ভারত ধর্মনিরপেক্ষ দেশ। দেশে বিয়ের রেজিস্ট্রির জন্য ধর্ম বাধা হতে পারে না। এমনই পর্যবেক্ষণ করল কেরল হাই কোর্ট। উল্লেখ্য, কেরল রেজিস্ট্রেশন অফ ম্যারেজ (কমন) রুলস-এর আওতায় নিজেদের বিয়ের রেজিস্ট্রেশন করাতে পারছিলেন না একজন হিন্দু পুরুষ এবং মুসলিম মহিলা। ভিনধর্মের হলেও তারা হিন্দু মতে বিবাহ করেছিল। এরপর রেজিস্ট্রার তাঁদের বিয়ের রেজিস্ট্রি করার অনুমতি দেননি। এই আবহে কেরল হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল সেই দম্পতি।
বিচারপতি পাভা কুনহিকৃষ্ণান এই মামলার শুনানির সময় বলেন, ‘কেরলেই আয়ঙ্কলি এবং শ্রী নারায়ণ গুরুর মতো অনেক সংস্কারকের জন্ম হয়েছে। আমাদের মনে রাখা উচিত যে আমাদের দেশ একটি ধর্মনিরপেক্ষ দেশ। সকল নাগরিককে তাদের নিজস্ব ধর্ম গ্রহণ করার এবং তাদের নিজস্ব আচার-অনুষ্ঠান, রীতিনীতি এবং অনুষ্ঠান অনুসরণ করার স্বাধীনতা দেয়। অতএব বিবাহের দুই পক্ষের পাত্র বা পাত্রীর কারও একজনের পিতা বা মাতা ভিন্ন ধর্মের হলেই রেজিস্ট্রেশনের আবেদন প্রত্যাখ্যান করা যাবে না।’
এদিকে কেরলের মহান সংস্কারকদের প্রসঙ্গে উচ্চ আদালতের বিচারপতি বলেন, ‘এটা দুর্ভাগ্যজনক যে আজকাল কিছু জাতিগোষ্ঠীর এই কিংবদন্তিদের নাম অপহরণ করার চেষ্টা করছে, যেন তারা তাদের বর্ণেরই নেতা। এই বিষয়টির অনুমতি দেওয়া উচিত নয়। তাঁরা আমাদের দেশের সংস্কারক। তারা ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে এদেশের সকল নাগরিকের নেতা। যদি এমনটা ঘটে, আমরা সেই কিংবদন্তিদের অপমান করব।’
এদিকে এই আবেদনের জবাবে, কেরল সরকার আদালতকে বলে যে বিবাহ নিবন্ধিত করার জন্য কোনও বিধিবদ্ধ বিধানের অধীনে নিযুক্ত ম্যারেজ রেজিস্ট্রারের সামনে ধর্মীয় আচার অনুযায়ী অনুষ্ঠান করা উচিত। সরকার আরও জানায়, কোনও পার্সোনাল ল’-এর অধীনে বিয়ে না হওয়ায় কেরল রেজিস্ট্রেশন অফ ম্যারেজ (কমন) রুলস-এর আওতায় রেজিস্ট্রেশন করতে অস্বীকার করেন রেজিস্ট্রার। এই ক্ষেত্রে স্মেশাল ম্যারেজ অ্যাক্ট, ১৯৫৬-র অধীনে রেজিস্ট্রেশন করা যায়।