষ এবং স্থানীয় মানুষদের সঙ্গে কোনওরকম আলোচনা না করেই নয়া খসড়া আইন নিয়ে আসা হয়েছে। যা সংবিধানের ১৪ নম্বর ধারা, গোপনীয়তার অধিকার এবং জীবনযাত্রার অধিকার লঙ্ঘন করেছে। শুধু তাই নয়, শুধুমাত্র নিরামিষ খাবার দেওয়ার জন্য মিড মে মিল প্রদানের দায়িত্ব বেঙ্গালুরুর একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার হাতে তুলে দেওয়ার পরিকল্পনাও চলছে বলে অভিযোগ করেন আজমল।
সেই সওয়ালের প্রেক্ষিতে হাইকোর্টের তরফে লাক্ষাদ্বীপ প্রশাসনের আইনজীবীকে প্রশ্ন করা হয়, কেন দ্বীপপুঞ্জের মানুষের দীর্ঘদিনের খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন করার চেষ্টা করা হচ্ছে। প্রত্যুত্তের লাক্ষাদ্বীপ প্রশাসনের তরফে জানানো হয়, দ্বীপপুঞ্জে উপযুক্ত হিমঘর ব্যবস্থা নেই। মুনাফা না হওয়ায় ডেয়ারি ফার্মগুলি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু সেই যুক্তিতে কোনও গ্রহণযোগ্যতা খুঁজে পায়নি হাইকোর্ট। তারপরই সেই দুই নিয়মে অন্তর্বর্তীকালীন স্থগিতাদেশ দিয়েছে প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ।