কেরলের ওয়ানাড় জেলায় ধারাবাহিক ভূমিধসে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ১৪৩ হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। এই প্রাকৃতিক দুর্যোগের জেরে আরও শতাধিক মানুষ আহত হয়েছেন। আটকা পড়েছেন আরও শতাধিক। ভূমিধসে বাড়িঘর ও রাস্তাঘাটের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। গাছপালা উপড়ে গেছে এবং জলাশয়গুলো ফুলে ফেঁপে উঠেছে। এই আবহে এখনও নিখোঁজ ব্যক্তিদের উদ্ধার ও সন্ধানের চেষ্টা চলছে সেখানে। কেরলের রাজ্য দুর্যোগ মোকাবিলা কর্তৃপক্ষ (কেএসডিএমএ) জানিয়েছে, ফায়ার অ্যান্ড রেসকিউ, সিভিল ডিফেন্স, এনডিআরএফ এবং স্থানীয় কুইক রেসপন্স দলের সদস্যরা উদ্ধার অভিযানে অংশ নিচ্ছেন। কান্নুরের ডিএসসি সেন্টারের প্রায় ২০০ ভারতীয় সেনা কর্মী এবং কোঝিকোড় থেকে ১২২ টিএ ব্যাটালিয়নও ঘটনাস্থলে রয়েছেন। এর পাশাপাশি, বিমানবাহিনীর তিমনটি হেলিকপ্টার, একটি এমআই-১৭ বিমান উদ্ধার অভিযানের সমন্বয় করছে। (আরও পড়ুন: বেতন ও ভাতা বৃদ্ধি করা হল বাংলার এই কর্মীদের, বড় ঘোষণা করল রাজ্য সরকার)
এখনও পর্যন্ত ১২০ জনের বেশি ব্যক্তিকে জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। এই সব ব্যক্তিদের স্থানীয় হাসপাতালে ভরতি করা হয়েছে। সেখানে তাদের চিকিৎসা চলছে। আহতদের অনেকেই বেশ গুরুতর ভাবে আহত। এদিকে কেরলের স্বাস্থ্যমন্ত্রী বীনা জর্জ জানিয়েছেন, মৃতদের মধ্যে থেকে ইতিমধ্যেই ১১৬ জনের দেহের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছে। এদিকে দুর্যোগ ও অবিরাম বর্ষণের পরিপ্রেক্ষিতে ৩১ জুলাই, বুধবার কেরলের বহু জায়গায় সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে। কাসারগোড়, কান্নুর, কোঝিকোড়, ওয়ানাড়, মালাপ্পুরম, পালাক্কাড, ত্রিশূর, ইদুক্কি, এর্নাকুলাম, আলাপ্পুঝা এবং পাথানামথিট্টা- এই ১১টি জেলায় ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে।
ভারতীয় আবহাওয়া বিভাগ ওয়ানাড় এবং পার্শ্ববর্তী জেলাগুলিতে 'কমলা' সতর্কতা জারি করেছে। পূর্বাভাস অনুযায়ী, ৩১ জুলাই এবং ১ অগস্ট ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে এই সব স্থানে। আবহাওয়া দফতর আরও জানিয়েছে, ২ অগস্টও ওয়ানাড়ে ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। এদিকে আইএমডি জানিয়েছে, ৩০ ও ৩১ জুলাই কেরলের বহু জেলায় মাঝেমধ্যেই ৩০-৪০ থেকে ৫০ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা বেগে ঝোড়ো হাওয়া বইতে পারে।
রিপোর্ট অনুযায়ী, সোমবার গভীর থেকেই ওয়ানাড়ের মেপ্পাদির কাছে একাধিক পাহাড়ি এলাকায় ধস নামে। রাত ১ টা নাগাদ মুন্ডাক্কাই টাউনের কাছে প্রথম ধস নেমেছিল। এর ঘণ্টাতিনেক পরে দ্বিতীয় ধস নামে একটি স্কুলের কাছে। তার জেরে আশপাশের বাড়ি এবং দোকানের মধ্যে জল এবং কাদা ঢুকে যায়। ওই এলাকায় একটি ব্রিজও ভেঙে পড়ে। তার জেরে কমপক্ষে ৪০০টি পরিবার আটকে পড়ে। একাধিক গাড়ি ভেসে যায়।